সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক সংস্কারে ৪৪২ কোটি টাকা অনুমোদন
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক সংস্কারে ৪৪২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার ৩ বছরে প্রকল্প একনেকে অনুমোদন করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মতে ‘ক্যান্সার আক্রান্ত’ সড়কটিকে সংস্কার করে মহাসড়কে উন্নীত করার প্রকল্প প্রস্তাব জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাস হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। যার ফলে ভোগান্তি শেষ হচ্ছে সিলেট-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষের।
সভায় সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর বাইপাস ইন্টারসেকশন-লালবাগ-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ককে জাতীয় মহাসড়ককে উন্নীতকরণ শীর্ষক একটি প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। এ প্রকল্পের আওতায় সিলেট জেলায় সিলেট-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়কের ২৭ কিলোমিটার এবং এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ৫ কিলোমিটার বাইপাস সড়কসহ প্রায় ৩২ কিলোমিটার সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করা হবে।
একনেক’র সভায় পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল এ সড়ককে কেন মহাসড়কে পরিণত করা হবে তার ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এ সড়কটি সিলেট শহরের সাথে ভোলাগঞ্জ স্থল বন্দরকে সংযুক্ত করেছে। আর এই ভোলাগঞ্জ থেকেই দেশের ৭০ ভাগ পাথর আহরিত হয়।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘এ স্থল বন্দর দিয়েই ভারত থেকে লাইমস্টোন আমদানি করা হয়। বর্তমানে সড়কটিতে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার মালবাহী ট্রাক যাতায়াত করে। যার পরিমাণ ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এ সড়কটিকে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করা একান্ত দরকার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এই প্রকল্প কাজে ব্যয় হবে ৪৪২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। জিওবি অর্থায়নে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক’র এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ৩টি প্রকল্পে ৬৩৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি খাত থেকে (জিওবি) ৬২২ কোটি ৫১ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। বৈঠকে মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৪ মে সিলেট সফরে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কটি পরিদর্শন করেন। সেসময় তিনি এ সড়কের বেহাল দশা দেখে এটিকে ‘ক্যান্সার আক্রান্ত’ সড়ক বলে আখ্যায়িত করেন। মন্ত্রীর এমন আখ্যার পরও দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কটি সংস্কার সাধন করা হয়নি। এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের মধ্য দিয়েই যাচ্ছেন। সড়কটির সংস্কার সাধনে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, দুই মাসের কর্মসূচী, ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন, অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। সম্প্রতি এ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবিতে অবরোধ কর্মসূচী পালন করা হয়। দীর্ঘ দিন মানুষের দুর্ভোগ শেষে কর্তৃপক্ষের টনক নড়েছে।