নবীগঞ্জে শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা : আনন্দ স্কুলের টাকা আত্মসাত

মেরামতের বরাদ্ধ ১২ লক্ষ টাকা এবং ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের
২২ লক্ষ টাকা আত্মসাত নিয়ে সর্বত্র তোলপাড়

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ নবীগঞ্জে ক্ষুদ্র মেরামতের আওতায় ৪০টি বিদ্যালয়ের বরাদ্ধ ১২ লক্ষ টাকা এবং ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের নতুন ৫০ টি আনন্দ স্কুলের বরাদ্ধকৃত ১৭ লক্ষ টাকা এবং পুরাতন ৫৬ টি আনন্দ স্কুল প্রতি ১০ হাজার টাকা করে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা আত্মসাত নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করে ভুক্ত ভোগীরা কোন সুফল পাচ্ছেন না। এছাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসে চলছে বদলী তদবির ও প্রশ্ন পত্র বানিজ্য একটি সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে শিক্ষা অফিসে ওপেন দূর্নীতি করে যাচ্ছেন শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাক। তার দুর্নীতি অনিয়মের ফলে শিক্ষা সচেতন মানুষের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষা অফিসারের খুঁটির জোর কোথায়? গদ্য যোগদানকৃত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের দূর্নীতির কারনে নবীগঞ্জের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।
সুত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক একটি চক্রের মাধ্যমে নবীগঞ্জে ক্ষুদ্র মেরামতের আওতায় ৪০টি বিদ্যালয়ের বরাদ্ধ ১২ লক্ষ টাকা এবং ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের নতুন ৫০ টি আনন্দ স্কুলের বরাদ্ধকৃত ১৭ লক্ষ টাকা এবং পুরাতন ৫৬ টি আনন্দ স্কুল প্রতি ১০ হাজার টাকা করে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষা বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী ক্ষুদ্র মেরামতের আওতায় ৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জুন ২০১৪ইং তারিখ শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যৌথ একাউন্টে ১২ লক্ষ টাকা জমা থাকার কথা। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা যৌথ একাউন্ট না খুলে তাঁর নিজ একাউন্টে ঐ টাকা জমা রেখে উপজেলা প্রকৌশলীর প্রত্যায়ন পত্র বাধ্যতামুলক থাকলেও প্রত্যায়ন পত্র ছাড়াই কয়েকটি স্কুলে নিজের একক ক্ষমতা বলে চেক প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে। ক্ষুদ্র মেরামতের আওতায় ১২ লক্ষ টাকার ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ লুৎফর রহমান এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলীর সম্বনয়ে কাজ করার কথা থাকলে তিনি কি করেছেন তা জানি না । উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। অপরদিকে জানা গেছে আনন্দস্কুল এর রিচিং আউট অব-স্কুল চিল্ড্রেন -রক্স প্রকল্প-২ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ৬ দিনের প্রশিক্ষনকালে নিম্ন মানের খাবার প্রদান করে টাকা আত্মসাত করে। এছাড়া আনন্দ স্কুলের প্রকল্প পরিচালকের সম্বনয় সভায় শিক্ষকদের জনপ্রতি ১৭০ টাকার খাবার প্রদান না করে টাকা আত্মসাত, আনন্দস্কুল এর রিচিং আউট অব-স্কুল চিল্ড্রেন -রক্স প্রকল্প-২ শিক্ষিকাবৃন্দের নিকট থেকে ১৭০ টাকা দামের শাড়ি প্রদান করে ৫০০ টাকা আদায় করেন। নিম্ন মানের শাড়ি প্রদান করাতে অনেক শিক্ষিকা এখনো শাড়ি গ্রহন করেন নাই। উপজেলার ঝড়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আনন্দস্কুল এর রিচিং আউট অব-স্কুল চিল্ড্রেন -রক্স প্রকল্প-২ এর আওতায় ৫৬ টি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে থেকে ১০০ টাকা করে ভাতার টাকা কেটে রাখেন । পোষাক ও ব্যাগের টাকা , উপকরনের টাকা, ছাত্র-ছাত্রীদের ট্রিফিনের টাকা, ঘর মেরামতের টাকা ও পরীক্ষার ফির টাকাও ঐ সিন্ডিকেট চক্রের লোকজন আত্মসাত করেছে। টিসি প্রত্যক শিক্ষক শিক্ষিকার কাছ থেকে স্কুল প্রতি ১০ হাজার থেকে ৮হাজার টাকা করে চেক আদায় করেন। এ ছাড়া ও নতুন ৫০ টি আনন্দ স্কুলের বরাদ্ধকৃত ১৭ লক্ষ টাকা ও তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাক বলেন আমি বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেছি তাদের নির্দেশনামতে এসব টাকা ভাগ বন্টন করবো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এসব বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি কিছু করার নেই তার কাছে অভিযোগ করে কোন লাভ নেই।
নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জে ভুয়া ডাক্তারের খপ্পরে পড়ে সাধারন মানুষ প্রতারিত
নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি ঃ নবীগঞ্জ উপজেলার কাজীগঞ্জ বাজারে ভুয়া ডিগ্রিধারী চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় প্রতারিত হচ্ছেন এলাকার রোগী ও সাধারন মানুষ। এসব ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষে বার বার অভিযান পরিচালনা করা হলেও এখন ও তারা বহাল তরিয়তেই রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,নবীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বড় ভাকৈর পূর্ব ইউনিয়নের কাজীগঞ্জ বাজারে এলাকার প্রভাবশালী বাগাউড়া গ্রামের হিমেল মিয়ার আল রাইয়ান ফার্মেসীতে বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে ভুয়া এমবিবি এস নাম ব্যবহার করে ডাঃ তারেক গাজী চিকিৎসা করে আসছেন। অপর দিকে উক্ত বাজারের আছকির মার্কেটে শাহজালাল মেডিকেল সার্ভিসেস ক্লিনিকে ভুয়া ডি,এম এফ নাম ব্যবহার করে ডাঃ নজরুল ইসলাম চিকিৎসার নামে প্রতারনা করে আসছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজেষ্ট্রেট মোহাম্মদ মাহমুদুল হক অভিযুক্ত তারেক গাজীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। বার বার অভিযান পরিচালনা করেও তাকে আটক করতে না পেরে নবীগঞ্জ সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে ভুয়া চিকিৎসক তারেক গাজী নির্বাহী ম্যাজেষ্ট্রেট মোহাম্মদ মাহমুদুল হক এর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তার কোন এমবিবি এস সার্টিফিকেট নেই বলে ভুল স্বীকার করলে আদালত তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে নামের আগে ডাক্তার না লিখার নির্দেশ দেন। এদিকে ভুয়া চিকিৎসক তারেক গাজীকে জরিমানা করার পর আল রাইয়ান ফার্মেসীর মালিক হিমেল চাকুরীজীবিসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িত এলাকার কিছু সংখ্যক লোকের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তাদের বিরুদ্ধে সে বিভিন্ন অপপ্রচারসহ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে সে।
সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান,হিমেল তার মালিকানাধীন আল রাইয়ান ফার্মেসীতে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রিসহ ফ্রীজ ছাড়াই টিটেনাস ইনজেকশনসহ বিভিন্ন ভ্যাক্সিন বিক্রি করছেন। এতে করে রোগী সাধারন তার ন্যার্য্য চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাছাড়া উক্ত ফার্মেসীর ড্রাগ লাইসেন্স ও তার ফার্মাসিষ্ট সনদপত্র আছে কি-না সে নিয়ে ও প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে ডিএমএফ নামধারী ভুয়া চিকিৎসক নজরুল ইসলাম রোগীদের কাছে সে অনেক বড় ডাক্তার হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকে। সে নিজেই সংশি¬ষ্ট ক্লিনিকে আলট্রাসানোগ্রাফি করে রোগীদের সাথে প্রতারনা করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই এসব ভুয়া চিকিৎসকদের পাশাপাশি ফার্মেসীর মালিকদের ও আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য এলাকাবাসী বি এমডিসি ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।