পদত্যাগের হুঙ্কার ছুড়ে পিছু হটলেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিত বিদ্রোহীরা!

Arif in Chhatrodolসুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি প্রত্যাখানকারী বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা গণপদত্যাগ করা থেকে অবশেষে পিছু হটলেন । পদত্যাগের হুঙ্কার ছুড়লেও শেষ পর্যন্ত রণেভঙ্গ দিতে হয়েছে তাদেরকে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবীন চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনার সাথে আলোচনা করে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ । এই আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ছাত্রদলের বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়- দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে পদত্যাগের জন্য পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার বেলা ১টা থেকে নগরীর কুমারপাড়া মালঞ্চ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে জড়ো হতে থাকেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয় সভার কার্যক্রম। পদত্যাগের জন্য দলীয় প্যাড সামনে নিয়ে বসে জেলা ও মহানগর ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।
এরপর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নবগঠিত জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে তাদের বক্তব্য শুরু করেন।
Jamalবিকেল ৪টার দিকে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ও জেলা ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ সভাপতি আবদুল আহাদ খান জামাল। তিনি নবগঠিত কমিটি অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ব্যক্তি বিশেষের ইন্ধনে গঠিত হয়েছে উল্লেখ করে বলেন- সাবেক শিবির নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী ও নিষ্ক্রিয়দের দিয়ে গঠিত এ কমিটি কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তবে পদত্যাগও এর কোন সমাধান নয়। এজন্য প্রয়োজন কেন্দ্রের সাথে আলোচনা করে সমাধানের পথ বের করা।
আবদুল আহাদ খান জামালের বক্তব্য চলাকালে কমিউনিটি সেন্টারে প্রবেশ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের শামীম, মহানগর বিএনপির সভাপতি এমএ হক, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সহ সভাপতি বদরুজ্জামান সেলিম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নূরুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক দিলদার হোসেন সেলিম, অ্যাডভোকেট আবদুল গফ্ফার, আলী আহমদ ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাকসহ জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি নেতৃবৃন্দের পক্ষে ছাত্রদলের বিদ্রোহীদের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন- বিদ্রোহী নেতাকর্মীদের দাবির প্রতি উপস্থিত সকল বিএনপি নেতৃবৃন্দ একাত্ম। জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দকে কোন কিছু অবগত না করেই কেন্দ্র থেকে এ কমিটি দেয়া হয়েছে।
মেয়র বলেন- বিদ্রোহী নেতাকর্মীদের যে দাবি তা নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবীন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীর পত্মী তাহসিনা রুশদীর লুনার সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথেও দেখা করা হবে।
তিনি বিদ্রোহী নেতাকর্মীদের পদত্যাগ না করে ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দেন। বক্তব্যের একপর্যায়ে মেয়র আরিফ কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত বিদ্রোহী নেতাকর্মীদের তাদের সকল কর্মসূচি স্থগিত রাখার আহ্বান জানান। মেয়রের এই আহ্বানের পর সভাস্থলে থাকা নেতাকর্মীরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। পরে মেয়র নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
সভায় সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- জেলা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি আহমেদ চৌধুরী ফয়েজ, মহানগরের সিনিয়র সহ সভাপতি মাহফুজুল করিম জেহিন, বর্তমান জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন পান্না, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রকিব।
এছাড়াও জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সহস্রাধিক নেতাকর্মী গণপদত্যাগের জন্য মালঞ্চ কমিউনিটি সেন্টারে জড়ো হন। তারা কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান কমিটির পেশাজীবী ও সাবেক শিবির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।