সিলেটে অপকর্মে বেপরোয়া অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের খুঁটির জোর কোথায়?
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ জোবের আহমদ। অবসর প্রাপ্ত এক সেনা সদস্য। অপরাধ রাজ্যে তিনি এখন রড়ই বেপরোয়া। একের পর এক চলছে তার অপকর্ম। কিন্তু জোবেরের অপকর্মের লাগাম টেনে ধরার যেন কেউই নেই। দীর্ঘদিন থেকে নগরী ও নগরীর আশপাশ এলাকায় জোবের ও তার বাহিনীর দৌরাত্মে অতিষ্ট সাধারণ মানুষ।
জোবের আহমদ মৌলভীবাজার জেলার রড়লেখা উপজেলার গল্লাসাংগন গ্রামের মৃত শফিক মিয়ার ছেলে। সেনা বাহিনীতে সৈনিক থেকে শুরু করে সার্জেন্ট পদেই চাকরীর ইসতফা।এরপর থেকে সিলেট শহরেই দাপটের সাথে তার চলা ফেরা।
সূত্রমতে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসর নিয়ে চলে যান গ্রামের বাড়ি বড়লেখায়। সেখানে নানা অপকর্মের কারণে বিতাড়িত হয়ে চলে আসেন সিলেট শহরে। আশ্রয় নেন দুসম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাসায়। জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন ধরণের অপরাধ কর্মকান্ডে। সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে কিছু দিন পরই আস্তানা গাড়েন সিলেট শহরের খাদিমপাড়া এলাকার বিএনপি নেতা, ভুমিদস্যু আনোয়ার খন্দকার ওরফে মামা খন্দকারের দেহরক্ষি হিসেবে। এরপর তাকে আর পিছু ফিরে থাকাতে হয়নি। ২০০৮ সালে অবসর নেয়ার পর থেকে জোবের নিজেকে কখনও সেনা কর্মকর্তা, কখনও র্যাব সদস্য আবার কখনও পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ড। সন্ত্রাসী, ভূমিদখল, চাঁদাবাজির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। নগরীর পার্শ্ববর্তী খাদিমনগরে দখলকৃত ভূমিতে করেছেন বসত বাড়ি। আছে ব্যাংকবর্তী টাকা ও গাড়ি। এসব করেছেন চাঁদাবাজি, ভূমিদখল আর থানার দালালী করে। কখনও কখনও টাকার জন্য জোবের পুলিশের সোর্সের কাজও করেন। তার রয়েছে নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনীও। নগরীর চিহিৃত সব অপরাধী তার শিষ্য বলে তিনি নিজেই দাবি করেন। ক্ষমতাশীন দলের শীর্ষ নেতা, র্যাব, পুলিশও তার বন্ধু বলে নিজেই প্রচার করেন।
যেভাবে অপকর্মের শুরুঃ
২০০৭ সালে সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট পদ থেকে বাধ্যতামূলক অবসর নেয়ার পর সিলেট নগরীতে আশ্রয় নেন জোবের। শুরু করেন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, চাঁদাবাজি, ভূমিদখল ও থানার দালালী। ২০০৯ সালে খাদিমপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির তৎকালিন সভাপতি খন্দকার কামরুজ্জামান আনোয়ার ওরফে মামা খন্দকারের দেহরক্ষি ও লাঠিয়াল বাহিনীতে যোগদান করেন। যোগদানের পরই শাহপরান বাজার সংলগ্ন একটি ভূমি দখল করে ওই ভূমির সামনের অংশে সৈনিক নামে একটি রেস্টুরেন্ট ও পিছনের অংশে বাড়ি নির্মান করে বসবাস শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে এলাকায় শুরু করেন একেরপর এক ভূমি দখল, চাঁদাবাজি আর লুটপাট।
ধর্ষণ ও গুমের অভিযোগে অভিযুক্ত:
জোবের যে শুধু চাঁদাবাজি আর ভূমিদখলেই ব্যস্ত এমন নয়। তার বিরুদ্ধে রয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায় ধর্ষণ ও গুমের মামলা। সিলেটের বিভিন্ন থানায়ও তার বিরুদ্ধে ছিল বেশ কিছু অপরাধের ও মানুষকে হয়রানি করার মামলা। এই মামলাগুলো অবশ্য বিভিন্ন মাধ্যমে শেষ করেছেন।
এছাড়া, সম্প্রতি রায়নগর থেকে স্কুল ছাত্র আবু সাঈদকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনারমূল ঘাতক র্যাব-পুলিশের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা মিয়াও জোবের বাহিনীর সদস্য। শাহপরান মাজার সংলগ্ন এলাকা ও নগরীর রায়নগরের একটি সেলুনের সামনে জোবের প্রায় সময় গেদার সাথে বৈঠক করতেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।