বিয়ের অনুষ্ঠানের হত্যা মামলায় ওসমানীনগরের একাধিক নির্দোষ ব্যাক্তি আসামী
উজ্জ্বল দাশ,ওসমানীনগর:: মৌলভীবাজারের সরকারবাজারের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দায়ের করা হত্যা মামলায় ওসমানীনগরের একাধিক নির্দোষ ব্যাক্তিকে আসামী করার জনমনে তীব্র অসন্তোস ও চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী পৃথক পৃথক বৈঠক করে ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের সনাক্ত করে আসামী করার আহবান জানান। এবং এ ব্যাপারে এলাকাবাসী প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগীতার অঙ্গিকার করেন।
জানাযায়, গত ২২ ফেব্রুয়ারী রবিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের সরকারবাজারস্থ আল-মাহমুদ কমিউনিটি সেন্টারে ওসমানীনগর উপজেলার কমরু মিয়ার সঙ্গে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খাদেজার বিয়ের অনুষ্ঠানে ওসমানীনগরের বরযাত্রীর গুরুতর আঘাতে নিহত হন ঐ এলাকার সাধুহাটি গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের পুত্র হুমায়ুন আহমেদ(১৯। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মোঃ মামুনুর রশিদ বাদী হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারী মৌলভীবাজার মডেল থানায় ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার ইউপির ১১জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং ০৮/২৩/২/১৫)। উক্ত মামলায় উল্লেখিত ৯ নং আসামী প্রথম পাশা গ্রামের ছালিক মিয়ার পুত্র মুকিত মিয়া(২৮) ও ১১ নং আসামী ব্রাক্ষনগ্রামের লাল মাহমুদের পুত্র রুয়েল আহমদ উক্ত বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত না এবং এরা সম্পুর্ন নির্দোষ এমন দাবী এলাকাবাসীর। এ দু’জন উক্ত অনুষ্টানে অনুপস্থিত থেকে আসামী হওয়ায় এলাকাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এ নিয়ে একাধিক বৈঠক শেষে এলাকাবাসীর উদ্যোগে গত ২ মার্চ সকালে গোয়ালাবাজার ইউপি আ’লীগের সভাপতি হাজি লাল মাহমুদ’র বাড়িতে এক বিশাল সভা অনুষ্টিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন গোয়ালাবাজার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান। প্রায় ২ শতাধিক লোকের সমাগমের সভার শুরুতে উক্ত বিবাহ অনুষ্টানে নিহতের রুহের মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়। পাশাপাশি সুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামীদের সনাক্ত করে বিচারের আওতায় এনে নিরপরাধ ব্যাক্তিদের মুক্ত করার দাবী জানান এলাকাবাসী। এতে নিহতের পরিবার ও প্রশাসনকে সহযোগীতার লক্ষ্যে এলাকার ১৫জন গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানাগেছে।
সরজমিনে এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে জানাযায়, নিহতের ভাইয়ের দায়েরকৃত মামলার ৯ নং মুকিত মিয়া ও ১১ নং আসামী রুয়েল আহমদ উক্ত বিয়ের দাওয়াতই পাননি। এবং এ দু’জন উপযাজক হয়ে কারো বিয়েতে যাওয়ার মতো নয়। এরা প্রতিহিংসার শিকার। আসলে একটি কুচক্রিমহল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে প্রকৃত আসামীদেরকে আড়াল করে নিহতের পরিবার ও প্রশাসনকে ভিন্নদিকে নিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের ব্যাক্তিগত আক্রোশ মেটাতে নির্দোসীদের নাম আসামীর তালিকায় দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ট ও নিরপেক্ষ তদন্ত করলে এর সত্যতা প্রকাশ পাবে। নতুবা প্রকৃত আসামীরা ধরাছোয়ার বাহিরে থাকবে এবং নিহতের পরিবার সুষ্ট বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন।
এদেকে নিহতের ভাই কতৃক দায়েরকৃত মামলায় ওসমানীনগর উপজেলা প্রজন্মলীগের সাধারণ সম্পাদক রুয়েল আহমদকে আসামী করায় এ উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনেও বইছে নিন্দার ঝড়। এ উপজেলার আওয়ামী পরিবারের দাবী, রুয়েলসহ নিরপরাধ যারা আসামী হয়েছে তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এ জনপদের একাধিক গ্রুপিং রাজনীতির কারনেই এদের বিয়ের অনুষ্টানে না গিয়েও সেখানে ঘটে যাওয়া কলংকিত হত্যা মামলার আসামী হতে হয়েছে। তারা তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্য মো: আব্দুছ ছালেক বলেন, এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন কাউকে আসামী করা হয় তাহলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যাবস্থ নেবো। যদি সত্যিকার নির্দোশ কেউ আসামী হয় তাকে আমরা ছাড় দেবো।