আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হল হযরত শাহজালাল (রহ.)’র ওরস
ওরস শেষ, ভীড় জমেছে অন্য আউলিয়াদের মাজারে
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ ওলীকূল শিরোমণি, উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইসলাম ধর্ম প্রচারক হযরত শাহজালাল (রহ.)’র পবিত্র ওরস মোবারক সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার সকালে গিলাপ ছড়ানোর মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী ৬৯৫তম ওরস মোবারকের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। মঙ্গলবার সকালে শিরণি বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ওরস।
তবে গত রবিবার থেকেই ভক্ত-আশেকানরা ওরসকে কেন্দ্র করে ভীড় জমাতে শুরু করেন। সোমবার রাতেই মাজার প্রাঙ্গন আশপাশের এলাকা মানুষে মানুষে হয়ে যায় পরিপূর্ণ।
জানা যায়, ওরসকে কেন্দ্র করে মানুষের চাপ সামলাতে সোমবার সকাল থেকেই যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয় দরগাহর প্রধান ফটকসহ চারটি প্রবেশ পথে। বসানো হয় পুলিশ চেকপোস্ট। দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে আগত মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাজার ও আশপাশের এলাকায় লাগানো হয় ২০টি সিসিটিভি ক্যামেরা। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত রাখা হয় সাড়ে ৭শ পুলিশ সদস্যকে। তন্মধ্যে দেড়শ পুলিশ সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করে। এছাড়া বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তৎপর ছিলেন ওরসকে কেন্দ্র করে।
তাছাড়া মাজার প্রাঙ্গনে বসানো হয় দুটি মেডিকেল ক্যাম্প। পাশাপাশি দমকল বাহিনী ও বিদ্যুৎ বিভাগের দুটি টিমও সার্বক্ষণিকভাবে দায়িত্ব পালন করে।
এদিকে সোমবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে গিলাপ ছড়ানোর মাধ্যমে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী ওরস। সকাল ১১টায় প্রধানমন্তী শেখ হাসিনার পক্ষে মাজারে গিলাপ প্রদান করেন সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সকালে গিলাপ প্রদান করেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে গিলাপ ছড়ানো।
এরপর রাতভর জিকির-আজগারে মুখরিত ছিল মাজার প্রাঙ্গন। মঙ্গলবার ভোর রাতে আখেরী মোনাজাতের পর শিরণি বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ওরস।
এদিকে সিলেটে আগত হাজার হাজার মানুষ এবার ভীড় করছেন শাহজালালের সাথে আসা অন্য আউলিয়াদের মাজারে। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও ঢুঁ মারছেন। জাফলং, মাধবকুন্ড, শ্রীপুর, বিছনাকান্দি, পাংথুমাই, লোভাছড়া প্রভৃতি পর্যটন স্পটগুলোতে ভীড় লেগেছে তাদের। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিলেটে আগত হাজার হাজার মানুষ এবার ভীড় করছেন শাহজালালের সাথে আসা অন্য পীর-আউলিয়াদের মাজারে। হযরত শাহ পরান (রহ.), হযরত বুরহান উদ্দিন (রহ.), রকিব শাহ (রহ.), চাষনী পীর (রহ.), মধু শহীদ (রহ.), গরম দেওয়ান (রহ.), নাসির উদ্দিন সিপাহশালা (রহ.), জিন্দা পীর (রহ.) প্রমুখের মাজারে মানুষের ভীড় বেড়েছে। বিশেষ করে হযরত শাহ পরান (রহ.)-এর মাজার শরীফে উপচে পড়া ভীড়ের খবর জানা গেছে।