শুধু মান্নার সাথে নয়, সরকারের মন্ত্রী এবং এমপিদের সাথেও আমার কথা হয়
লাশের বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে ভোগাস
নিউইয়র্কে এনা ও ঠিকানাকে সাদেক হোসেন খোকা
নিউইয়র্ক থেকে এনা : নাগরিক ঐক্য কমিটির আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সাথে বিএনপির সহ সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার টেলিফোন সংলাপ নিয়ে সারা দেশে চলছে তোলপাড়। সর্বত্রই এই নিয়ে আলোচনা। এ বিষয়ে গ্রেফতারকৃত নাগরিক ঐক্য কমিটির আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না কথা বলেছেন গ্রেফকারের পূর্বে। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। আবার কোন কোন অংশ বিকৃত উপস্থাপন করার অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে বর্তমানে নিউইয়র্কে ক্যান্সারে চিকিৎসাধীন সাদেক হোসেন খোকা মাহমুদুর রহমান মান্নার সাথে টেলিফোন যোগাযোগ সম্পর্কে ঠিকানা এবং এনাকে বলেন, একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে মাহমুদুর রহমান মান্নার সাথে আমার সব সময় যোগাযোগ আছে। আমেরিকায় আসার পর উনার সাথে আমার ২০ থেকে ২৫ বার আলাপ আলোচনা হয়েছে। উনি আমার স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নিয়েছেন। মাহমুদুর রহমান মান্না ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি শুরু করেছেন, তিনি একজন পুরানো রাজনীতিবিদ তার সাথে আমার রাজনীতি নিয়ে একাডেমিক আলোচনা হয়েছে। আমার সাথে তো আওয়ামী লীগের অনেক নেতার সাথে আলাপ হয়, ২/১ জন মন্ত্রীর সাথেও আলাপ হয়েছে, ১৪ দলেরও অনেক নেতার সাথে হরহামেশা আলাপ হচ্ছে, সুশীল সমাজের নেতাদের সাথেও আলাপ হচ্ছে। তাতে কি হয়েছে? বর্তমান ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের সাথে কথা হয়েছে- এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হ্যাঁ আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীর সাথে। কোন কোন মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতার সাথে আলাপ হচ্ছে- এই প্রশ্নের উত্তরে সাদেক হোসেন খোকা বলেন, আমি উনাদের নাম বলতে চাই না। নাম বললে উনারা এখন বিপদে পড়বেন। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এবং নেতাদের নাম বলে আপনি তাদের বিপদে ফেলতে চাচ্ছেন না কিন্তু মাহমুদুর রহমান মান্নাতো বিপদে পড়ে গেলেন- এই বিষয়টি উল্লেখ করার সাথে সাথেই খোকার উত্তর- মান্না সাহেবের বিপদের কী আছে? আমরা তো এমন কিছু আলোচনা করিনি যাতে তিনি বিপদে পড়তে পারেন। আমরা যেহেতু রাজনীতি করি সেহেতু আমাদের মধ্যে তো আলাপ আলোচনা হতেই পারে। তার থেকে হয়ত আমার কিছু শেখার থাকতে পারে, আমার কিছু জ্বালাই করে নেয়ার ব্যাপার থাকতে পারে বা দেশের এই নাজুক পরিস্থিতিতে উনার কী ভাবছেন, আমরা কী ভাবছি- তা নিয়ে সমন্বয় করার বিষয় থাকতে পারে। আপনারাদের মধ্যে কী ৪২ মিনিট কথা হয়েছে- এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, কত মিনিট কথা বলেছি, তাতো বলতে পারবো না, কারণ আমিতো ঘড়ি ধরে কথা বলিনি। সময় দেখার তো প্রয়োজন নেই। আপনাদের মধ্যে কী আন্দোলনের কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা যেহেতু সংলাপের পক্ষের লোক, আমরাও তো আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতির নিষ্পত্তি করতে চাই। তারাও সব সময় সংলাপের পক্ষে আছেন, সেহেতু এ ক্ষেত্রেতো আমাদের চিন্তার একটা সমন্বয় আছেই। যে অডিও রেকর্ডিং টি চালানো হচ্ছে তার সব কিছু সত্যি নাকি- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এটা শুনিনি। তবে শুনবো। আপনারা কী লাশ ফেলানো নিয়ে কোন কথা বলেছে কী- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লাশ ফেলানো নিয়ে কোন কথা হয়নি। লাশের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভোগাস। সম্পূর্ণ একাডেমিক আলোচনা হয়েছে, কী করলে কী হবে, অতীতে কী হয়েছে? আগামীতে কী হতে পারে, ছাত্র আন্দোলনের গতি প্রকৃতি, ক্রয়ফায়ার, আমাদের কৌশলের কোন পরিবর্তন আনা দরকার কী না, আমাদের আন্দোলন কত দিন চলতে পারে, সরকারের উপরে চাপটা আরো কীভাবে বাড়ানো যায়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের সমর্থনের পরিধি আরো কীভাবে বাড়ানো যায়Ñ এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি আসলে জানতে চেয়েছি অন্যান্য দলগুলোর অবস্থান কী। এতে দোষের কী আছে? বর্তমানে আন্দোলনের কী অবস্থা- এই প্রশ্নের জবাবে সাদেক হোসেন খোকা বলেন, আমরাতো একটি কর্মসূচির মধ্যে আছি। আমাদের কর্মসূচি সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, এই সরকার একটা দখলদার সরকারের মত আচরণ করছে। যেটা এয়াহিয়া খানের ২৫ মার্চের সরকারের কার্যকলাপ আর শেখ হাসিনা সরকারের কার্যকলাপের প্রার্থক্য দেখি না। এই ক্ষেত্রে আন্দোলনের কৌশল নিয়েও আমাদের নতুন করে চিন্তা- ভাবনা করতে হচ্ছে জনগণকে সাথে নিয়ে কীভাবে আন্দোলনটা আমরা এগিয়ে নিতে পারি। মাহমুদুর রহমান মান্না সভা বা মিছিল করার জন্য আপনার কাছে লোক চেয়েছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সাদেক হোসেন বলেন, তাদের একটি মিছিল বা সমাবেশ করার কথা, তাদের সাথে এখন আমাদের কর্মসূচির ভিন্নতা তো নেই, আমি রাজনীতির সাথে জড়িত, অন্যদিকে দীর্ঘদিন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছিলাম, দলমত নির্বিশেষে সাবার সাথে আমার একটা এক্সচেজ আছে, তার কর্মসূচি কীভাবে সফল করা যায় সেটাও তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন। আপনাদের এই কথপোকথন মিডিয়ায় আসলো কীভাবে- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটাও সরকারের একটি কূটকৌশল। এটা সরকারই করিয়েছে। অন্যদিকে একজনের ব্যক্তিগত কথোপকথন পাবলিকলি দেয়া আইন বহির্ভূত বলে আমি মনে করি। আবার যে সব মিডিয়ায় এসেছে সেই সব মিডিয়ার সঙ্গে সরকারের যোগসাজস রয়েছে এবং সরকারও সেই সব মিডিয়াকে পৃষ্ঠপোষকতা করে।