ওসমানীতে চিকিৎসকদের অবহেলায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ

অভিভাবককে সিকিউরিটি গার্ডের চপেটাঘাত

ekhlas miahসুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সদের অবহেলায় ৮ মাস বয়সী শিশু তাহমিনার মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন শিশুটির বাবা এখলাছ মিয়া। একইসাথে নিরাপত্তাকর্মীর হাতে ওই শিশুর স্বজনদের লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখলাছ মিয়া জৈন্তাপুর উপজেলার লালারখাল গ্রামের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে তাহমিনার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
এখলাছ মিয়া জানান- বুধবার বিকেল ৩টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত মেয়ে তাহমিনাকে নিয়ে তিনি ওসমানী হাসপাতালের ৫ম তলার ২১ নং ওয়ার্ডে ভর্তি হন। সন্ধ্যার পর তাহমিনাকে স্যালাইন দেয়া হয়। রাত ১০টার দিকে স্যালাইন শেষ হওয়ার কর্তব্যরত নার্সকে বিষয়টি বলার পরও নার্স আসেনি। এর আধা ঘন্টা পর তাহমিনার খিঁচুনি উঠে এবং বমি করা শুরু করে। তখন এখলাছ মিয়া ডিউটি রুমে গিয়ে কোনো ডাক্তার বা নার্সের দেখা পাননি।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ডাক্তার এসে তাহমিনাকে দেখে বলেন, ‘সুস্থ হয়ে যাবে। চিন্তার কিছু নাই।’ এরপর সকাল ১১টার দিকে তাহমিনা মারা যায়।
এখলাছ মিয়া অভিযোগ করেন, ভর্তির পরে আমার মেয়ের অবস্থা খারাপ হওয়ার পরও ডাক্তার এবং নার্সদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওয়ার্ডের ভেতরে ঢোকার জন্য কয়েক দফা অনুরোধ জানালে সিকিউরিটি গার্ড লাঞ্ছিত করে। তিনি জানান, তাহলিমা মারা যাওয়ার পর তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করেন এখলাছ।
এখলাছ মিয়ার ভায়রা হেলাল আহমদও একই অভিযোগ করে জানান, শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বার বার তাগিদ দেওয়ার পরও দায়িত্ব পালনরত চিকিৎসক-নার্সরা রোগীর খোঁজ নিতে আসেননি। উপরোন্তু, রোগীর অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ার পর ওয়ার্ডে ঢুকতে না দিয়ে সিকিউরিটি গার্ড তাকে (চপেটাঘাত) লাঞ্ছিত করে।
এদিকে, বেলা আড়াইটার দিকে দাফনের জন্য তাহলিমার মরদেহ গ্রামের বাড়ি জৈন্তাপুর উপজেলার লালারখাল গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান তার স্বজনেরা।
এখলাছ মিয়া বলেন, ‘ডাক্তার ও নার্সদের অবহেলার কারণেই আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তারা যদি সঠিক চিকিৎসা দিত, তবে আমার মেয়ের এমন পরিণতি হতো না।’
তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের মৃত্যুর ব্যাপারে আমি কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হাসপাতালের কতিপয় কর্মচারী ও নার্সরা মিলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে জোরপূর্বকভাবে হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়েছে।’
এ ব্যাপারে ওসমানী হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. আব্দুস সালাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।’