চীন সফরে আরিফ : অভিভাবক শূণ্য সিলেট নগরী
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ চীনের উশি সিটি মেয়রের আমন্ত্রণে সেভেন্থ সিস্টার সামিটে অংশ নিতে সস্ত্রীক চীন সফরে গেলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সোমবার বেলা ২ টায় চায়না এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। চীনের আমন্ত্রনে সংক্ষিপ্ত সফরে যান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সেখানে তিনি ২১ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য উশি সিটির সেভেন্থ সিস্টার সামিট-এ অংশ নিবেন। এতে ২৬ টি দেশের মেয়ররা অংশগ্রহন করবেন।
এই সম্মেলনে উশি সিটির সাথে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের পাবলিক রিলেশন অফিসার মঈন উদ্দিন মন্জু।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব জানান, এই চুক্তির আওতায় দুটি সিটির মধ্যে শিক্ষা, সংস্কৃতি, বানিজ্য, পর্যটন খাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন মেয়রের সহধর্মিনী সামা হক চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) নুর আজিজুর রহমান এবং পাবলিক রিলেশন অফিসার মঈন উদ্দিন মন্জু।
তবে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কাউকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব না দিয়েই চীন সফরে গিয়েছেন বলে জানা গেছে। যে কারবে সিলেট সিটি করপোরেশ এখন অভিভাবক শূণ্য হয়ে পড়েছে। সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে- চীন যাওয়ার আগে আরিফ কাউকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেননি। ফলে মেয়রের পদটি শূন্যই রয়েছে। এর আগে আরিফ গত ১৮ সেপ্টেম্বর কাউকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব না দিয়ে অনেকটা গোপনে থাইল্যান্ড সফরে যান। তবে থাইল্যান্ড থেকে ফিরে মেয়র আরিফ জানিয়েছিলেন ঢাকা থেকে হঠাৎ করে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যাওয়ায় তিনি কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যেতে পারেননি।
কিন্ত এবার চুপিসারে নয়, জানান দিয়েই চীন গেলেন আরিফ। দেশ ত্যাগ করার পূর্বে শাহজালাল বিমান বন্দর থেকে সিসিকের পাবলিক রিলেশন অফিসার মঈন উদ্দিন মন্জু গণমাধ্যমে একটি বার্তাও প্রেরণ করেছেন।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচিত মেয়রের অনুপস্থিতিতে প্যানেল মেয়র-১ হিসেবে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার কথা রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর। কিন্তু কয়েস লোদীর সঙ্গে মেয়র আরিফের বনিবনা না হওয়ায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব না দিয়ে অনেকটা গোপনে থাইল্যান্ড সফরে যান। এবারও তিনি কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি।
প্যানেল মেয়র পদ থেকে কয়েস লোদীকে সরিয়ে দিতে এর আগে সিটি করপোরেশনের কয়েকজন কাউন্সিলরও একাট্টা হয়েছিলেন। গত ১০ জুন সিটি করপোরেশনের মাসিক সভায় এজেন্ডা ছাড়াই কয়েকজন কাউন্সিলর কয়েস লোদীর প্যানেল মেয়রের পদের ওপর অনাস্থা আনেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা সিটি করপোরেশনের রেজুলেশন বুকে নথিভূক্ত হয়নি।
এরপর সিটি করপোরেশনের ৩৪ জন কাউন্সিলর বিষটি মাসিক সভায় এজেন্ডাভ‚ক্ত করে উপস্থাপনের জন্য লিখিত আবেদন করেন মেয়রের কাছে। কিন্তু জুন মাসের পর থেকে আর মাসিক সভা না হওয়াতে বিষয়টি নিয়ে আর কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সিটি করপোরেশনের ২নং প্যানেল মেয়র অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদকে আরিফ ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। এই আদেশ আজ রাতের মধ্যে তার কাছে পৌঁছার কথা রয়েছে। আদেশ পেলে মঙ্গলবার থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করবেন।