ঈদকে সামনে রেখে যাদুকাটা নদীতে বিজিবি ও পুলিশের চাঁদাবাজিঁ

Police Bribaryকামাল হোসেন,তাহিরপুরঃ ঈদকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় যাদুকাটা নদীতে বিজিবি ও পুলিশের নামে বেপরোয়া চাঁদা বাঁজির অভিযোগ উঠেছে। জানাযায়, লাউড়েরগর সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবির নিজেস্ব ল্যাইন ম্যান হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত সাহিদাবাদ গ্রামের আলী আকবরের ছেলে শহিদ মিয়া(৩৩), লেচু মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া(৩২) ও লাউড়েরগড় গ্রামের গফুর মিযার ছেলে আনছারুল(৩৬)’ এর মাধ্যমে পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি ফুট পাথরে জন্য ২ টাকা ও প্রতি বারকী নৌকা থেকে পাথর উত্তোলনের জন্য ২০০ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছে লাউড়েরগড় বিজিবি। এবং বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের দালাল হিসেবে নিয়োজিত ঘাগটিয়া গ্রামের দুই জন দালালের মাধ্যমে পাথর উত্তোলনের জন্য প্রতি শেইভ নৌকা থেকে প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছে বাদাঘাট ক্যাম্পের পুলিশ। এভাবে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করে বিজিবি ও পুলিশ ভাগ বাটোয়ারা করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এতে করে বালু পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা অসহায় হয়ে পড়েছে। জানাযায়, বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বালি-পাথর মহাল ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভারপুর সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ফাজিলপুর কোয়ারী কেন্দ্রিক বাদাঘাট ইউনিয়নের লাউড়েরগর সীমান্তের ওপাড়ে ভারতের খাসিয়া মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি নদী যাদুকাটার র্দীঘ ২৩ কিলোমিটার এলাকার ফাজিলপুর থেকে লাউড়েরগড় অংশের প্রায় ৮ কিলোমিটার লাউড়েরগড়, ছড়ারপাড়, ডালারপাড়, ঘাগটিয়ার বড়টেক বিন্নাকুলি, গরকাটি, গাঘড়া গ্রাম এলাকায় নদীর তীরকেটে বালু-পাথর উত্তোলন প্রশাসনিকভাবে দন্ডনিয় অপরাধ ও নিষেধ বাঁধা থাকলেও পুলিশকে ম্যানেজ করেই চলছে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে যাদুকাটা নদীর তীরকেটে বালু উত্তোলন ও নদীর তীর সংলগ্ন শেইভ মেশিন দিয়ে(ইঞ্জিন চালিত নৌকা) প্রতিদিন কোয়ারী করে নদীর পাড় ভেঙ্গে পাথর উত্তোলন করছে এলাকার প্রভাবশালীরা ও নদী পাড়ের জমির মালিকরা । আর এর জন্য বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের নামে প্রতি শেইভ নৌকা থেকে ৩’শত টাকা ও পাড়কেটে বালু উত্তোলনের জন্য প্রতি বলগেট নৌকা থেকে ২ হাজার টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করছে ঘাগটিয়া গ্রামের দুই পুলিশের দালাল। অপর দিকে যাদুকাটা নদীতে নৌকা নিয়ে পাথর ক্রয়ের জন্য পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সিংঙ্গেল, বুতু ও বল্ডার পাথরবাহি নৌকা থেকে প্রতি ফুট পাথরে ২ টাকা এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ন্যা ম্যান্স ল্যান্ড এলাকার ১৫০ গঁেজর বাহিরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যাদুকাটা নদীতে বালু চড় থেকে পাথর আনার জন্য প্রতি বারকী নৌকা থেকে ২০০ টাকা করে লাউড়েরগড় বিজিবির ক্যাম্পের নামে চাঁদা নিচ্ছে বিজিবির ল্যাইন ম্যান শহিদ, সেলিম ও আনছারুল । আর এসময় কোন নৌ শ্রমিক, পাথর ব্যবসায়ীরা আর বারকী শ্রমিকরা চাঁদার টাকা দিতে অসিকার করলেই চলে নৌকা ধরার নামে পুলিশ ও বিজিবির হয়রানী মূলক অভিযান। আর এ অভিযানে পুলিশ বা বিজিবির সদস্যরা শেইভ নৌকা, বারকী নৌকা বা পাথরের নৌকা ধরতে পারলেই সিজার লিষ্ট ও ভ্রাম্যমান আদলতের ভয় দেখিয়ে চলে চাঁদা টাকা বাড়ানো ভয়বিতি।এসময় ৩০০ টকা, ২০০টাকা ও ২ হাজার টাকা চাঁদা বেড়ে তখন এর পরিমান হয়ে যায় ৫ হাজার, ১০ হাজার ও ১৫ হাজার টাকায়। এব্যপারে নাম প্রকাশ না করো শর্তে বেশ কয়েকজন শেইভ নৌকার মালিক ও শ্রমিক জানায়, ভাই আগের মত নদী থাইকা হাতে পাথর তোলন যায়না। এর লাইগা অন্নে(এখন) পাথর তুলতে অইলে (হলে) শেইভ মেশিন দিয়া পাথর তুলতে অয়(হয়)। তাই সারাদিন তেল (ডিজেল) খরছ করে পানির নিঁচ থাইকা শেইভ চলাইয়া পাথর তুলে বিক্রি করে কোন রকমে বউ পুলাপান লইয়া সংসার চালাই। এরলাইগা বাদাঘাট ক্যাম্পের পুলিশরে একটা শেইভের নৌকায় ৩০০ টাকা করে দেয়ন লাগে। পুলিশরে টাকা না দিলে কাম(পাথর উত্তোলন) করার লাইগা দে না। নৌকা ধইরা লইয়া যাগা। ভাই আমরা গরীব মানুষ। এই কাথা জান্তে পারলে পুলিশ আমারে ধইরা নৌকা সহ চালান দিব। তার আরও জানায়,প্রতিদিন যাদুকাটা নদীতে প্রায় শতাধিক শেইভ নৌকা দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হয়। সাহিদাবাদ গ্রামের পাথর ব্যবসায়ী উজ্জল মিয়া সহ বেশ কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী জানায়, ভাই সারা জীবন পাথরের ব্যবসা করলাম কেউরেই টেকা (টাকা) দিছিনা। আর অন্নে (এখন) পাথর কিনলেই প্রতি ফুট পাথরের লাইগা বিডিআররে (বিজিবি) ২ টাকা কইরা চাঁদা দেয়ন লাগে। অন্নে ব্যবসা করাই মুশকিল অইছে। যারার আশাই আমরা নিরভয়ে গাঙ্গ(নদীতে) ব্যবসা করি হেরারেই অন্নে চাঁদা দিতে হয়। আমরা এখন কই যাইমু ভাই। তারা আরও বলেন, যাদুকাটা নদীতে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার ফুট পাথর ক্রয়করে ষ্টিলের নৌকা দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠায় ব্যবসায়ীরা। আর এর জন্য প্রতি ফুট পাথরে ২ টাকা করে প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাইন ম্যান শহিদ ও সেলিম ও আনছারুলের মাধ্যমে নিচ্ছে লাউড়েরগড় বিজিবি।পাথর ব্যবসায়ী উজ্জল এই প্রতিবিদককে বরেল, ভাই মঙ্গলবারে আমি একটি ৫ হাজার ফুটি নৌকায় বিডিআরের ল্যাইন ম্যান শহিদ, সেলিম ও আনছারুলকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হইছে। কয়েকজন বারকী শ্রমিক জানায়, এমপি সাব আর বিডিআরের সিও স্যার জিরো লাইন থেকে দেড়শ গজের বাহিরে বাংলাদেশের বিতরে পাথর তোলতাম পারমু কাইয়া গেলেও হেরারে টেকা দিতে অয়।আর টেকা না দিলে ক্যাম্পের উজানেই যাইবার লাইগা দেয় না। ভাই সাদা নিশানের বাইরে থাইকা পাথÍর আনলেও একটা বারকী নৌকা থাইক্কা বিডিআরের লাইগা ২০০ টেকা(টাকা) কাইরা নেয় ল্যাইন ম্যান শহিদ আর সেলিম, আনছারুল। জানাযায়,যাদুকাটা নদী দিয়ে ভারত সীমান্তে দেড়শ গজের বাহির থেকে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক বারকী নৌকায় পাথর উত্তোলন করে থাকে। যাদুকাটা নদীর পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলী আশাব বলেন, এখন আর ব্যবসা করন যাইতনা,বৈধভাবে ব্যবসা করলেও বিডিআররে চাঁদা দেয়ন লাগে। এই চাঁদা বিষয় আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরসহ সিওর কাছেও দরখাস্ত করছি। কিন্তু প্রতিকার পাইছিনা। আপনে লেইখকা কিতা করবেন। এব্যারে বিজিবির লাইন ম্যান শহিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে সে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আসিকার করে বলে, এইটা মিথ্যা। আমি কোন টাকা টুকা নেইনা। আর টাকা নিলেই আপনা কি করবেন বলে মোবাইলের লাইন কেটে দেয়। এব্যপারে লাউড়েরগড় বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার নুরুল ইসলামের সঙ্গে ০১৭৬৯৬১৩১৩০ নাম্বারে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি মোবাইলের লাইন কেটে দেন। এব্যপারে সুনামগঞ্জ-৮ র্বডাগাড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল গোলাম মহিউদ্দিন খন্দকার বলেন, আমাদের কোন ল্যাইন ম্যান নাই, এদের সাথে বিজিবির কোন সর্ম্পক নাই। এরা এক সময়ে আমাদের ক্যাম্পে ছিল, এ গুলো আমি বাতিল করে দিয়েছে। বিজিবি পাথরের জন্য টাকা নেবে কেন। তার বৈধভাবে পাথর উত্তোলন করবে এবং ব্যবসা করবে এখানে বিজিবির কোন ধরা বাঁধা নাই। যারা টাকা নিচ্ছে তাদেকে ধঁরে আমার কছে নিয়ে আসুক আমি ব্যবস্থা নেব।এব্যপারে বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ এস আই শাহ আলমের ব্যক্তিগত মোবাইলের ০১৭১৬৮৮৫২১৫ নাম্বারে কল করলে নিতি বিজি আছেন, এবং ১ ঘন্টা পরে মোবাইল করার কথা বলে লাইন কেটে দেন।