সন্ত্রাসীদের গুলিতে আমেরিকায় বিশ্বনাথের যুবক নিহত : শুক্রবার দেশে আসছে লাশ

photo1নিউইয়র্ক থেকে এনা ও বিশ্বনাথ প্রতিনিধিঃ যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেইটের ডিট্রয়েট সিটিতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বিশ্বনাথের যুবক বাবুল মিয়া (৪১) নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের জাগিরালা গ্রামের মৃত খোরশিদ আলীর পুত্র। বাবুল দীর্ঘ প্রায় ২৫বছর পুর্বে ওপি ওয়ানের লটারির মাধ্যমে ১৯৯১সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। তিনি পেশায় টেক্সিক্যাব গাড়ির ড্রাইভার ছিলেন। গত বুধবার ২৬শে মার্চ বাঙ্গালী জাতির মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের দিন (যুক্তরাষ্ট্র সময়) রাত সাড়ে ১০ টায় গাড়ির ড্রাইভিং সিটে সন্ত্রাসীরা গুলি করলে তিনি মারা যান। বাবুল মিয়া ডেট্রয়েটে ট্যাক্সি চালাতেন এবং ট্যাক্সিার যাত্রীর গুলিতেই তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ বুধবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বাবুল মিয়া একযাত্রীকে ১৫৭০০ আরডমর স্ট্রিট ব্লকে নামিয়ে দিলে যাত্রী ভাড়া দিতে অসম্মতি জানান এবং এক পর্যায়ে গুলি করে। ডিউটিরত পুলিশ অফিসার গুলির শব্দের ছুটে যান এবং দেখেন যে, এক যুবক হেঁটে চলে যাচ্ছে। পুলিশকে দেখে সে দৌঁড় দিয়েছিলো। কিন্তু রক্ষা পায়নি। পুলিশ তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্রটিও উদ্ধার করে। বাবুল মিয়া ড্রাইভার সিটে মৃত অবস্থায় পড়ে ছিলো। খবরটি স্থানীয় মিডিয়ায় গুরুত্বের সাথে প্রচার করে। জানা গেছে, সিলেটের বিশ্বনাথের সন্তান বাবুল মিয়া দুই যুগেরও অধিক সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলো। তিনি বিয়েও করেননি। সে দীর্ঘদিন ধরেই ট্যাক্সি চালাচ্ছিলো। কঠোর পরিশ্রমী বাবুল মিয়ার মৃত্যুতে মিশিগান বাংলাদেশী কম্যুনিটিতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সকলেই ঘাতকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। পুলিশ জানায়, ২১ বছর বয়সী ঘাতকের ঐ দিন জন্মদিন ছিলো, সে মাতাল ছিলো। এ দিকে বাবুল মিয়ার রুহের মাগফেরাত কামনা করে স্থানীয় মসজিদে দোয়া করা হয়েছে।

Babul-Miah-Detroit 2এদিকে তার মৃত্যুর খবর মোবাইল ফোনে বাবুলের বাড়িতে পৌছলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা-ভাই বোনসহ আত্মীয়-স্বজনরা। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের আল-ফালাহ মসজিদে নিহত বাবুল’র প্রথম জানাযার নামাজ অনুষ্টিত হয়েছে।

এদিকে, বাবুলের লাশ দেশে আনার জন্য যুক্তরাস্ট্রে অবস্থানরত তার আত্মীয়-স্বজনরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ধারণা সেখানকার আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী শুক্রবার তার লাশ দেশে নিয়ে আসা হবে। নিহত বাবুলের মামাতো ভাই একই গ্রামের শাহিন আহমদ শিশু জানান-বাবুলের মা এবং স্বজনদের ইচ্ছায় শুক্রবার তার লাশ দেশে নিয়ে আসার ব্যবস্থা হচ্ছে। আমরা চাই পরিবারের একমাত্র অবলম্বন বাবুলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। তিনি বলেন-আশা করি এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষ সার্বিক সহযোতিা করবেন।