সালমান শাহর মায়ের আক্ষেপ !

nila chowdhuryসুরমা টাইমস ডেস্কঃ আজ থেকে ১৮ বছর আগে প্রাণ হারিয়েছিলেন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান শাহ (ইমন চৌধুরী)। পরিবারের অভিযোগ শালমান শাহকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেই ঘটনায় মামলাও হয়েছে। কিন্তু বিচার হয়নি ঘাতকদের। এখনও বিচারের আশায় দিন কাটাচ্ছেন সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী।
এক বুক নিঃশ্বাস ছেড়ে তিনি একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ছেলে মারা গেছে আজকে ১৮ বছর হতে চলেছে। কিন্তু এখনও বিচার পেলাম না। এভাবে হয়তো আমিও চলে যাবো। কিন্তু বিচার কি পাব না?’ প্রশ্ন করেন নীলা চৌধুরী।
মঙ্গলবার মুঠোফোনে কথা হয় নীলা চৌধুরীর সাথে। তিনি জানান, ‘আমি চাই আদালত সালমান শাহকে হত্যাকারীদের বিচারের রায় ঘোষণা করুক। প্রয়োজনে আমি তাদের ক্ষমা করে দেবো। কিন্তু তারা যে ঘাতক সেটা ঘোষণা হওয়া দরকার। তাহলে সালমান শাহর লাখ লাখ ভক্তের হৃদয় শান্তি পাবে। শালমান শাহর আত্মা শান্তি পাবে জানান তিনি।’
নীলা চৌধুরী জানান, ‘এক সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শালমান শাহকে তেজগাঁও থেকে নির্বাচনের কথা বলেছিল। কিন্তু সালমান শাহ করেনি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে খুব ভালভাসতো। খোঁজ-খবর নিতো। এখন খবর নেয় না প্রধানমন্ত্রী। আমি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছি তিনি যেন সালমান শাহর বিচারের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকে একটি মহল প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে দেয় না। বাধা দেয়। তারা চায় না আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাই। তার স্নেহধন্য হই।’
নীলা চৌধুরী বলেন, ‘আমি চাই দেশের মানুষ জানুক, ইমন আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি সালমান ভক্তদের সাথে নিয়ে তার হত্যার বিচার চাই। ’
এক প্রশ্নের জবাবে নীলা চৌধুরী বলেন, ‘এর পেছনে সামিরা যদি যুক্ত না-ই থাকত, তাহলে সে ইমনের বন্ধুর সাথে কীভাবে দুটি সন্তান নিয়ে সংসার করছে? ইমন যেদিন মারা যায়, আমাকে বাসায় উঠতে দিতে তারা অনেক সময় নষ্ট করেছে। বাসায় ওঠার পর দেখতে পেলাম, সামিরার বিউটি পার্লারের মেয়ে ও বাসার কাজের ছেলেটি ইমনের সমস্ত শরীর ম্যাসাজ করছে। ’
তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো, কোনো মানুষ যদি ফ্যানে ঝুলে সুইসাইড করে তাহলে প্রথম কাজ হলো পুলিশে ইনফর্ম করা। কিন্তু তারা সেটা করেনি। সালমান শাহ দেশের একজন বড় অভিনেতা, কিন্তু মৃত্যুকালীন সময়ে তার বাসায় চাল-ডাল কিছুই ছিল না। কোথায় গেল? বাথরুমেও অনেকগুলো ভেজা তোয়ালে পাওয়া গিয়েছিল। এগুলো কিসের আলামত? ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তাকে যখন প্রথম নেওয়া হয়, তখন না দেখে পরীক্ষা না করে চিকিৎসকরা কীভাবে বলল, সালমান ইজ ডেড। তারা কীভাবে বুঝল, সালমান মারা গেছে?’
নীলা চৌধুরী বলেন, ‘১৮ বছরেও আমার সন্তান হত্যার বিচার হয়নি। এমন কি তার নামে দেশের কোনো সড়ক কিংবা স্থাপনার নামকরণও করা হয়নি। এসব কিছুর রহস্য উন্মোচন করতে হবে। সালমান শাহ হত্যা মামলাটি এখনো নিষ্পতি হয়নি। আমরা প্রয়োজনে রিভিউ করবো। তারপরও আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমি চাই সালমান শাহর নামে একটি হাসপাতাল হউক। কিন্তু আমার সামর্থ নেই। সবাই যদি এবিষয়ে উদ্যোগ নেয় তাহলে একটি হাসপাতাল তৈরি হলে আমার স্বপ্ন পুরণ হবে। ইমনের স্বপ্নও পুরন হবে বলেন তিনি।’ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নিজ শয়নকক্ষে সালমান শাহ’র মৃতদেহ পাওয়া যায়।