রানা প্লাজা ধসের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি স্মরণ: “রানা প্লাজা ধসে জীবিতদের পুনর্বাসন: হতাশা থেকে আশা”

Photo-3২৪ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে রানা প্লাজা ধসের পর, ভবনে কর্মরত নিহত পোশাক শ্রমিকদের পরিবার ও বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য তহবিল বরাদ্দ করে জার্মান ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন (জিডিসি)। পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারি অংশীদারদের সাথে জিডিসির পক্ষে যৌথভাবে কাজ করে Deutsche Gesellschaft für Internationale Zusammenarbeit (GIZ) GmbH।

রানা প্লাজা ধসের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে ২৩ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সেন্টার ফর দ্যা রিহ্যাবিলিটেশন ফর দ্যা প্যারালাইজড (সিআরপি) সাথে যৌথভাবে স্বরণসভার আয়োজন করে জিআইজেড। ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত সিআরপি চত্বরে আয়োজিত এ সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে জার্মান রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সিলেন্সি ড. টমাস প্রিন্স বাংলাদেশের উন্নয়নে জার্মানির দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যাক্ত করেন। তিনি বলেন, “রানা প্লাজা ধসে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে থেকে ৫০০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে সহায়তা দিয়েছে জার্মান সরকার। তবে, মর্মান্তিক এই ঘটনার মোকাবিলা করতে গিয়ে আমরা নতুন একটি শিক্ষা নিয়েছি: প্রতিবন্ধীদের উপার্জনমূলক কাজে অন্তর্ভুক্তি কোনো সাময়িক বা ঘটনা-তাড়িত বিষয় নয়; এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।”
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)-এর সহ-সভাপতি মি. রিয়াজ বিন মাহমুদ বলেন, “প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা কোনোভাবই অক্ষম নন, বরং তারা বিশেষভাবে সক্ষম। একটু সহযোগিতা পেলেই তারা অর্থনীতি ও সমাজের জন্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারেন।” তিনি আরও বলেন, “২০২১ সালের মধ্যে বিজিএমইএর ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মূল চাবিকাঠি হতে পারে দক্ষ জনশক্তি।”
এধরণের বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে ভবিষ্যত পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন সিআরপি প্রতিষ্ঠাতা ড. ভ্যালেরি টেইলর।
রানা প্লাজা ঘটনায় বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের দেয়া সহায়তার ওপর একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সিআরপি। জিআইজেডের সাথে যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে রানা প্লাজা ধসে ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনে কাজ করছে এই সংস্থাটি। ভবিষ্যতে এই ধরণের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতিও দেয় সিআরপি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জিআইজেডের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর ড. ইয়োকেন ওয়েইকার্ট, ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্যা রেড ক্রসের (আইসিআরসি) হেড অফ ডেলিগেশন মিস ক্রিসটিন সিপোলা এবং রানা প্লাজা ধসে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা।
রানা প্লাজা ধসে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাথে প্যানেল আলোচনা শেষে একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ড. ভ্যালেরি টেইলর। রানা প্লাজা ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উদ্যোক্তারা এতে অংশ নেন। এরপর সিআরপির প্রস্থেটিকস অ্যান্ড অর্থোটিকস ডিপার্টমেন্ট এবং অন্যান্য কারিগরি ও সমন্বিত প্রশিক্ষণ উদ্যোগের প্রতিনিধিরা তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারদের জন্য ক্ষতিপূরণ তহবিল গঠনে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং রানা প্লাজা ট্রাস্ট ফান্ডের কোঅর্ডিনেশন সেলকে সহায়তা প্রদান করে জিআইজেড। পেশাগত প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা এই ক্ষতিপূরণের অর্থ ব্যবহার করে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। বিজ্ঞপ্তি