সিলেটে কোটি টাকার সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে সক্রিয় ‘ওসি’র বেয়াই

জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

Press Conferenceসুরমা টাইমস ডেস্কঃ কোটি টাকার সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে সিলেট নগরীতে এক বৃদ্ধ ও পরিবারের লোকজনকে প্রাণ নাশের হুমকী দিচ্ছে ভূমিখেকোরা। উত্তরাধীকার স্বত্বের এই ভূমির জবর দখল নিতে জাল দলিলপত্র সৃজন করেছে তারা। আর এসব অপকর্মের নেপথ্যে জড়িত রয়েছে কোতোয়ালি থানার সাবেক (অপসারিত) ওসি আতাউর রহমানের বেয়াই ও ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তা।
বুধবার বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযাগ করেছেন নগরীর ১৯ নং ওয়ার্ডের খারপাড়া মিতালী ১৬/৭ বাসার বাসিন্দা মনির মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- ভূমিখেকো চক্রের নেপথ্যের মূলহোতা কতোয়ালি থানার বিতর্কিত সাবেক ওসি আতাউর রহমানের বেয়াই নগরীর উপশরের বাসিন্দা শিহার আহমদ। তার সহযোগী হিসেবে এজাজ আহমদ ওরফে হাতকাটা এজাজ ও তোপখানা সেটেলমেন্ট অফিসে কর্মরত ফরিদ আহমদের নাম উঠে এসেছে। তারা জনৈক খয়র“ন নেছা নামের এক মহিলাকে ওই ভূমির মালিক সাজিয়ে তার কাছ থেকে পাওয়ার এটর্নি বলে মালিকানা দাবি করে আসছে। এছাড়া ভূমির মূল মালিক বৃদ্ধ মনির আলীকে বাড়ি না ছাড়লে হামলা-মামলা করে তার ও পরিবারের লোকজনের চরম ক্ষতি করবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মুনির আলী তাঁর মা মৃত জাবেদা বেগমের উত্তরসূরী হিসেবে এই ভূমির মালিক। তাঁর মা এই ভূমি নানি মৃত আজিমুন নেছার উত্তরাধিকারী হিসেবে পেয়েছিলেন। মায়ের একমাত্র সন্তান হিসেবে তিনি যোগ যোগ ধরে এই সম্পত্তি ভোগ দখল করছেন। উক্ত জায়গায় নির্মিত বাসাটিও সিটি করপোরেশন থেকে অনুমোদিত।
সংবাদ সম্মেলনে মনির মিয়া জানান, মিউনিসিপ্যালিটি মৌজার জেএল নং-১৯ স্থিত ৪২১ ও ৪২২ ছাপা খতিয়ানে ১১টি দাগে ৭ একর ৯৪ শতক জায়গার উত্তরাধিকার স্বত্বে মালিক ছিলেন তাঁর নানি মৃত আজিমুন নেছাসহ দুই বোন ও এক ভাই। পরবর্তীতে এই জায়গা ভাগাভাগি হয়ে চার ভাগের এক অংশ উত্তরাধিকার স্বত্ত্বে আজিমুন নেছা প্রাপ্ত হন। আজিমুন নেছার মৃত্যুর পর তাঁর তিন মেয়ে এই জায়গা উত্তারাধীকার স্বত্ত্বে মালিক হন। পরবর্তীতে তাঁর এক খালা আবেদা বেগম মারা গেলে উক্ত ভূমির উত্তরাধীকারী হিসেবে তিনিসহ খালা রুকেয়া বেগম স্বত্ববান হন। তাঁর নানি আজিমুন নেছার তিন কন্যা সন্তানের মধ্যে রুকেয়া বেগম (৯০) জীবিত রয়েছেন। অপর মেয়ে আবেদা বেগম (৭৫) নি:সন্তান অবস্থায় বার্ধক্য জনিত কারণে মারা যান। আর মৃত জাবেদা বেগমের (৭০) একমাত্র সন্তান হিসেবে তিনি ও তার আরেক খালা রুকেয়া বেগম ও তার সন্তানরা এই সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছেন।
এ অবস্থায় সম্প্রতি মুনির আলী তার অংশীয় সম্পত্তি ৫ মেয়েদের মধ্যে ভাগবাটোয়রা করে দিতে গেলে শিহাব, এজাজ, ফরিদসহ ভূমিখেকোচক্র তাতে বাধা সৃষ্টি করে। তারা খয়র“ন নেছা নামের জনৈক মহিলাকে মনির আলীর নানি আজিমুন নেছার একমাত্র সন্তান সাজিয়ে উক্ত জায়গা তাদের কাছে বিক্রি করেছে বলে অপপ্রচার চালাতে থাকে। ভূমিখেকোরা জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল নিতে তাদের মামলা দিয়ে ফাঁসানো ও স্বজনদের উপর হামলার হুমকী দেয়। ভূমিখেকোরা তারা মনির আলীর আমার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের ক্ষতি করার চেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছে। এ আশঙ্কায় কয়েক মাস আগে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মনির আলী বলেন, ইতোপূবে জনৈক শিহাব আদালতে উচ্ছেদ মামলা করলে তার সব কাগজ আদালতে জাল বলে প্রমাণিত হয়। এ সংক্রান্ত আরেকটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ভূমিখেকোদের সার্বিক সহযোগীতা করে যাচ্ছেন নগরীর তোপখানা সেটেলমেন্ট অফিসে কর্মরত জনৈক ফরিদ আহমদ। ভূমি খেকোদের হাত থেকে সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মনির আলী।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন, মনির আলীর খালা বায়োবৃদ্ধ রুকেয়া বেগম, মেয়ে ছালমা বেগম, মেয়ের জামাতা সাবুল আহমদ, প্রতিবেশী হাছিব খান, ফয়জুল চৌধুরী, খালেদ খান ও ইমরান আহমদ।