নিখোঁজের ১৯ দিন পর মামার বাড়ির মাটির নীচ থেকে লাশ উদ্ধার
আটক ৪,ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ
উত্তম কুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)থেকেঃ
নিখোঁজের ১৯দিন পর গতকাল (শুক্রবার) সকালে মশিউর রহমান মিছলু মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তির লাশ একই গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ির মাটির নীচ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মর্মান্তিক এ ঘটনাটি মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার গুড়ারাই গ্রামের। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্ধেহে পুলিশ নিহতের স্ত্রী,শ্যালকসহ ৪ জনকে আটক করেছে। মর্মান্তিক এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার শত শত মানুষ ওই খুনের ঘটনার সাথে জড়িতদের ফাঁসি দাবি করে বিক্ষোভ করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানাযায়,গত ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে মৌলভীবাজারের খলিলপুর ইউনিয়নের গুড়ারাই গ্রামের মৃত আতাউর রহমান ঠাকুরের পুত্র দুই সন্তানের জনক মশিউর রহমান মিছলু একই ইউনিয়নের কেশবচর গ্রামের শশুরালয় থেকে তার মামাতো ভাই সফিক মিয়ার সাথে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেননি। তার কোন সন্ধান না পেয়ে দুই দিন পর গত ১৭ ডিসেম্বর নিহতের স্ত্রী মায়ারুন বেগম মিছলু মিয়ার বাড়িতে তার নিখোজের খবর জানায়। খবর পেয়ে মশিউরের ভাই সুফি মিয়া বাদি হয়ে মৌলভীবাজার সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্তের জন্য নিখোঁজ মশিউরের স্ত্রীকে থানায় আসতে খবর দিলে গত বৃহস্পতিবার বিকালে মায়ারুন বেগম তার ভাই ফয়েজ মিয়াকে সাথে নিয়ে থানায় যান। থানায় জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহের কারনে মশিউরের স্ত্রী মায়ারুন বেগম ও তার ভাই ফয়েজ মিয়াকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ নিখোঁজ মশিউরের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ট্র্যাকিং করে মশিউরের ফোন একই উপজেলার লামুয়া গ্রামের ছমিরুন নেছা নামের এক মহিলার নিকট থেকে উদ্ধার ও তাকে আটক করে পুলিশ। আটক ছমিরুন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মশিউরের মোবাইল ফোনটি পার্শ্ববর্তী গুড়ারাই গ্রামের সফিক মিয়ার কাছ থেকে পেয়েছে বলে স্বীকার করে। ছমিরনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মশিউরের মামাতো ভাই সফিক মিয়াকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। সফিকের দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে পুলিশ গতকাল শুক্রবার সকালে সফিকের বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরের মাটি খুঁেড় প্রায় ৫ফুট গভীর গর্ত থেকে মিছলু মিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর পর গ্রামের ও আশপাশ এলাকার শত শত মানুষ খুনিদের ফাসিঁর দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এলাকাবাসী জানান, নিহত মশিউর রহমান মিছলু প্রায় ৭ বছর আগে একই এলাকার কেশবচর গ্রামের মায়ারুন বেগমকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই মিছলু স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে শশুড় বাড়ি থাকতো। কিন্ত ১৪ ডিসেম্বর শশুড় বাড়ি থেকে মামাতো ভাই সফিক মিয়া মিছলু মিয়াকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর থেকে তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। কিন্ত ওই খবর টি নিহতের পরিবারের নিকট ৩দিন পর পৌছার ঘটনাটিও রহস্য জনক। নিহতের ভাই সুফি মিয়া বলেন, আমার ভাইকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে জানিনা। ওই হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ দায়ীদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবী করেন তিনি। মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ আব্দুস ছালেক জানান, নিহত মশিউর রহমান মিছলূ ১৪ ডিসেম্বর থেকে শশুরবাড়ি থেকে নিখোজের ৩ দিন পর অর্থাৎ ১৭ ডিসেম্বর থানায় িিজডি করেন। এর প্রেক্ষিতে তদন্তের এক পর্যায়ে মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং এবং কললিষ্টের সুত্রধরে ইতিপুর্বে নিহতের স্ত্রী, শ্যালক ও ছমিরুনকে গ্রেফতার ও মৃতের ব্যবহৃত মোবাইল করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিজ বাড়ি থেকে সফিক মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় সফিক মিয়া পুলিশের কাছে ঘটনার স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি দেয়। তার স্বীকারোক্তি মতে শুক্রবার গভীর রাত ৩টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল এসে মিছলু মিয়ার লাশ ঘরের ভিতরে মাটির নীচে পুতে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এবং সকাল ১১ টার দিকে মাটির নীচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি আব্দুস ছালেক বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডটি পারিবারিক ও সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংঘটিত হতে পারে বলেও প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। তবে তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনসহ অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে।
এলাকাবাসী এই নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে তাদের ফাসিঁ দাবী করেন। এক পর্যায়ে ক্ষোদ্ধ গ্রামবাসী ঘাতকদের ফাসিঁর দাবী করে বাড়ির পাশের রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। নবীগঞ্জের পার্শ্ববর্তী মৌলভীবাজার সদরের গুড়ারাই গ্রামের সফিক মিয়ার বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরের ভিতরে মাটি খুড়ে গর্ত থেকে গতকাল শুক্রবার সকালে মশিউর রহমান মিছলু মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মৃতের স্ত্রী, শ্যালকসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার শত শত মানুষ জড়ো হয়ে দায়ীদের ফাঁসি দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।