সিলেট ছাত্রদলের নতুন কমিটির বিরুদ্ধে আন্দোলনের দু মাস
রাজনৈতিক প্রতিবেদকঃ সিলেটের ছাত্রদলের জেলা ও মহানগর কমিটির বিরোদ্ধে আন্দোলনের বিদ্রোহীদের দু’মাস পূর্ণ হল আজ ১৮ নভেম্বর সোমবার । গত ১৭ ই সেপ্টেম্বর সিলেটের জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষনা করা হয় । কমিটি ঘোষনার পর থেকে ছাত্রদলের বড় একটি অংশ বিদ্রোহ ঘোষনা করে । তাদের অভিযোগ ত্যাগি পরীক্ষিত নেতা কর্মীদেরকে বাদ দিয়ে পেশাজীবি,নিস্ক্রিয়,শিবির থেকে আগত নেতাদেরকে নিয়ে কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে । তাই কমিটি ঘোষনার পর দিন ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাঈদ আহমদ তার অনুসারীদেরকে নিয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা.শাহরিয়ার হোসেন চৌধরীর সাথে দেখা করতে তার বাসায় যান। এই সংবাদ ছাত্রদলের বিদ্রোহীদের কাছে পৌছলে থাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন ডা.শাহরিয়ারের বাসায়। তখন তিনি পলিশের সহাতায়া বাসা থেকে বের হয়ে আসেন। পরে তিনি কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করার জন্য নগরীর ইলিক্ট্রক সাপ্লাইতে গেলে তাকে সেখানে ধাত্তয়া দেয় ছাত্রদলের বিদ্রোহীরা। ২০ সেপ্টেম্বর শনিবার ছাত্রদলের বিদ্রোহীরা সিলেট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন কমিটির নেতা কর্মীদেরকে সিলেট শহরে অবাঞ্চিত ঘোষনা করে। এরপর থেকে সিলেটের রাজপথ উওপ্ত হয়ে উঠে। ২২ সেপ্টেম্বর বেগম খালেদা জিয়া হরতালের ডাক দিলে সিলেটের রাজপথ দখল করে নেন বিদ্রোহীরা । ঐদিন নতুন কমিটির মহানগরের সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ মিছিল করার জন্য প্রস্ততি নিলে নগরীর জেল রোডে থাকে ধাত্তয়া করে ছাত্রদলের বিদ্রোহীরা। তখন তিনি দৌড়ে আত্নরক্ষা করেন নিজেকে। মাঠে যখন নতুন কমিটি কেউ দাঁড়াতে পারছিলেন না তখন সেচ্ছাসেবক দলের মহানগরে আহবায়ক এডভোকেট শামজ্জামানের ছাত্রদলে অংশের শেল্টার নেন তারা । তাদের সাথে মিরাবাজারে একটি পত্রিকা অফিসে বৈঠক করেন নতুন কমিটির নেতারা। পর দিন ঘোষনা দেন সিলেট রেজিষ্ট্রারী মাঠ থেকে নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করার। এই সংবাদ বিদ্রোহীদের কাছে পৌছলে তারাও একই স্থানে কর্মূসূচি ঘোষনা করে।তখন উওপ্ত হয়ে উঠে সিলেটের রাজপথ। তবে ঐ দিন নতুন কমিটি মিছিল নিয়ে বের হতে চাইলে পুলিশ তাদেরকে গুলি ছোঁড়ে ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। এদিকে তাদের মিছিলের খবর পেয়ে মিছিল নিয়ে বিদ্রোহীরা আসতে চাইলে জিন্দাবাজারে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। তখন পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এদিকে ২৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিদ্রোহীদের গণপদত্যাগ অনুষ্ঠানে স্থানীয় জেলা ও মহানগর বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দরা যোগ দিয়ে তাদের সাথে একাত্নতা ঘোষনা করেন। এবং বিএনপি নেতারা তাদেরকে গণপদত্যাগ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেন। সেই সাথে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে এর একটি সমাধান নিয়ে আসবেন বলে আশ্বাস দেন । তখন বিএনপির নেতাদের আশ্বাসে ছাত্রদলের বিদ্রোহী নেতারা গণপদত্যাগ থেকে পিছু হটেন।এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাঈদ আহমদ সাঈদ কারামুক্তি পেয়ে বিদ্রোহীদের ভয়ে কারাগার থেকে বের হতে পারেননি। কেননা বিদ্রোহীরা কারা ফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছিল। পরে পুলিশ তাদেরকে সরিয়ে দিলে তখন সাঈদ আহমদ পুলিশের সহায়তায় কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর ৭ অক্টোবর ঈদল আযহা শেষে রাতে ছাত্রদলের বিদ্রোহীরা মটর সাইকেল মহড়া দেয়। ১০ অক্টোবর থেকে ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতারা নগরীরর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও উপজেলায় বিভিন্ন কর্মূসূচি ঘোষনা করেন। এই খবর পেয়ে সর্বাক্ষণ মাঠ দখল করে রাখে ছাত্রদলের বিদ্রোহীরা। ১৭ অক্টোবর ইলিয়াসের সন্ধানের দাবিতে মিছিলের আেয়াজন করে ছাত্রদলের বিদ্রোহীরা। তারা জরো হয় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। তখন নতুন কমিটির মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ লোকমানের নেতৃত্ব মটর সাইকেল মহড়া দিয়ে তাদের সামনে দিয়ে
যেতে চাইলে তাদের কে আটকে বিদ্রোহীরা গণপিঠনী দেয়। ৪ নভেম্বর মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ন সম্পাদক রুমেল শাহ কে গণপিঠুনি দেয় ছাত্রদলের বিদ্রোহী বলয়ের লোকমান ও উমেদ গ্রুপের নেতাকর্মীরা। সর্ব শেষ ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতা ৮ নভেম্বর বিপ্লব সংহতি দিবস উপলক্ষে নগরীতে মিছিল করেন পুলিশের প্রহরায়। ঐদিন মধুবন মার্কেটের সামনে মিছিল নিয়ে নতুন কমিটি আসলে বিদ্রোহীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। তাই শুধু এই দিন ছাড়া সব মিলিয়ে বলা যায় এই দু মাস বিদ্রোহীদের দখলে ছিল মাঠ । তাছাড়া এটিই প্রথম কমিটি নিয়ে সিলেটে নিজ দলের বিরোদ্ধে দীর্ঘতম আন্দোলন।