কতৃপক্ষের উদাসীনতায় প্রান গেল রাশেদের : ধামাচাপার চেষ্টায় মধুবন কোম্পানীর দৌড়ঝাপ
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ কতৃপক্ষের উদাসীনতায় প্রান গেল শহরতলীর খাদিম বিসিক শিল্পনগরীর মধুবন কোম্পানীর এক সাধারন শ্রমিকের। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শ্রমিকের নাম মোঃ রাশেদ (২০)। সে ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানার আসলামপুর গ্রামের মোঃ হারুন মালের পূত্র। পুলিশ সূত্রে জানা যায় নিহত রাশেদ গত দুই বছর যাবত খাদিমনগরস্ত বিসিক শিল্পনগরীতে মধুবন কোম্পানীর কারখানায় সাধারন শ্রমিকের কাজ করত। জানা যায় কোম্পানীর মূল কারিগর (মেশিন টেকনিশিয়ান) ঈদের ছুটিতে থাকায় কোম্পানীর কর্মকর্তাদের চাপে পড়ে সে টেকনিশিয়ানের কাজ করতে গেলে এ দূর্ঘটনার শিকার হয়। মেশিন চালনায় অনভিজ্ঞ সাধারন শ্রমিক মোঃ রাশেদ মিকচার মেশিনে কর্মরত অবস্থায় আকস্মিকভাবে তার হাত মেশিনের মধ্যে আটকে পড়ে। এক পর্যায়ে তার শরীরের অর্ধাংশ মেশিনের মেশিনের ভিতর দুমড়ে মুচড়ে ঘটনাস্তলেই প্রান হারায় রাশেদ। এই ঘটনায় হতভম্ব কোম্পানীর উর্ধতন কর্মকর্তারা মৃত অবস্থায় তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই চান মিয়া জানান, রাত ১:৩০ ঘটিকার সময় দূর্ঘটনা ঘটলেও মধুবন কতৃপক্ষ সকাল ৮ ঘটিকায় শাহপরান থানা পুলিশকে অবগত করে। তাৎক্ষনিকভাবে শাহপরান থানার ওসি মোঃ
সাখাওয়াৎ হোসেন সহ তিনি ঘটনাস্তল পরিদর্শন করেন। ওসি সাখাওয়াৎ ফ্যাক্টরীর ভিতর পরিদর্শনকালে ফ্যাক্টরীর নোংরা ও অগোছালো অবস্থা দেখে বিস্মিত হন। তাৎক্ষনিক ভাবে তিনি তার সংগীয় এসআই চান মিয়াকে নিহতের ভিসেরা রিপোর্ট প্রস্তুত ও যথাযত ব্যাবস্থা গ্রহন করার নির্দেশ দেন। এদিকে এসআই চান মিয়া নিহতের লাশ পোস্ট মর্টেমের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। ঘটনার অধিকতর তদন্তের খাতিরে তিনি কোম্পানীর ম্যানেজার (সার্বিক) বসির আহমেদ ও রাত্রিকালীন ম্যানেজার সরোয়ার আহমেদকে আটক করেন। এসআই চান মিয়া ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি কোম্পানীর কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিতে সংঘটিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হলে তিনি শাহপরান থানায় হত্যা মামলা
দায়েরের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরের দিকে লাশকে দাফনের কথা বলে ম্যানেজার বশির আহমেদ পালিয়ে যায়। এদিকে কোম্পানীর গ্রুপ রিডার মাহবুব ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মঈন উদ্দীন ঘটনাটিক অধিকাংশ আলামত বিনষ্ট করে ফেলে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। অপরদিকে আড়াল থেকে বিভিন্ন মহল থেকে তদবির শুরু করে ম্যানেজার বশির আহমেদ। শাহপরান থানার ওসি মোঃ সাখাওয়াৎ হোসেন সুরমা টাইমসকে জানান, আমি মধুবন কোম্পানীর একজন নিয়মিত ক্রেতা ছিলাম। কোম্পানীর ভিতর পরিদর্শন করে আমি হতবাক। এত নোংরা পরিবেশে মধুবনের খাদ্যদ্রব্য তৈরী হয় তা নিজে না দেখলে বিশ্বাস করতামনা। কাজের পরিবেশও অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ ও দূর্ঘটনাপ্রবন। এটি প্রকৃতপক্ষে একটি অবহেলাজনিত হত্যাকান্ড। তদন্তকারী কর্মকর্তার বিস্তারিত প্রতিবেদন সাপেক্ষে উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রকৃত দোষীদের আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। রাত ১২ টায় এ ব্যাপারে মধুবনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি আটক ম্যানেজার সরোয়ার আহমেদকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় ব্যাস্ত আছেন। পরে কথা বলবেন বলে এক পর্যায়ে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন।