এক মাসের ওসি নুরুল ॥ অভিযোগের অন্ত নেই ॥ সকল মামলা বিতর্কিত

Inspector-Nurul-Alom3॥ স্টাফ রিপোর্টার ॥
সিলেট এয়ারপোর্ট থানার বর্তমান ইন্সপেক্টর তদন্ত নুরুল আলম। এক মাসের জন্য ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও (ওসি) ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও কটুক্তি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এসএমপি সদর দফতরে লিখিত অভিযোগ করেন আওয়ামী প্রজন্মলীগের এক নেতা।
সুরমা টাইমস’র তদন্তে বেরিয়ে আসে আরও অনেক চমকপ্রদ তথ্য। জানা যায় এক মাসের জন্য এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়ীত্বে থাকাকালীন সময়ে তিনি প্রানপণ চেষ্টা করেন আগের গোছানোর কাজে। ওই সময় যতগুলে মামলা হয় সবগুলোই বিতর্কিত। চুড়ান্ত রিপোর্ট প্রদান করা হয় বেশীরভাগ মামলার। তার আমলে রুজুকৃত প্রায় সকল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেন তারই প্রিয়ভাজন এসআই শাহনাজকে।
কালাগুল মাসুক হত্যা মামলার আসামী সাঈদ আলী সহ আরও অজ্ঞাতনামা কিছু দুর্বিত্ত সহযোগে নুরজাহান, স্বামী কুটি মিয়া, সাং কালাগুল বস্তি থানা এয়ারপোর্ট এর বসতবাড়ী পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ সংক্রান্তে উল্লেখিত নুরজাহান এয়ারপোর্ট থানায় এজহার দাখিল করে। প্রাথমিক সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ওসি নুরুল এজহারটি এসআই হুমায়ূনকে দায়িত্ব দেন। এসআই হুমায়ূন ঘটনার সত্যতা পাওয়া গিয়াছে মর্মে ওসিকে জানালেও নান অজুহাতে ওসি কালক্ষেপন কওে মামলা রুজু করেন নাই। এক পর্যায়ে বাদীপক্ষের লোকজন নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় বানিজ্যমেলা চলাকালীন সময়ে ওসি তদন্তকে ছয় হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করেন। তারপরও মামলাটি রুজু করা না হলে পরবর্তীতে বাদীপক্ষের লোকজন কমিশনার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেবে বলে জানালে তিনি ওই টাকাটি ফেরৎ প্রদান করেন বলে জানান বাদীপক্ষের ওই ব্যাক্তি। বর্তমানে ওই মামলা আদালতে দাখিল করা হয়েছে।
এয়ারপোর্ট থানার মামলা নং ১১ তাং ২১/১০/২০১৪ ধারা ১৯৯০ সনের মাদক আইনের ২২ (গ) এর জব্দ তালিকার স্বাক্ষী সোলেমান মিয়া, পিতা মৃত মাইজম উল্লাহ, সাং মহালদি, থানা এয়ারপোর্ট, জেলা সিলেট। র‌্যাব কতৃক মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় উক্ত মামলার আসামীর মাতা মোছাঃ আছিয়া বেগম (৪৫), স্বামী আব্দুর রহিম, সাং মহালদি, থানা এয়ারপোর্ট, সিলেট বাদী হয়ে সোলেমান মিয়ার বিরুদ্ধে একটি এজহার দাখিল করেন। এএসআই হেদায়ত ঘটনাটি তদন্ত করে মিথ্যা বলে ওসি তদন্তকে অবগত করেন। পরবর্তীতে ওসি তদন্ত ৩০০০০ (তিরিশি হাজার) টাকার বিনিময়ে পুণরায় এজহার নিয়ে মামলাটি রুজু করেন।এ সংক্রান্তে ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিম মেম্বার অপেন হাউজ ডেতে অভিযোগ করিলে সহকারি পুলিশ কমিশনার শাহিন মোল্লা ঘটনাস্থলে সরেজমিন তদন্ত করত স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলাটি মিথ্যা প্রমানিত হয়। পরবর্তীতে মামলাটির চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এয়ারপোর্ট থানার মামলা নং ১৫ তাং ১৬/০২/২০১৪ ধারা ১৯৯০ সনের মাদক আইনের ১৯ (১) টেবিল এক’র (ক)। বিজিবি বাদী হয়ে হাতেনাতে ধৃত আসামী ইসহাক আলী, নুরুল ইসলাম, লিয়াকত আলী, এবং পলাতক আসামী রকিব মিয়া, পিতা মৃত আহমদ উল্লাহ, সাং ৪৫ সবুজসেনা, ঘাসিটুলা, থানা কোতোয়ালী, সিলেটকে আসামী করে এয়ারপোর্ট থানায় এজহার দাখিল করে।ওসি নুরুল আলম মামলাটি তদন্ত করার জন্য তারই প্রিয়ভাজন এসআই শাহনাজকে দায়িত্ব প্রদান করেন। এসআই শাহনাজ হযরত শাহজালাল মাজার সংলগ্ন ব্যাবসায়ী রকিব আলীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন। অতপর এই নিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ ও গ্রেফতার বানিজ্যের অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে এয়ারপোর্ট থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার ওই মামলায় ধৃত সকল আসামীদেরকে রিমান্ডে আনার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। জানা যায় রিমান্ডে আনার পর গ্রেফতারকৃত অপর দুই আসামী রাকিব আলীকে সনাক্ত করতে ব্যার্থ হয়। তাৎক্ষনিক এসআই শাহনাজকে ওই মামলা থেকে সরিয়ে দিয়ে এয়ারপোর্ট থানার এসআই মেরাজকে ওই মামলার তদন্তভার প্রদান করা হয়। (অনুসন্ধান চলছে)