চুনারুঘাটে এক ভন্ড ফকিরের কান্ড ॥ কোনমতে প্রানে বাচল শিশু
চুনারুঘাট প্রতিনিধিঃ চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের কালামন্ডল গ্রামে অবস্থিত কনা ফকিরের আস্তানা। সেখানে বসে-বসে মাথায় লাল রঙ্গেঁর শালু পাগড়ী বেঁধে, এলাকার নিরিহ সাধারণ মানুষকে কবলে ফেলে দেয় চিকিৎসার নামে ভন্ডামির অপচিকিৎসা। এতে মরনাপন্ন হয়েছিল ৯ বৎসরের নাঈম আহমদ নামের এক শিশু। জানা যায়, উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের এক’ই গ্রামের মরহুম আব্দুল করিমের সন্তান, নাইম আহমদের প্রচন্ড মাথাব্যাথা ও ঘনঘন বমির ভাব দেখা দিলে তার গর্ভধারিনী সহজ সরল মা আনোয়ারা বেগম তাকে নিয়ে যান গ্রামের সাধক ভন্ড কবিরাজ কনা ফকিরের কাছে। কবিরাজ কিছুক্ষন ধ্যানের ভাব ধরে বলেন, নাঈমের দাদী মারা যাওয়ার পূর্বে তার সাথে ৫টি জ্বিন ছিল। তারা নাঈমকে ভর করে রেখেছে। ওদেরকে তাড়াতে হলে অনেক সময়ের প্রয়োজন হবে। আর নিয়মিত আমার আসনের খরচ-পাতি ও চালান খরচ চালাতে পারলে’ই ওদেরকে ধীরে-ধীরে বিতাড়িত করা সম্ভব। তাহলেই সুস্থ্য হবে নাঈম। কিন্তু দিন যত যায়, নাঈমের রোগের তীব্রতা বাড়তেই থাকে। নিরুপায় হয়ে নাঈমের বড় ভাই বিল্লাল আহমেদ এদিক-সেদিক ছুটাছুটি করে নাঈমকে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে বিশিষ্ট দানবীর মামুন চৌধুরী, আহম্মদাবাদ মানব কল্যাণ সংঘ ও এলাকার মানুষের সহযোগীতায় খরচ বহন করে নাঈমকে অপারশন করানো হয়। বর্তমানে নাঈম সুস্থ্যতার দিকে আছে বলে জানা যায়। ভন্ড কনা ফকির সম্পর্কে এলাকার সচেতন নাগরিকদের মন্তব্য, “এমন ভূয়া কবিরাজ কে যেন আর সামনের দিকে এগিয়ে যেতে উৎসাহ উদ্ধিপনা দেয়া না হয়। সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তার কাছে জোর দাবী, তার এই ভন্ডামি তদবিরের বিরুদ্ধে প্রশাসনের প্রতি আইনুনাগ ব্যবস্থা গ্রহন করা দরকার। তা-নাহলে এলাকার সহজ সরল মানুষদের বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা” থাকে। উল্লেখ্য যে, কিছুদিন পূর্বে সাহানা নামের এক মহিলার প্রসব কালিন রক্ত বন্ধ না-হলে সেও কনা ফকিরের স্বরনাপন্ন হয়েছিল। তাকে কনা ফকির কালীর দৃষ্টি বলে ধারনা করে তেলপড়া, ও পানি পড়া ইত্যাদি দিয়ে সাহানার মূল চিকিৎসা বিলম্ব করায়। যার খেসারতে সাহানাকে সুস্থ্য হতে লক্ষাধিক টাকা খরচ করতে হয়েছিল। এখন এলাকার মানুষের একটাই দাবি, পীরের আদেশ পালনের নাম করে, ঘরে আসন বাতি জ্বালিয়ে গাঁজার আসর বসানো হয় কবিরাজের আস্থানায়। এই ভূয়া কবিরাজের সকল প্রকার ভন্ডামি কার্যকলাপ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকার আম জনতা।