৭২ ঘন্টার মধ্যে দুই কমিটি বাতিল না করলে গণপদত্যাগের হুমকি

Chhatrodol Press Conferenceসুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে ৩ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে দুটি কমিটি বাতিল করা না হলে তারা গণপদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন তারা এ হুমকী দিয়ে নতুন দুই কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করেন। ক্ষুব্দদের তালিকায় নতুন কমিটির দায়িত্বশীলরা রয়েছেন। এদিকে গ্রেফতারকৃত জেলা সভাপতি সাঈদ আহমদসহ ১৩ নেতাকর্মীকে গতকাল কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা ক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতারা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, নতুন দুটি কমিটিতে ছাত্রদলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের সঠিক মূল্যায়ন না করে সাবেক শিবির নেতাদের নতুন কমিটিতে পুর্নবাসন করা হয়েছে। তাদের পূর্নবাসনের পেছনেও সাবেক এক শিবির নেতার মদদ রয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের। নতুন জেলা সভাপতিসহ ছাত্রদলের রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়দের তৃণমূল নেতাকর্মীরা মেনে নেবে না বলেও মন্তব্য করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমদ ছাত্রদলের অধুনালুপ্ত মহানগর কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। গত প্রায় দু’বছর ধরে সাঈদ আইন পেশার সঙ্গে জড়িত। নেতাকর্মীদের কাছে অগ্রহনযোগ্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়ায় সাধারন নেতাকর্মীরা কখনো মেনে নেবে না। একইভাবে জেলার নতুন সাধারণ সম্পাদক রাহাত চৌধুরী মুন্নাও গত ৪/৫ বছর ধরে নিষ্ক্রিয়। মহানগর ছাত্রদলের নতুন সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ বিগত কমিটির সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় কোনো অবদান নেই। একটি কমিটি ছাড়া কোনো কমিটি করতে পারেননি তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মহানগরের নতুন সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ লোকমান এক সময় শিবিরের রাজনীতির ‘সাথী’ ছিলেন। লোকমান ২০০১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ছাত্রদলে যোগ দিয়েছেন। তাকে এখনও ছাত্রদলের কোনো নেতাকর্মী চেনে না।
লিখিত বক্তব্যে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতারা ‘কথিত’ এক ব্যবসায়ী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার কার্যালয়ের সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারীকে সবকিছুর ‘নেপথ্য নায়ক’ বলে উল্লেখ করেন। এক সময়ে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত মুশফিকুল ফজলের তৎপরতায় নতুন কমিটিতে সাবেক চার শিবির নেতা ঠাঁই পেয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ছাত্রদল নেতারা। এ অবস্থায় জেলা ও মহানগর কমিটি বাতিল করা না হলে গণপদত্যাগ করা হবে বলে জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে নবগঠিত জেলা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আহমদ চৌধুরী ফয়েজ, জেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহফুজুল করিম জেহীন, জেলার যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নাজিম উদ্দিন পান্না ও সাংগঠনিক সম্পাদক এখলাসুর রহমান মুন্না উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জেলার সাবেক সাধারন সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী, মহানগরের সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক রেজাউল করিম নাচন, জেলার সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল মূর্শেদসহছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এদিকে শুক্রবার সিলেটে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় কোতোয়ালি থানার এএসআই মাহবুবুর রহমান বাদি হয়ে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেছেন। এ মামলায় নবগঠিত জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাঈদ আহমদসহ ১৩ জনকে গতকাল গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম জানান, আসামিদের দুপুর ২টার দিকে সিলেট মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে বিচারক তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আজ সোমবার রিমান্ড আবেদনের উপর শুনানি হতে পারে বলে জানান তিনি। বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতারকৃতরা হলো, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাঈদ আহমদ, সুমিন আহমদ চৌধুরী, জিয়াউর রহমান, রেজওয়ান হোসেন, আহমদ জাকি, মিজান আহমদ, মাছুম আহমদ, সাওয়াল ওরফে সাগর, আলী আকবর রাজন, আক্তারুজ্জামান চৌধুরী, আফজাল হোসেন, ফয়েজ আহমদ ও রাহিকুল ইসলাম সনি।