তারেক পরিষদের সংবাদ সম্মেলন : আন্তর্জাতিক লবিং জোরদারের কর্মসূচি

তারেক পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন আকতার হোসেন বাদল। ছবি এনা।
তারেক পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন আকতার হোসেন বাদল। ছবি এনা।

নিউইয়র্ক থেকে এনা : অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে আন্তর্জাতিক লবিং জোরদারের সংকল্প, অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার,অবিলম্বে মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি প্রদান এবং
গুম, খুন, অপহরণ বন্ধ করার দাবি জানানো হয় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কমিটির সংবাদ সম্মেলন থেকে। এসব দাবির পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত জোরদারকল্পে সকল ভেদাভেদের উর্দ্ধে উঠে বিএনপির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হবার আহবানও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। ৩০ নভেম্বর রোববার নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টের এ সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের প্রধান আকতার হোসেন বাদল। এ সময় বিএনপি ও তারেক পরিষদের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সেখানে ছিলেন। ‘বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা, দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আওয়ামী দুর্বৃত্তদের লাগাতার অপপ্রচারের প্রতিবাদে’ আহূত এ সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ‘বর্তমান বাংলাদেশ এক গভীর ষড়যন্ত্রে নিপতিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ বিপন্ন। গণতন্ত্র বন্দি বাকশালী ধ্যান-ধারণার খাঁচায়। কেউ এসবের প্রতিবাদ করলেই গুম-খুনের শিকার হচ্ছেন নয়তোবা মামলার জালে আটকা পড়ছেন।’
আরো উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশের এহেন অবস্থার পরিপ্রেেিত গণতন্ত্রের কান্ডারি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, আমাদের প্রিয়নেতা তারেক রহমান সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু সত্য কথা বলেছেন। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণে তাকে দেশদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করার গভীর ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। একইভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও নানাভাবে হয়রানির অপচেষ্টা চলছে। শুধু তাই নয়, বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মায়নাস করার পাঁয়তারাও চালানো হচ্ছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সমগ্র জাতি অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করছে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অর্বাচিনের মত কথাবার্তা। জয় বলেছেন যে, বিএনপি নাকি রাজাকারের দল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। নিজের চেহারা আয়নায় দেখলে জয় এমন কথা বলার ঔদ্ধত্ব্য দেখাতেন না।’
জনাব বাদল আরো বলেন, ‘ইতিমধ্যেই বর্তমান সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের মুখে প্রধানমন্ত্রী ও তার পুত্রের দুর্নীতি-রাষ্ট্রীয় সম্পদ হরিলুটের কিছু তথ্য ফাঁস হয়েছে। মাসিক এক লাখ ৬০ হাজার ডলার করে বেতন গ্রহণের তথ্যও জাতি অবহিত হয়েছে। আর এই পরম সত্যটি প্রকাশের কারণে মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর নাজুক অবস্থাও আমরা অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করছি। স্টক মার্কেট, ব্যাংক-বীমা হরিলুটের সাথেও প্রধানমন্ত্রীর লোকজন জড়িত বলে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে এবং হচ্ছে। দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের দুর্নীতির সামান্য কিছু অংশ প্রকাশের কারণে। অর্থাৎ বাংলাদেশের মিডিয়া সত্য প্রকাশ করতে পারছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ‘আমরা মুক্ত বিশ্বের নাগরিক, তাই প্রিয় জন্মভূমির এহেন অবস্থায় নিরব থাকতে পারিনা। জাতিসংঘের শহর তথা বিশ্বের রাজধানী হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্ক সিটি থেকে বাংলাদেশের সকল অন্যায়-অবিচার-জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে ঘোষিত কর্মসূচির সমর্থনে জাতিসংঘ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, কংগ্রেসে লবিং জোরদার করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ বিভিন্ন থিঙ্কট্যাংকের কাছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি উপস্থাপন করার কথাও জানানো হয়।তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কমিটির মহাসচিব জসীম উদ্দিন স্বাগত বক্তব্য দেন। সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন শহীদুল্লাহ পাটোয়ারি, মোয়াজ্জেম হোসেন, মিজানুর রহমান, আনিসুর রহমান, নিজামুল শাহীর, মোস্তাফিজুর রহহমান, হুমায়ূন কবীর, শেখ আনসার আলী, আতাউর রহমান, পেয়ার আলী, ফরিদুর রহমান প্রমুখ।