জকিগঞ্জের সেই ওসির বিরুদ্ধে ভোক্তভোগীদের গনস্বাক্ষী
জকিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ জকিগঞ্জে ধারাবাহিক চুরি, ডাকাতি, জুয়ার আসর, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, উৎকোচের বণর্ণা দিলেন সিলেটের অতিরিক্ত ডিআইজি শাখাওয়াত হোসেনের কাছে জকিগঞ্জের ভোক্তভোগীরা। জকিগঞ্জ থানার ওসি জামশেদ আলমের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছে একটি অভিযোগের সরেজমিন তদন্তকালে তার কাছে এ অভিযোগ করেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার এসব অভিযোগের সরজমিন তদন্তে আসেন অতিরিক্ত ডিআইজি শাখাওয়াত হোসেন । তদন্তকালে অভিযোগকারীদের লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দী গ্রহণ করেন তিনি। জবানবন্দি প্রদান করেন জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমদ, জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী প্রজন্মলীগের আহবায়ক ফয়েজ আহমদ, সাংবাদিক আল হাছিব তাপাদার, কৃষকলীগ সহ সভাপতি আতাউর রহমান আলতা, ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন, গুলজার আহমদসহ কয়েকজন ভোক্তভোগী। ভোক্তভোগীরা অতিরিক্ত ডিআইজিকে জানান, ওসি জামশেদ আলম যেদিন জকিগঞ্জে যোগদান করেন সে রাতেই উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের এক প্রবাসীর বাড়িতে দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে ধারবাহিক ভাবে চুরি, ডাকাতি, জুয়া, খুন খারাবিসহ বিভিন্ন অপরাধ মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। উপজেলার কালিগঞ্জ, লামারগ্রাম, শাহবাগসহ কয়েকটি স্থানে নিয়মিত জুয়ার আসর বসে। গত ০৮ জুলাই আব্দুল করিম হত্যাকান্ডের ঘটনায় ধামাচাপার চেষ্টা করেন। করিম হত্যার ৫ দিন পর আবার বিভাগীয় হিসাব রক্ষক কর্মকতা ফারুক আহমদ খুন হন। পহেলা সেপ্টেম্বর জকিগঞ্জ থানার কয়েকশ গজের মধ্যে হাইদ্রাবন্দে গ্রামের প্রবাসী কবির আহমদের বাড়িতে এক জনকে মাথায় কুপিয়ে ও একজনরে কান ছিড়ে ভয়াবহ ডাকাতি সংঘঠিত হলেও ৫/৬ দিন পরে ওসি জামশেদ আলম চুরির মামলা রেকর্ড করাতে বাধ্য করেন। ৩ সেপ্টেম্বর আটগ্রাম বাসষ্টেসনের একটি মোবাইলের দোকান থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা, ৪ সেপ্টেম্বর আটগ্রাম বাজারের কামিল আহমদের কাপড়ের দোকান থেকে নগদ টাকাসহ ৬০ হাজার টাকার মালামাল এবং ৫ সেপ্টেম্বর কালিগঞ্জের আল আমিন ট্রেডার্স ও হাজী আব্দুল মান্নানের দোকানে দূঃসাহসিক চুরি সংগঠিত হয়। এর প্রায় ১৫ দিন আগে কালিগঞ্জ ইন্টারন্যশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষকের গ্রামীণ ফোনের কাষ্টমার কেয়ারসহ দুটি দোকান থেকে প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকা চুরি হয়। কয়েকদিন আগে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের ফুফুর বাড়ি বারহালে এম্বুলেন্স যোগে ডাকাতি সংগঠিত হয়। ভারতীয় দুটি মোটর সাইকেল আটক করে গোপনে বিক্রি করেন। ৬ বস্তা ফেন্সিডিল উদ্ধার করে ৪ বস্তা বিক্রি করেন তা নিয়ে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ দুটি বিষয় এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। সর্বশেষ গত সপ্তাহে জকিগঞ্জ থানার সদ্য বিদায়ী মুন্সি সুব্রত রায়ের ইখওয়ান সেন্টারের কাছের বাসায় চুরি সংগঠিত হয়। এসব ঘটনাকে ওসি রহস্যজনক বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও এসব ঘটনার রহস্য উদঘাটনের কোন চেষ্টাই তিনি করেননি। তিনি থানামুখী কয়েকজন সুবিধাবাদীর সাথে সম্পর্ক রেখে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের হয়রানী ও হুমকির মূখে রাখেন। ওসি জামশেদ আলম বিএনপি জামায়াত জোটের নেতাকর্মীর সাথে সুসম্পর্ক রেখে সুবিধা নেন। জকিগঞ্জ থানার সদ্য বিদায়ী এস আই আলী খান গত রমজান মাসে জকিগঞ্জ বাজারে জামায়াত শিবিরের হাতে প্রহৃত হয়ে জামায়াত শিবিরের তিনটি মোটর সাইকেল আটক করলেও কোন প্রকার মামলা না নিয়েই ওসি মোটর সাইকেল তিনটি ছেড়ে দেন। ডিআইজির কাছে ভোক্তভোগী আতাউর রহমান আলতা ওসির বিচার দাবী করে বলেন একটি হত্যা মামলার চার্জশীটের আগে আমার কাছে এক লক্ষ টাকা কথিত এক দালালের মাধ্যমে উৎকোচ চাওয়া হয়। আমি উৎকোচ না দেওয়ায় আমাকে জড়িয়ে চার্জশীট আদালতে জমা হয়।