বোমাসহ বিচারপতি ও সচিবের ছেলে আটক
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ হরকাতুল জিহাদ (হুজি) ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে বিষ্ফোরক দ্রব্য, বোমা তৈরির সার্কিট, রিমোট কন্ট্রোল ম্যানুয়াল, একটি কম্পিউটার, তিনটি মোবাইল, দুইটি পেনড্রাইভ ও তিনটি সিডি উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হল- খায়রুল ইসলাম (২৪), সাইফুল ইসলাম ওরফে শফিক (৩৫), মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ (২৪), আসিফ আদনান (২৬) ও ফজলে এলাহী তানজিল (২৪)।
এদের মধ্যে আসিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইকোমিক্স থেকে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করেছে। সে সাবেক বিচারপতি আব্দুস সালামের ছেলে। তানজালী ইংলিশ মিডিয়ামে এ লেভেল পরীক্ষা শেষ করেছে। সে এক যুগ্ম সচিবের ছেলে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
রাজধানীর রামপুরা, ইস্কাটন, সেগুনবাগিচা থেকে বুধবার সন্ধ্যায় ও রাতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের দাবি, খায়রুল, শফিক ও আহসান বোমা বিশেষজ্ঞ ও হরকাতুল জিহাদের (হুজি) সদস্য। আসিফ ও তানজিল আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সক্রিয় সদস্য।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে রাজধানীর মিন্টোরোডে অবস্থিত মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগা¥ কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ সব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, খায়রুল গাজীপুরে অবস্থিত ইসলামিক ইউনির্ভাসিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড ইলেকট্রনিক্সের শেষ বর্ষের ছাত্র। খায়রুল বোমা বিষ্ফোরণের রিমোটকন্ট্রোল ডিজাইন করেছে। যা ২০০ গজ দুর থেকে একটি বোমা বিষ্ফোরণে সক্ষম। তাদের টার্গেট ছিল ৫০০ গজ পর্যন্ত এর কার্য পরিধি বাড়ানো। জিহাদিকাজে ব্যবহার করার জন্য এ সব উদ্ভোবন করেছে বলে স্বীকার করেছে খায়রুল।
যুগ্ম কমিশনার বলেন, হুজির সাথে সম্পৃক্ত একজন মুুরুব্বীর নির্দেশনায় অন্য এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধায়নে সে এসব সার্কিট ডিজাইন তৈরি করেছে। অন্য সহযোগীরা জিহাদি কাজের অংশ হিসেবে ওই মাওলানার নির্দেশে বোমা তৈরির কাজে অংশ নিয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খায়রুল ও শফিককে এরআগে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ধরে নেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, তাদেরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি আমরাও শুনেছি। তবে বিষয়টি সম্পর্কে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। তবে গতকালকে আমরা তাদেরকে গ্রেপ্তার করছি।
তিনি আরো বলেন, তারা দুজন সম্প্রতি আলকায়দা নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরির ভিডিও বার্তায় অনুপ্রাণিত হয়। তারা দুইজন সিরিয়ার নুসারা বিগ্রেডে প্রশিক্ষণ শেষে আলকায়দা নেটওর্য়াক প্রতিষ্ঠা করে স্বশস্ত্র যুদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছিল। এ জন্য তাবলীগ জামায়াতের মাধ্যমে প্রথমে তুরষ্ক ও পরে সিরিয়া জাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছিল। এক্ষেত্রে তারা ইউরোপ প্রবাসী একজন বাঙ্গালীর সহায়তা নিচ্ছিল বলে জানা গেছে। ওই ইউরোপ প্রবাসী বাঙ্গালীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর ও পশ্চিম বিভাগের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম, পূর্ব বিভাগের উপ-কমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুববর, দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় ও মিডিয়া সেন্টারের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।