শ্রীমঙ্গলে বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধার : তথ্য নিয়ে পুলিশের আচরণ রহস্যজনক

arms in moulvibazarমৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক বিহারী সেলাই মেশিন মেকারের বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্র মজুতের সাথে জড়িত এক যুবককে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ। এদিকে ঘটনার এক দিন পরও কি পরিমান অস্ত্র উদ্ধার ও যুবককে আটকের বিষয়ে সুনিদিষ্ট ভাবে কোন তথ্য স্থানীয় সাংবাদিকদের জানায়নি পুলিশ। এব্যাপারে একাধিকবার সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে কখনও ৪টি এক নলা বন্দুক ও ১টি এয়ারগান আবার কখনও ১০টি এক নালা বন্দুক ও ১টি এয়ারগান উদ্ধারের তথ্য নিয়ে দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি।
পুলিশ ও স্থানীয় ভাবে অনুসন্ধানে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাত ১০ টায় দিকে শ্রীমঙ্গল থানার এসআই রাজিব মন্ডল শহরের মিশন রোডে বসবাসরত বিহারী সেলাই মেশিন মেকার ইফতেখার হোসনে ওরফে ইফতির শ্বশুর আবু দাইয়ান চৌধুরী ওরফে টুনু চৌধুরীর বাসা থেকে ইফতিকে আটক করে পুলিশ। এসময় ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪টি এক নালা বন্দুক উদ্ধার করা হয়।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে শহরের মৌলভীবাজার সড়কে অবস্থিত ইফতিদের বাসায় পারিবারিক বিরোধ নিয়ে তার আপন ছোট ভাই ইসতিয়াকের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ইসতিয়াক তাদের ঘরে রক্ষিত একটি এয়ারগান নিয়ে ইফতিকে গুলি করতে গেলে উভয়ের মধে সংঘর্ষ বাধে। এক পর্যায়ে এয়ারগানের গুলি ছোট ভাই ইসতিয়াকের পায়ে বিদ্ধ হয়। এঘটনায় ওই দিন ছোট ভাই শ্রীমঙ্গল থানায় গিয়ে ইফতি ও তার শ্বশুরকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ ইফতিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে দুটি স্থানে অস্ত্র রাখার কথা স্বীকার করে। তবে পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার করলেও তার সংখ্যা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা রহস্য।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল জলিলকে এব্যাপারে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বারবার যোগাযোগ কার হলেও কোন সদোত্তর তিনি দেননি। সর্বশেষ ঘটনার একদিন পর বুধবার বিকেল ৫টায় তাকে ফোন করলে তিনি জানান, এক যুবক আটক ও তার কাছ থেকে তিনটি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। তবে একাধিক সূত্রে জানা গেছে বাসায় অভিযান চালিয়ে ৬টি দুই নালা বন্দুক ও একটি এয়ারগান উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, পুলিশের হাতে আটক ইফতেখার হোসেন শহরের মৌলভীবাজার রোডের বাসিন্দা। সে ছাত্রদলের উপজেলা কমিটির অন্যতম নেতা। বছর ৫ আগে সে বিয়ে করে শ্রীমঙ্গল পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. সাহাদত হোসেনের মেয়ে মুনমুন হোসেনকে। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে কিছুদিন পূর্বে সে বিয়ে করে শহরের মিশন রোডের বাসিন্দা আবু দাইয়ান চৌধুরী ওরফে টুনু চৌধুরীর মেয়েকে। জনশ্রুতি আছে টুনু চৌধুরী বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় সংসদ সদস্যের অত্যন্ত কাছের লোক। এর ফলে শুশ্বরের প্রভাব ও প্রতিপত্তি খাটিয়ে সে বৈধ অস্ত্র মেরামতের পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধ কাজে ব্যবহ্নত অস্ত্রের মেরামত করতো। এদিকে ক্ষমতাসীন দলের ওই প্রভাবশালী নেতার সু-সম্পর্ক থাকায় বুধবার শ্রীমঙ্গল থানায় উপস্থিত হলেও পুলিশ ইফতির বিষয়ে সংবাদকর্মীদের বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করা হয়।