বন্দুকের নল দিয়ে শেখ হাসিনা পতন ঠেকাতে পারবেন না

কোকোর মৃত্যুতে যুবদলের সভায় নেতৃবৃন্দ

ANA PIC-2
দোয়া মাহফিলে মঞ্চে নেতৃবৃন্দ। ছবি- এনা।

নিউইয়র্ক থেকে এনা: বন্দুকের নল দিয়ে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পতন ঠেকাতে পারবেন না। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং তারুণ্যের প্রতীক তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র ও দেশ রক্ষার যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সেই আন্দোলনে স্বৈরাচারি শেখ হাসিনার পতন হবেই। অন্যদিকে মিথ্যা মামলা, হামলা এবং নির্যাতন করে বিএনপিকেও ধ্বংস করা যাবে না। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ফরেস এ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য সচিব মুশফিক ফজল আনসারী এ কথাগুলো বলেন।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুতে গত ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র যুব দল এক দোয়া মাহফিল এবং স্মরণ সভার আয়োজন করেন। যুব দলের সহ সভাপতি আতিকুল হক আহাদের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ANA PIC-1সরোয়ার খান বাবু ও সাইফুর খান হারুনের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ফরেন এফেয়ার্স কমিটির সদস্য সচিব মুশফিক ফজল আনসারী। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু, মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসীম উদ্দিন ভুইয়া, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, শাহদাত হোসেন, কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম ফারুক শাহীন, যুব দলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ, স্টেট বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি এম এ খালেক আকন্দ, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম ডলার, আবু সুফিয়ান, জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাবেক সভাপতি রাফেল তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ডালিম, এম এ বাসিত।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুশফিক ফজল আনসারী বলেন, ৪৫ বছরের আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর কোন কারণ ছিলো না। এমন কি স্বাধীনতার ঘোষক

আরাফাত রহমান কোকোর স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখছেন মুশফিক ফজল আনসারী। ছবি- এনা।
আরাফাত রহমান কোকোর স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখছেন মুশফিক ফজল আনসারী। ছবি- এনা।

ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমনন্ত্রী বেগম জিয়ার সন্তান আরাফাত রহমান কোকোর তো মালয়েশিয়ায় থাকার বা মৃত্যুবরণ করারও কথা ছিলো না। তার তো ফেরারি আসামী হবার কথা নয়। শুধু মাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তিনি ৭ বছর মায়ের ¯েœহ থেকে, বড় ভাইরের আদর থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কোকোর মৃত্যুর পর সমবেদনা জানানোর নামে মহা নাটক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই নাটক বাংলাদেশের মানুষ বুঝে গিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে স্টুপিড ভাবার কোন কারণ নেই। শেখ হাসিনার নাটক তখনই ধরা পড়ে যখনই শোকে আচ্ছন্ন বেগম খালেদা জিয়ার বাসার বিদ্যৎ লাইন কেটে দেয়, বাসার সামনে বালুর ট্রাক রেখে দেয়, তালা লাগিয়ে দেয় কার্যালয়ের গেটে এবং নিষিদ্ধ পিপার স্প্রে করা হয়। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা স্বৈরাচার আইয়ুব- ইয়াহিয়াকেও হার মানিয়েছেন। শেখ হাসিনা মিথ্যাচারের রাজনীতি করেন। তার কাছে কোন সভ্যতা- সৌজন্যতা নেই। তিনি আরো বলেন, দেশে এখন যে অবস্থা বিরাজ করছে তা চিরস্থায়ী নয়, কোন স্বৈরশাসকই চিরস্থায়ী হয় না। বন্দুকের নল দিয়ে পৃথিবীর কোন স্বৈরশাসক ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, শেখ হাসিনাও পারবেন না। স্বৈরাচাররা বন্দুকের নলে মানুষ হত্যা করে হয়ত কিছু দিন নিরাপদ থাকতে পারে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের জনগণের রোষাণলে পড়তে হয়, ইতিহাস তাই বলে। শেখ হাসিনাকেও জনগণের রোষাণলে পড়তে হবে এবং বিদায় নিতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে জিয়া পরিবার হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। তাদের টার্গেট জিয়া পরিবার। যে কারণেই বেগম খালেদা জিয়া, তারুণ্যের প্রতীক, আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান এবং আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা। মামলাগুলো মিথ্যা এবং রাজনৈতিক হবার কারণে গত ৮ বছরেও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলাও প্রমাণ করতে পারেনি। একজন বিচারক তারেক রহমানের পক্ষে রায় দিয়ে তিনি এখন দেশ ছাড়া। এই হলো আমাদের বিচার ব্যবস্থা। তিনি বলেন, কোকোর শোককে আমাদের শক্তিতে পরিণত করতে হবে এবং চরম স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে হবে। বেগম খালেদা জিয়া আপোষহীন, তিনি বার বার প্রমাণ করেছে, এবারো প্রমাণ করবেন। তিনি আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশের অবস্থা হচ্ছে আওয়ামী লীগ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল এবং সমাবেশ করে অন্যদিকে বিরোধী দলের ১০ জন নেতাকেই রাস্তায় নামতে দিচ্ছে না। তাদের নির্বিচারে গুলি করা হচ্ছে। এই সরকার হচ্ছে অবৈধ সরকার। প্রধানমন্ত্রী, স্পীকারসহ ১৫৪ জন সদস্য বিনা ভোটে এখন সংসদে। বিনা ভোটে নির্বাচিত অবৈধ মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এক সময় শেখ মুজিবের চামড়া দিয়ে জুতা বানাতে চেয়েছেন, আজকে তারাই বড় নেতা। তাদের কথায় বড় বড় আওয়ামী লীগ নেতা লজ্জা পান। ভোট হলে তারা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার নির্বাচিত হবার যোগ্যতা নেই। তিনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশের, দলের এই পরিস্থিতিতে আপনাদের সমস্ত বেদাবেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে এবং জ্যাকসন হাইটসের আন্দোলনকে ক্যাপিট্যাল হিলে নিয়ে যেতে হবে।
জিল্লুর রহমান জিল্লু বলেন, আরাফাত রহমান কোকো ছিলেন একজন লাজুক ব্যক্তি। তিনি ক্রীড়াপ্রেমি ছিলেন। তিনি কখনো রাজনীতি করেননি। তার পরেও মঈম- ফখরুদ্দিন এবং হাসিনা সরকারের রোষাণলে পড়েছিলেন। তাদের নির্যাতনের কারণেই কোকার মৃত্যু হয়েছে। কোকোর দোষ ছিলো তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান ছিলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জিয়া পরিবার এবং বিএনপিকে কেমন ভালবাসে তার প্রমাণ মিলে কোকোর নামাজে জানাজায়। আপনারা জানেন শেখ মুজিবের জানাজায় কত জন মানুষ হয়েছিলো। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বন্দুকের নল দিয়ে বিএনপি এবং জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে যদি গ্রেফতার করা হয় এ্যাম্বাসী থেকে শেখ হাসিনার ছবি নামিয়ে ফেলবো।
আবু সাঈদ আহমেদ কোকোর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত জিয়া পরিবারের প্রতি সমাবেদনা জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য্য রাখেন স্টেট যুব দলের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আজাদ ভুইয়া, সোয়েব চৌধুরী, আমানত হোসেন আমান, বোরহান আহমেদ, শাহাদত হোসেন রাজু, সিটি যুব দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ হায়দার আলী, ব্রুকলীন যুব দলের আহবায়ক ইকবাল হায়দার, মহিলা নেত্রী হাসিনা বিনতে সুমী, চট্টগ্রাম এলামনাই এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমলাক হোসেন ফয়সাল, মিজানুর রহমান চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার এম সায়েম রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরাফাত রহমান কোকোর স্মরণে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন শহীদুল ইসলাম আকন। আনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা ক্বারী সুলতান মাহমুদ। এ ছাড়াও কোকোর শোক বইতে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষর করেন।