প্রাথমিক শিক্ষা ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় বালাগঞ্জে ৭হাজার ২শ ১৯জন পরীক্ষার্থীর অংগ্রহন

বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে মাদরাসার ইবতেদায়ী শিক্ষকরা বঞ্চিত ও উপেক্ষিত হওয়ার অভিযোগ

শাহ মো. হেলাল, বালাগঞ্জ
বালাগঞ্জে এবারের প্রাথমিক শিক্ষা ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় মোট ৭হাজার ২শ ১৯জন পরীক্ষার্থী অংগ্রহন করছে। এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬হাজার ৪শ ৮৫জন এবং মাদরাসার শিক্ষার্থী ৭শ ৩৪জন। তবে বালাগঞ্জের মাদরাসার ইবতেদায়ী শিক্ষকরা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ও উপেক্ষিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২৩টি পরীক্ষা কেন্দ্রে উপজেলার মোট ২শ ১০টি সরকারী ও বেসরকারী বিদ্যালয় ও মাদরাসার মধ্যে সরকারী ১শ ৭৩টি এবং বেসরকারী ৩৭টি প্রতিষ্টা রয়েছে। এসব বিদ্যালয় ও মাদরাসার মোট ৭হাজার ২শ ১৯জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। এর মধ্যে বালক ৩হাজার ২শ ৮জন এবং বালিকা ৪হাজার ১১জন।
এদিকে বালাগঞ্জের মাদরাসার ইবতেদায়ী শিক্ষকরা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ও উপেক্ষিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদেরকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তাসহ মাদরাসার অনেক প্রধানগণ অবহেলার চোখে দেখছেন বলে জানা যায়। প্রাইমারি সমাপনী পরীক্ষায় পরিদর্শক ও খাতা মূল্যায়ণে সম্পূর্ণভাবে প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকদের দেয়া হলেও মাদরাসার বেলায় করা হচ্ছে তার উল্টো। সেখানে পরিদর্শক ও পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ণে দেয়া হয় মাদরাসার মাধ্যমিক (সিনিয়র) শিক্ষক ও প্রভাষকদের। এতে করে মাদরাসার ইবতেদায়ী (প্রাথমিক) শিক্ষকরা থেকে যাচ্ছেন তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বঞ্চিত। ইবতেদায়ী শিক্ষকরা এটাকে তাদের প্রতি অবজ্ঞার নামান্তর বলে উল্লেখ করেন।
উপজেলার প্রায় ১৮টি আলিম ও দাখিল (মাধ্যমিক/সিনিয়র) এর সাথে সংযুক্ত ইবতেদায়ী (প্রাথমিক) শাখা রয়েছে। ইবতেদায়ী বিভাগের প্রধান শিক্ষক থাকলেও প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন মাদরাসার সুপার/অধ্যক্ষরা। মাদরাসার অধিকাংশ কর্মসূচীতে অগ্রধিকার ভিত্তিতে মাধ্যমিক (সিনিয়র) শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করেই থাকেন। এ ক্ষেত্রে ইবেতেদায়ী (প্রাথমিক) শিক্ষকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বঞ্চিত হন।
আগামী ২৩ নভেম্বর থেকে প্রাইমারী স্কুল ও মাদরাসার ইবতেদায়ী ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্টিত হবে। উপজেলা পর্যায়ে এ পরীক্ষার মূল দায়িত্ব¡ পালন করেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিও)। মূলত: মাদরাসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। শুধু মাত্র ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়টা পালন করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (টিও)। এক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (টিও) মাদরাসার দায়িত্ব অতিরিক্ত হিসেবে পালন করছেন। কয়েকদিন পূর্বে ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষার প্রবেশ পত্র দেয়া হয়েছে। এতে অধিকাংশ প্রবেশ পত্র ভুলে ভরা। নাম, পিতার নাম , বয়স ইত্যাদি ভুল থাকায় মাদরাসার শিক্ষকরা অভিভাবকদের নানাবিধ প্রশ্নের সম্মূখীন হচ্ছেন। অফিসাররা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি বলে দায়ী করছেন মাদরাসার শিক্ষকরা।

এ বছর ইবতেদায়ী পরীক্ষা সংক্রান্ত কোন ধরণের পরামর্শ সভা আহবান করা হয়নি। মাদরাসার শিক্ষকদের নামের তালিকা ৩/৪বছর আগে যেটা দেয়া হয়েছিল ঐ তালিকা দিয়ে কাজ করেছেন বলে অনেক মাদরাসার প্রধানগণ জানান। ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষার রবিবার থেকে শুরু। আগামী পরীক্ষা কিভাবে হবে মাদরাসার প্রধানগণ জানেন না।
এ ব্যাপারে চান্দাইরপাড়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ছরওয়ারে জাহান ও শাহজালাল (রাহ) ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আমিরুল ইসলাম বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় পরিদর্শক ও খাতা মূল্যায়নে ইবদেতায়ী বিভাগের শিক্ষকগণই পাওয়ার যোগ্য। আমরা তাদের নামের তালিকা সংশ্লিষ্ট অফিসে প্রেরণ করে থাকি। থানাগাও মাদরাসার সুপার মাওলানা লুৎফুর রহমান জানান, হল সচিবের কাগজপত্র আসলেও কক্ষ পরিদর্শকের তালিকা এখনো আসেনি।
শাহজালাল (রাহ.) ফাযিল মাদরাসার ইবতেদায়ী প্রধান মাওলানা আব্দুর রব বলেন, ইবতেদায়ী বিভাগের শিক্ষকদের তালিকা পাঠানো হলেও গোজামিল করে সিনিয়র শিক্ষকদের দায়িত্ব দেয়া হয়। এ বৈষম্য দূর করা প্রয়োজন।
মাদরাসার শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মুদাররেছীন বালাগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ছাদিকুর রহমান শিবলী বলেন, এ ধরণের কোন বৈষম্য থাকলে আমরা তা দূর করার জোর দাবী জানাই এবং ইবতেদায়ী বিভাগের শিক্ষকদের তাদের দায়িত্ব দেয়া হোক।
বালাগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ইবদেতায়ী বিভাগের শিক্ষকদের দায়িত্ব দেয়া হয়ে থাকে। অতীতে সিনিয়র শিক্ষকদের দায়িত্ব দেয়া হয়ে থাকলেও এ বছর আর দায়িত্ব দেয়া হবে না।