কয়লা ডিপোতে ডাকাতি : ডাকাত দলের ৬ সদস্য গ্রেফতার
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের টেকেরঘাট সীমান্তের বড়ছড়া শুল্ক ষ্টেশনে দু’কয়লা আমদানিকারকের ডিপোতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে পুলিশ শুক্রবার ভোর রাতে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদলের সদস্যরা হল, উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের হাফানিয়া গ্রামের মৃত গোলাপ মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া, একই গ্রামের মৃত কুদরত আলীর ছেলে আলাল উদ্দিন ওরফে আলাইল্ল্যা, হলহলিয়া গ্রামের রাশিদ মিয়ার ছেলে মনসুর আলী, পুরানখালাস গ্রামের আলকাছ আলীর ছেলে আহম্মদ আলী, উওর বড়দল ইউনিয়নের হলহলিয়া চরগাঁও গ্রামের মলয় মিয়ার ছেলে আব্দুল হেকিম, একই গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে রুস্তম মিয়া ওরফে রসতু।
পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, থানার এসআই (উপ-পরিদর্শক) মো. জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে ৩৫ সদস্যদের একটি পুলিশ দল ব্লক রেইট দিয়ে শুক্রবার ভোর রাতে হাফানিয়া গ্রামে ডাকাতদের গ্রেফতার করতে গেলে উল্টো পুলিশকে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করে পুলিশের ওপর ডাকাতরা হামলার চেষ্টা করে। এ সময় ডাকাত দলের সর্দার মোহাম্মদ আলী টিনের বেড়া কেটে রামদা নিয়ে পালিয়ে যায়।
উল্ল্যেখ যে গত ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নির্ব্রিগ্নে দু’ডিপোতে ডাকাতিকালে ৬টি মোবাইল ফোন সেট সহ কয়লা বিক্রির সোয়া ৪ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় ১৫ থেকে ২০ জনের মুখোঁশ পড়া একদল অস্ত্রধারী ডাকাতদল। এ ঘটনায় ডাকাতরা ডিপোতে থাকা ম্যানেজার , সর্দার ও নৈশ প্রহরী সহ ৬ জনকে মারধর করেছিল।
উপজেলার সীমান্তর্তী টেকেরঘাটের বড়ছড়া শুল্ক ষ্টেশনের কয়লা আমদানিকারক সুনীল পাল চৌধুরীর সৌরভ ষ্টোরের কয়লার ডিপোর অফিসের দরজা ভেঙ্গে ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটায় ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ মুখোশ পড়া ডাকাত দল প্রবেশ করে অফিসের ম্যানেজার সঞ্জয় পাল, কয়লা পরিবহন সর্দার রাজীব পাল ও গাফ্ফারকে গলায় রামদা ও ছুড়ি ঠেকিয়ে জিম্মি করে ফেলে। ডাকাতরা এখানে কিছু না পেয়ে পার্শ্ববর্তী কয়লা আমদানিকারক নগর চন্দ্র পাল ওরফে আক্কল পালের লিপি এন্টারপ্রাইজের কয়লার ডিপোর অফিসের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে ওই অফিসের ম্যানেজার রানা রায়, টিটু পাল ও নৈশ প্রহরী কবিন্দ্র পালকে মারধর করে ধারালো গলায় ধারালো ছুড়ি ঠেকিয়ে জিম্মি করে আলমিরার চাবি ছিনিয়ে নেয়। পরে আলমারি ভেঙ্গে ডাকাতরা নগদ ৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা ও অফিসে থাকা লোকজনের কাছ থেকে ৬টি মোবাইল ফোন সেট লুট করে নিয়ে যায়। চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানালে ডাকাতরা বলে, মালিকের টাকা যাবে তোদের কি? টাকার সন্ধান না দিলে তোরাই মরবি।
ম্যানেজার সঞ্জয় পাল ও রানা রায় ও জানান, অফিসের বাহিরে ও ভেতরে সব মিলিয়ে মুখোঁশ পড়া ১৫ থেকে ২০ জনের মত ডাকাত ছিল ,তাদের কারো হাতে রামদা, বোজাং, সাবল, কাঠের রোল, আবার কারো কারো হাতে ধারালো ছুড়ি ছিল।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনিছুর রহমান খাঁন জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ও এলাকাবাসীর দেয়া তথ্যের সুত্র ধরেই নিশ্চিত হয়ে পুলিশ প্রথমে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত একজননে গ্রেফতার করার পর সে অকপটে ওই কয়লা ডিপোতে ডাকাতির ঘটনায় নিজে এবং অন্যান্য সহযোগীদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নেয়। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতার ও লুঠে নেয়া টাকা, মোবাইল সেট এবং ডাকাতি কাজে ব্যবহ্নত অস্ত্রগুলো উদ্যারে গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদ গতকাল বললেন, জনসাধারণের জান মালের নিরাপক্তার স্বার্থে পুলিশ ডাকাতির ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে এমনকি গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বড়ছড়া শুল্ক ষ্টেশনে ওই রাতের ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত থাকা ছাড়াও ইতিপুর্বে একাধিক ডাকাতি এবং দ্রুত বিচার আইনে বেশ কয়েকটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।