‘ভারপ্রাপ্ত মেয়র’ জটিলতায় সিলেট সিটি করপোরেশন

Mayor-Arifসুরমা টাইমস ডেস্কঃ মেয়রের একটি ভুল সিদ্ধান্তে জটিল পরিস্থিতির দুয়ারে দাঁড়িয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (এসসিসি)। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাম্প্রতিক চীন সফরের সময় ভারপ্রাপ্ত মেয়র প্রশ্নে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা বহাল রেখেছেন চেম্বার জজ আদালতও। শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে।
আগামী ১৭ই নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে। আগের নির্দেশনা যদি বহাল রাখেন হাইকোর্ট তবে গঠনতান্ত্রিক জটিলতায় পড়বে এসসিসি। অবৈধ হয়ে পড়বে মেয়রের অনুপস্থিতকালীন সময়ের সকল কর্মকাণ্ড।
ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়ে জটিল এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলেন খোদ মেয়রই। চীনের উশি সিটির আমন্ত্রণে গত ১৯শে অক্টোবর তিনি দেশ ছেড়ে যান। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ২১ ধারা অনুসারে তার অবর্তমানে মেয়র প্যানেলের প্রথম সদস্য রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার কথা থাকলেও মেয়র আরিফ বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখেন।
পরে জানা যায়, প্যানেলের দ্বিতীয় সদস্য এডভোকেট সালেহ আহমদকে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন তিনি। ২০শে অক্টোবর থেকেই মেয়রের চেয়ারে বসে অফিস করতে থাকেন সালেহ আহমদ। ওই দিনই বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন কয়েস লোদী। পরদিন শুনানি শেষে আদালত কয়েস লোদীর কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। তবে তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই এ নির্দেশের স্থগিতাদেশ চান সালেহ আহমদ।
নিজেকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র উল্লেখ করে ২৬শে অক্টোবর এ লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালতে সিভিল মিসিলিনিয়াস পিটিশন (নং : ১১৪৬/২০১৪) দায়ের করেন তিনি। পরদিন অনুষ্ঠিত হয় এ পিটিশনের শুনানি। আদালত ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে গ্রাহ্য না করে মেয়রকে পিটিশন দায়েরের নির্দেশ দিয়ে এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখেন বিষয়টি। ইতিমধ্যে মেয়র আরিফও দেশে ফিরে আসেন।
চীন সফর শেষে ২৬শে অক্টোবরই তিনি দেশে পা রাখেন। ৬ই নভেম্বর হাইকোর্টে ওকালতনামা জমা দেন মেয়র আরিফ। তিন দফা পেছানোর পর বুধবার সে আবেদনের শুনানি হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশই বহাল রাখেন চেম্বার জজ আদালত। তবে আদালত আপিল আবেদন গ্রহণ করে তা শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ইইউ শদীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘উচ্চ আদালত যদি আগের নির্দেশনাই বহাল রাখেন তবে পদ্ধতিগত জটিলতা দেখা দেবে। হাইকোর্টের নির্দেশের পর সালেহ আহমদ চৌধুরী যে ক’দিন দায়িত্ব পালন করেছেন তার বৈধতা-অবৈধতার প্রশ্নটি সামনে চলে আসবে। আর সেক্ষেত্রে তখনকার সকল কর্মকাণ্ডের বৈধতাও প্রশ্নের মুখে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করব বৈধতা প্রশ্নেও আদালত একটি মতামত প্রদান করে জটিল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ দেখাবেন।’