বাগেরহাটে ৩ খুন ও ৯ বাড়ী ভাংচুর করে সেই পাগলা হাতি এখন সিলেটে
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বাগেরহাটের মোল্লাহাটে উন্মত্ত (পাগল) হয়ে আক্রমণ করে তিনজনকে হত্যাকারী সার্কাসের সেই হাতিটিকে সিলেটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাতে হাতিটির মালিক ঘটনাস্থলে এসে হাতিটিকে ট্রাকে করে সিলেটে নিয়ে গেছে। শনিবার ভোরে হাতিটি আক্রমণ চালিয়ে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলায় দুই নারীসহ তিনজনকে হত্যা করে। এর পর থেকে এই পুরুষ হাতিটি গত তিন দিন ধরে মোল্লাহাট উপজেলার আটজুড়ি ইউনিয়নের বাসাবাড়ি গ্রামের একটি বাঁশ বাগানে অবস্থান করছিল।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ন ম খায়রুল আনাম জানান, সোমবার রাতে হাতিটির মালিক সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল এলাকার আব্দুল মতিন মোল্লাহাটে এসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আর্থিক সহায়তা দেন। পরে তিনি তার হাতিটিকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নেন।
ক্ষতিপূরণ হিসাবে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৬০ হাজার টাকা ও হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি বিনষ্ট করা ৯টি পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
নিহতদের পক্ষে মনোয়ারা বেগমের মেয়ে লিমা আক্তার, কুসুম বিশ্বাসের ছেলে জয়দেব বিশ্বাস ও মিজানুর রহমান ফকিরের ছেলে রবিউল ইসলাম ক্ষতিপূরণের টাকা গ্রাহণ করেন। পরে রাতেই ট্রাক যোগে হতিটিকে নিয়ে সিলেটের উদ্যেশে রওনা দেন বলে জানায় আব্দুল মতিন।
হাতিটির মালিক আব্দুল মতিন দাবি করেন, তার এই হাতিটি আগে কখনই এমন আচারণ করেনি। হাতিটি কি কারণে এমন আক্রমণ চালায় তা মালিক হাতির মাহুত মো. ফারুকের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন।
মাহুতের বরাদ দিয়ে তিনি জানান, মাহুত মো. ফারুক ২৩ মে হাতিটিকে বাগেরহাটের ফকিরহাটের একটি মেলা থেকে গোপালগঞ্জে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে মধুমতি নদীর মোল্লাহাট ব্রিজ পার হওয়ার সময় হাতিটি ব্রিজের ওপর দিয়ে যেতে অনিহা দেখায়। এক পর্যায়ে জোর করেও মাহুত ওই ব্রিজের ওপর হাতিটিকে তুলতে পারছিল না।
এ সময় মাহুত ফারুক হাতিকে লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকবার আঘাত করে। এই আঘাতে হাতিটির একটি কান ফেটে যায় বলে হাতির মালিক আব্দুল মতিন জানান। এরপর শনিবার ভোররাতে হাতিটি শিকল ছিঁড়ে গোপালগঞ্জ থেকে মধুমতি নদী সাঁতরে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলায় চলে আসে। ভোরে হাতিটি উপজেলার গারফা গ্রামে আসলে কিছু দুষ্টু শিশু তাকে বিরক্ত করে। এতে হাতিটি ক্ষিপ্ত ও বিরক্ত হয়ে এই হামলা চালায় বলে হাতির মালিক আব্দুল মতিন দাবি করেন।