সার্ক সম্মেলনে ‘বিদ্যুৎ সহযোগিতা চুক্তি’ সই

SAARC Logoসুরমা টাইমস ডেস্কঃ দক্ষিণ এশিয়ায় বিদ্যুৎখাতে সহযোগিতার জন্য সার্কভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি চুক্তি সই করেছেন। বৃহস্পতিবার কাঠমান্ডুর সিটি হলে ১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানি (বিদ্যুৎ) সহযোগিতাবিষয়ক রূপরেখা চুক্তিটি সই করেন। মতপার্থক্য থাকায় পররাষ্ট্রসচিব ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে চূড়ান্ত না হওয়ায় চুক্তিটি সই অনিশ্চিত ছিল। কিন্তুু আজ সকালে ধুলিখেলে সার্ক অবকাশ কর্মসূচির সময় শীর্ষ নেতারা চুক্তিটি সইয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
কাঠমান্ডুর ‘রাষ্ট্রীয় সভাগৃহে’ বুধবার শুরু হয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক এই জোটের অষ্টাদশ শীর্ষ সম্মেলন, বৃহস্পতিবার তা শেষ হয়েছে। পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলন হবে ২০১৬ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে।
জ্বালানি চুক্তির পাশাপাশি সার্ক আঞ্চলিক রেল সহযোগিতা চুক্তি এবং সার্ক পণ্য ও যাত্রীবাহী মোটরযান চলাচল চুক্তির আশা নিয়ে শুরু হয়েছিল এবারের সার্ক সম্মেলন। শীর্ষ সম্মেলন শুরুর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জোর আলোচনা চললেও প্রথম দিনটি নিস্ফলাই থেকে যায়। প্রস্তুত নয় জানিয়ে পাকিস্তানের আপত্তিতে আটকে যায় চুক্তিগুলো। তবে বিদ্যুৎ সহযোগিতা বাড়াতে সার্ক কাঠামো চুক্তির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৃহস্পতিবার সকালে অবকাশ যাপন কেন্দ্রে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মধ্যে অনির্ধারিত বৈঠকের পর এই চুক্তি আলোর মুখ দেখে বলে সার্ক সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।
স্বাক্ষরিত ‘সার্ক ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট ফর এনার্জি কো-অপারেশন’ এ আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে, যার মধ্য দিয়ে এক দেশের বিদ্যুৎ সহজেই অন্য দেশ কিনতে পারবে।
সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সড়কপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে প্রস্তাবিত ‘মোটর ভেহিকলস এগ্রিমেন্ট’ এর খসড়ায় বলা হয়েছিল, এর আওতায় পণ্য ও মালামাল পরিবহনের জন্য ‘কার্গো ভেহিকল’, যাত্রী বহনের জন্য নিয়মিত বাস সার্ভিস এবং পিকনিক, স্টাডি ট্যুর, সামাজিক অনুষ্ঠান বা এ ধরনের উদ্দেশ্যে ভ্রমণকারীদের বহনকারী যানবাহন সীমান্ত পেরিয়ে সদস্য দেশগুলোতে যাতায়াত করতে পারবে।
‘সার্ক রিজিওনাল রেলওয়েজ এগ্রিমেন্ট ফর সার্ক মেম্বারস স্টেটস’ এর খসড়ায় কয়েকটি রুট ব্যবহার করে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান ও পাকিস্তানের মধ্যে আন্তঃদেশীয় রেল নেটওয়ার্ক স্থাপনের কথা বলা হয়।
জ্বালানি সহযোগিতা চুক্তি সইয়ের পর জোটের নতুন চেয়ারম্যান নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা বলেন, অচিরেই সার্ক আঞ্চলিক রেল সহযোগিতা চুক্তি এবং সার্ক পণ্য ও যাত্রীবাহী মোটরযান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
এজন্য আগামী তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পরিবহন বিষয়ক মন্ত্রীরা বৈঠকে বসবেন বলে জানান তিনি।
বক্তব্যে ১৯তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ নির্ধারিত হওয়ায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে অভিনন্দন জানান নেপালের প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও এই সুযোগ দেওয়ার জন্য সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকার প্রধানদের ধন্যবাদ জানান।
বিদায়ী চেয়ারম্যান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আব্দুল গাইয়ুম বুধবার দুই দিনের কাঠমান্ডু সম্মেলন উদ্বোধন করেন, এরপর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন স্বাগতিক দেশের সরকার প্রধান সুশীল কৈরালা।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ রাজাপাকসে, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন।