খালেদাকে মাইনাসের ষড়যন্ত্র হচ্ছে : ফখরুল

mirza fokhrulসুরমা টাইমস ডেস্কঃ বিশেষ আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাসের ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এমন অভিযোগ করেন।
শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ২৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ৯০’এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যিনি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য আপোষহীন লড়াই করেছেন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই মামলা বিশেষ আদালতে নিয়ে খালেদা জিয়াকে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব মামলার উদ্দেশ্য একটাই- তাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা। কিন্তু আপনারা অতীত ভুলে যাবেন না।’
এ সময় ছাত্রনেতাদের উদ্দেশে বিএনপি মুখপাত্র বলেন, ‘আজকে আমরা বুড়ো হয়ে গেছি। তোমাদের ওপর দেশ রক্ষার সেই গুরু দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। গণতন্ত্র ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তোমাদেরকে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
দেশে ফ্যাসিবাদের চেয়েও জঘন্য শাসন চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রাজপথে সভা সমাবেশ এমনকি ঘরের মধ্যেও সভা করতে পারছে না বিরোধী দল। এটাকে গণতন্ত্র বলা চলে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দীর্ঘকাল গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে আজকে তারাই গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরেছে। গণতন্ত্র হত্যা করে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে ক্ষমতা দখল করেছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে।’
আওয়ামী লীগকে জাতীয় বেঈমান আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তারা অতীতে বাকশাল কায়েম করে জনগনের বাক স্বাধীনতা হরণ করেছিলো। এবারও তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে সংবিধানের দোহাই দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে।
বিশ্বের কেউ এই সরকারকে সমর্থন দেয়নি দাবি করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘জাতিকে বিভ্রান্ত করবেন না। ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে শুধুমাত্র বিএনপি নয়, বহির্বিশ্বের কোনো দেশই সমর্থন দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘দেশের কোন রাজনৈতিক দল ওই নির্বাচন সমর্থন জানায়নি। ৪২টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ৩০টি দলই নির্বাচন বর্জন করেছিল। এখন এটাকে যদি গ্রহণযোগ্য বলে দাবি করেন, তাহলে বলবো আহাম্মকের স্বর্গে বাস করেছেন।’
নিরপক্ষে নির্বাচন হলে এবং সে নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ভবিষ্যতে রাজনীতি না করার ঘোষণা দিয়ে মির্জা ফখরুল সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘নির্বাচন হলে আপনারা জামানাতও রক্ষা করতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আপনাদের যদি এতোই জনপ্রিয়তা থাকে তাহলে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। ভোটে যদি আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন না পাই, তাহলে ভবিষ্যতে রাজনীতির চিন্তা করবো না।’
বিএনপি মুখপাত্র বলেন, ‘এই ভয় থেকেই বিরোধী দলকে মিছিল মিটিং করতে দেয় না ক্ষমতাসীনরা। ঘরে বৈঠক করলেও গ্রেপ্তার করা হয়। মাত্র তিনমাসে আমাদের ৩১০জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান হাসিনা সরকার পৃথিবীর নিকৃষ্ট স্বৈরাচার। তারা গণতন্ত্রের মুখোশ পরে একের পর এক আইন পাস করে, আদালত, বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যসেহ সকল প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করছে।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আমানুল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাগপা নেতা খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।