নবেল-পাবেলের নিশিবালা বাণিজ্য
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সাংবাদিকদের ঘায়েল করতে প্রতিপক্ষ সাধারণত দুই ধরনের মিথ্যা মামলা দিয়ে থাকে। হয় ধর্ষণ-নারী নির্যাতন আর না হয় চাঁদাবাজি। অতি সম্প্রতি সিলেটে এর নজির খুব বেশি আকারে পরিলক্ষিত হচ্ছে । সম্প্রতি সিনিয়র সাংবাদিক চৌধুরী মুমতাজ, সাংবাদিক কাইয়ুম উল্লাস ও গোলাম মর্তুজা বাচ্চু এই ধরনের হয়রানিমূলক মামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, এক শ্রেণীর ধান্ধাবাজ সংবাদকর্মীই এই সকল নিশিবালা, মামলাবাজ জাহানারা ও মনি বেগমদের গড ফাদার বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জাহানারা একজন নিশিবালা। একে নিয়ে এসএমপি’র শাহপরাণ থানাধীন বালুচর আল ইসলাহ আনা মিয়ার কলোনীতে চলছে রমরমা বাণিজ্য। আর এই বাণিজ্যের নেপথ্যে অন্যতম শেল্টারদাতা জাতীয় একটি দৈনিক থেকে বহিষ্কৃত আলোকচিত্রী নাজমুল কবির পাবেল গং। এই ব্যাবসার টাকার ভাগ পায় চাঁদাবাজ সাংবাদিক সিলেট ভিউ ২৪ ডট কমের সম্পাদক শাহ দিদার আলম নবেল। জাহানারা-নবেল-পাবেল সহ বেশ কিছু পতিতা ও দালালদের নিয়ে নগরীর বালুচরের ওই কলোনীতে গড়ে ওঠেছে এক ফাঁদ। জাহানারার আমন্ত্রণে ওই ফাঁদে পা দিয়ে তার বাসায় যে সব খদ্দের আসে তাদের ছবি তুলে সিলেট ভিউ ২৪ ডট কমের আলোকচিত্রী নাজমুল কবির পাবেল গং হাতিয়ে নিচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকা। জাহানারার লেনদেন লিখিতভাবে সম্পাদন হয় জিন্দাবাজারস্থ সিলেট ভিউ ২৪ ডট কম অফিসে। সুরমা টাইমস’র কাছে এসেছে এমন তথ্য, ছবি ও প্রমাণ।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, পতিতাবৃত্তির অপরাধে ইতোমধ্যে জাহানারাকে দু’বার গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে ৭৭ ধারায় দুটি মামলা (নং ২২৪/১৩ ও ১৩৪/১৪)। সে পূর্বে সুরমা মার্কেট এলাকা ও বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে পতিতাবৃত্তি করতো। আলোকচিত্রী পাবেল গং এর সাথে সখ্য গড়ে ওঠার পর বদলে যায় জাহানারার পতিতা ব্যাবসার ধরণ। পাবেল-নবেল এর মদদে নগরীর বালুচরে জাহানারার বাসায় গড়ে ওঠে অভিনব প্রতারণার ফাঁদ। বিভিন্ন জেলা শহর থেকে তরুণীদের এনে জড়ো করা হয় ওই বাসায়। জাহানারা তরুণীদের নিয়ে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে খদ্দেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। খদ্দেরকে দেয়া হয় মুঠোফোন নাম্বার, চলে আলাপ। বাসায় যাওয়ার আমন্ত্রণ পায় খদ্দের। ফাঁদে পা দিয়ে যখন খদ্দের জাহানারার বাসায় যায়, তখনই গোপন খবর চলে যায় আলোকচিত্রী পাবেলের কাছে। পাবেল ক্যামেরা নিয়ে দ্রুত চলে যায় ওই বাসায়। কখনও সাথে থাকে কিছু অসাধু পুলিশ। আটক করা হয় খদ্দেরকে। পতিতার সাথে ছবি তুলা হয় ওখানেই। খদ্দেরের সর্বস্ব হস্তগত করে নেয় ওই চক্র। পরক্ষণেই শুরু হয় প্রতারণার দ্বিতীয় কৌশল। খদ্দেরকে দিয়ে তার স্বজনদের কাছে খবর পাঠানো হয়। ইজ্জতের ভয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে আসে মোটা অংকের টাকা। এই টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেয় নবেল-পাবেল-জাহানারা চক্র। শুধু তাই-ই নয়, ওই চক্রটি জাহানারাকে দিয়ে মামলা ও ঝামেলা বাঁধিয়ে আপোষনামার বাণিজ্য করে থাকে বলে অভিযোগ আছে। সিলেট ভিউ ২৪ ডট কম অফিসে দিপু নামের এক যুবকের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে (নং কগ-০৮৭২৩৫৭ , কগ-৪১৫৬৪৪২ ও কগ-৪১৫৬৪৪৩) আপোষনামা সম্পাদন করে দশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। ওই স্ট্যাম্পে সিলেট ভিউ ২৪ ডট কমের আলোকচিত্রী নাজমুল কবির পাবেল ও নুরুল ইসলামের স্বাক্ষর ও মোবাইল নম্বর আছে। এই চক্রটি সিলেট ভিউ ২৪ ডট কম’র অফিসকে একটি আপোষ বাণিজ্যের সালিশকেন্দ্রে পরিণত করেছে। সিলেট ভিউ ২৪ ডট কম নামক নিউজ পোর্টালটির মাসিক খরচের অন্যতম উৎস এই ধান্ধা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী জাকির হোসেন দিপু বলেন, আমি বাংলাদেশ প্রতিদিন অফিসে বসে ওদেরকে দশ হাজার টাকা দিয়েও নবেল-পাবেলের দংশন থেকে রেহাই পাইনি। ওই চক্র আমাকে একটি মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলায় জড়িয়েছে। অবশ্য মাননীয় আদালত আমাকে ওই মামলায় জামিন প্রদান করেছেন।
প্রিয় পাঠক আগামি সংখ্যায় থাকছে অর্ধশত স্পট থেকে নবেল-পাবেলের চাঁদাবাজির অনুসন্ধানি সচিত্র প্রতিবেদন।