অবরোধের ৩৩ তম দিনে সিলেটে ৯ গাড়িতে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ

আম্বরখানায় ৭ গাড়ি ভাঙচুর ॥ বাগবাড়িতে ট্রাকে পেট্রলবোমা ॥ কুলাউড়ায় বাসে আগুন

ফাইল ফটো
ফাইল ফটো

সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ৩৩ দিন গতকাল শনিবার অতিবাহিত হয়েছে। অবরোধে জন জীবনে কোন প্রভাব পড়েনি। যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। নগরী ও নগরীর বাহিরে অধিকাংশ দোকানপাটও গতকাল ছিল খোলা। তবে নগরীর সোবহানীঘাটের কাচাবাজার এলাকায় ২০ থেকে ২৫ জন শিবিরকর্মী নাশকতার চেষ্টাকালে পুলিশ ২ জনকে ধাওয়া করে ২ শিবিরকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। এয়ারপোর্ট থানার আম্বরখানা এলাকায় ৭টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে শিবির। বিকেল ৪টার দিকে তারা এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। একই সময়ে সোবহানীঘাট কাচা বাজারের সামনে ২০ থেকে ২৫ জন শিবির নেতাকর্মী মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ শিবির কর্মীদের ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে ৭ জনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ৩ টি মোটর সাইকেলও আটক করে পুলিশ। সোবহানীঘাট পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ (এসআই) কামাল শিবিরকর্মীদের গ্রেপ্তার ও দু‘টি মোটরসাইকেল আটকের সত্যতা স্বীক্ষার করেছেন। আর মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় অবরোধের আগুনে একটি বাস পুড়েছে। ভোরে উপজেলার ব্রাক্ষণবাজার ভাটেরা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেলা পৌনে ২টার দিকে ২০ থেকে ২৫ জন শিবিরকর্মী সোবহানীঘাট কাচা বাজারের সামনে অবস্থান নিয়ে মিছিল ও ককটেল ফোটানোর চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রবিউল ও রাসেল নামের ২ জন শিবির নেতাকে গ্রেপ্তার করে। পরে ফুলতলী মাদ্রাসার পেছনের সম্রাট টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে আরো ৫ শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের ৩টি মোটরসাইকেলও আটক করে পুলিশ। কোতোয়ালী থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, সোবহানীঘাটে নাশকতার চেষ্টাকালে ২ জন শিবির নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিকেল ৪টার দিকে আম্বরখানা সিরাজী হোটেলের সামনে থেকে মহানগর শিবিরের সভাপতি আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে মিছিল বের করে শিবির নেতাকর্মীরা। মিছিলটি শুরুর পরই সহিংস হয়ে ওঠে শিবির নেতাকর্মীরা। তারা আম্বরখানা-ইলেকট্রিক সাপ্লাই রোড দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ সময় শিবির নেতাকর্মীরা ট্রাক, প্রাইভেট কার, ইজিবাইকসহ অন্তত ৭টি যানবাহন ভাঙচুর করে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। শিবিরকর্মীরা এসময় রাস্তার উভয় পাশের কয়েকটি দোকান লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই শিবির নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়।
এয়ারপোর্ট থানার ওসি গৌছুল হোসেন শিবির নেতারা গাড়ি ভাঙচুর করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কয়টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় তা সঠিক বলতে পারেননি ওসি। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের ও আসামী গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অপরদিকে আমাদের মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় অবরোধের আগুনে একটি বাস পুড়েছে। রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা ওই বাসে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। গতকাল শনিবার ভোরে উপজেলার ব্রাক্ষণবাজার ভাটেরা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার ব্রাক্ষণবাজার এলাকার ভাটেরা রোডে একটি বাস দাঁড় করানো ছিল। হঠাৎ ৭/৮জন দুর্বৃত্ত বাসটিতে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।
কুলাউড়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক আকলিমা আক্তার জানান, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে, ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধ চলাকালে নগরীতে মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদল। বেলা ২টায় মিছিলটি নয়াসড়ক পয়েন্ট থেকে শুরু করে মিরবক্সটুলা হয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে এসে শেষ হয়।
নয়াসড়ক পয়েন্টে অনুষ্ঠিত মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক আজমল হোসেন রায়হান।
মহানগর ছাত্রদল নেতা লিটন কুমার দাস নান্টু’র পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাহাত চৌধুরী মুন্না, রুজেল আহমদ চৌধুরী, আব্দুল হান্নান, রায়হাদ বক্স রাক্কু, খালেদুর রশিদ ঝলক, সৈয়দ লোকমানুজ্জামান লোকমান, আলতাফ হোসেন টিটু, তছির আলী, দেওয়ান নিজাম খান, জাবেদ আহমদ জীবন, দিলোওয়ার হোসেন চৌধুরী, শামিম আহমদ লোকমান প্রমূখ।
এদিকে, নগরীর নবাব রোড এলাকায় অবরোধ সমর্থনে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের মিছিল-সমাবেশ করেছে। বিকেল ৪টার দিকে নেতাকর্মীরা এ মিছিল করেন।
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক স্বপন, মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র নেতা আফছর খান, ছাত্রদল নেতা সৈয়দ সারওয়ার রেজা, মির্জা সম্রাট হোসেন, পারভেজ খান জুয়েল জামিল আহমেদ তালুকদার, আশরাফুল হক, শামীম আলী, রায়হান আহমদ প্রমুখ।