আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৌরাত্ম্য অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়েছে

mizanসুরমা টাইমস ডেস্কঃ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘সহিংসতা বন্ধে রাষ্ট্রকে যতটা কঠোর হওয়া দরকার, আমরা ততটাই কঠোর হতে বলেছি। কিন্তু দেখা গেছে, এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৌরাত্ম্য অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে গেছে। ফলে এদের ওপর মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থা থেকে আমাদের পরিত্রাণ পেতে হবে, নইলে আরো ভয়াবহ পরিবেশের সৃষ্টি হবে।’
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন মিজানুর রহমান। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ এই সেমিনারের আয়োজন করে।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘আপনারা (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী) যদি কাউকে আটক করে থাকেন তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সততার সঙ্গে আদালতে হাজির করবেন। ২-৩ দিন আটক রাখার পর ২৪ ঘণ্টার তারিখ দিয়ে আদালতে তুলে জনগণের সংঙ্গে তামাশা করবেন না।’
মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘রাজনীতি করলে শাস্তির ঊর্ধ্বে উঠে যায়। রাজনীতিবিদ হলে আটকাদেশ ৪০ দিন কেন, ৮০ দিনেও তাদের কাছে পৌঁছায় না।’
যদি রাজনীতি করেন তাহলে রাষ্ট্রের আইন আপনার জন্য নয়- এমন মানসিকতা পরিহার করার কথাও বলেন তিনি।
সম্প্রতি পুলিশের পক্ষ থেকে এক চিঠিতে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি এবং বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এখন থেকে দেশের নাটক-সিনেমায় অনুমতি ছাড়া পুলিশের চরিত্রে অভিনয় ও পোশাক ব্যবহার করা যাবে না। এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘নাটক-সিনেমায় পুলিশের পোশাক পরে অভিনয় করা যাবে না এমন সিদ্ধান্ত মুক্তচিন্তার পথে বাধা। রাষ্ট্রযন্ত্রের মাথা কতটা খারাপ হলে এমন উদ্ভট সিদ্ধান্ত নিতে পারে?’
রাজনীতির নামে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের কাছে অনুরোধ, রাষ্ট্র তুমি সংযত ও জনবান্ধব হও।’
আলোচনা সভায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমরা অনেক দিন ধরে অগণতান্ত্রিকভাবে বসবাস করার কারণে গণতন্ত্রের চেহারাটাই ভুলে গেছি। সবাই একটা ভয়ের সংস্কৃতি আঁকড়ে ধরেছে। এটা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
অধ্যাপক আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন- পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেছুর রহমান, অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান প্রমুখ।