মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপি সম্পর্কে অশোভন উক্তির নিন্দা ও প্রতিবাদ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের প্যানেল স্পিকার ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী সম্পর্কে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কর্তৃক বিষোদগার ও তার সম্পর্কে অশোভনীয় মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দক্ষিণ সুরমা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কামাল উদ্দিন রাসেল। তিনি অবিলম্বে ঐসব শিক্ষার্থীকে তাদের মন্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানান। অন্যথায় তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী শক্তি বলে চিহ্নিত হবে।
কামাল উদ্দিন রাসেল তার বিবৃতিতে বলেন, জাতীয় সংসদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটি এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ ও কর্মীবান্ধব সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২১ বাস্তবায়নের নিরলস কর্মী হিসেবে সুপরিচিত। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি একাত্তরে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য সংসদে বিল উত্থাপন করে অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি করেন। তার উত্থাপিত বিল জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। সেই বিল পাস হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয় এবং এখনও তা চলছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায়ও কার্যকর হয়েছে।
মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর উত্থাপিত বিল পাস হওয়ায় জামায়াতের নায়েবে আমির, একাত্তরের কুখ্যাত ঘাতক দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর বিচার হয়েছে। ওই মামলার অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ। কারণ একাত্তরে জাফর ইকবালের পিতা পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর রহমান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগীদের হাতে শহীদ হয়েছিলেন। কিন্তু বার বার নোটিশ দেওয়ার পরও তিনি কিংবা তার পরিবারের কেউ রহস্যজনক কারণে মানবতাবিরোধী বিচারের ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে যাননি। এর ফলে সাঈদীর বিরুদ্ধে ফয়জুর রহমানকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি। অথচ ড. জাফর ইকবাল নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক বলে সব সময় দাবি করেন। এই স্ববিরোধিতায় তার দ্বৈত নীতির চরিত্রই প্রকাশ পেয়েছে।
বিবৃতিতে কামাল উদ্দিন রাসেল বলেন, বছরখানেক পূর্বে তিনি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পদ্ধতির চুক্তি করা হয়। ড. জাফর ইকবাল ছিলেন এই চুক্তির মূল উদ্যোক্তা। ঐ পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে সিলেট অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া কঠিন হয়ে পড়তো। সিলেটের দলমতনির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণের আন্দোলনের মুখে ঐ ভর্তি পদ্ধতি বাতিল করতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়। ড. জাফর ইকবালের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়মতান্ত্রিক কার্যকলাপ ও অন্যায় আবদারের কারণে ইতিপূর্বে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন উপাচার্য সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। ড. জাফর ইকবালের অন্যায় আবদার ও অনিয়মকে জায়েজ করতে না পারার কারণেই সর্বশেষ উপাচার্য আমিনুল ইসলাম ভূইয়া ছুটি নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
প্রকৃতপক্ষে সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়কে জাফর ইকবাল তার স্বেচ্ছাচারিতার লীলাক্ষেত্রে পরিণত করেছেন। জাফর ইকবালের এহেন সিলেট বিদ্বেষী কার্যকলাপ ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়কে কৌশলে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়ার হীন প্রচেষ্টার কথা সিলেটবাসী ভালোভাবে অবগত আছেন। তাই যৌক্তিক কারণেই মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী তার অনৈতিক কার্যকলাপের সমালোচনা করেছেন। আর এতে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় অর্বাচীন শিক্ষার্থী ও জাফর ইকবালের ভক্তদের আঁতে ঘাঁ লেগেছে। তারা মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে শুধু মিছিল করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার বিরুদ্ধে নানা অশোভন উক্তি করেছে। তারা মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অশোভন উক্তি করে নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বলেই প্রমাণ করেছে। অবিলম্বে ওইসব অশোভন উক্তি প্রত্যাহার ক্রমে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা না করা হলে সিলেটবাসী তাদেরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করাসহ নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। বিজ্ঞপ্তি