বিশ্বনাথের খাজাঞ্চী ইউনিয়ন ভূমি অফিস : ঘুষ ও দূর্নীতির আখড়া
কর্মকর্তাদের কাছে জিম্মি এলাকাবাসী : রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
তজম্মুল আলী রাজু, বিশ্বনাথ: বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন (প্রয়াগমহল) ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে এলাকাবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকার নিরিহ লোকজনের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। প্রতিনিয়ত তাদের করা হচ্ছে হয়রানী। ভূমি অফিসে খাজনা দিতে গিয়ে হয়রানী হচ্ছেন এলাকার জমির মালিকরা।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন ভূমি অফিস এখন দূর্নীতি আখড়ায় পরিনত হয়েছে। সহজ-সরল মানুষ স্ব-ইচ্ছায় তাদের জমির খাজনা দিতে ভূমি অফিসে যান। কিন্তু খাজনার টাকার চেয়ে দ্বিগুণ টাকা দিতে হয় ভূমি অফিসে দায়িত্বে থাকা মতিউর রহমান ও আপ্তাবউদ্দিন। টাকা দিলে কাজ হয়, না দিলে কাজ হয়না। আবার টাকা দেওয়ার পরও অনেক জমির মালিককে বিভিন্ন ধরনের হয়রানী করা হয়। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকার লোকজন খাজনা দিতে ভূমি অফিসে গেলে অফিসে থাকা কর্মকর্তারা জমির মালিকদের তাদের বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলে হয়রানী করা করেন। ফলে অনেক জমির মালিক তাদের জায়গায় বেচা-বিক্রি করতে বিভিন্ন সম্যাসায় পড়তে হচ্ছে। এতে সরকার বিপুল সংখ্যক রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিলম্বে ওই অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য এলাকাবাসী সংশি¬ষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান।
এব্যাপারে খাজাঞ্চী ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের ইন্তাজ আলী বলেন, সাত শতক জায়গার খাজনা হবে আনুমানিক প্রায় এক হাজার টাকা। কিন্তু ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আপ্তাবউদ্দিন তিন হাজার টাকা দাবি করেন। তিন হাজার টাকা না দেওয়ায় জমির খাজনা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।
লালটেক গ্রামের আবদুস সোবহান বলেন, ২১ শতক জায়গার খাজনা সরকারীভাবে আনুমানিক হবে প্রায় এক হাজার টাকা। চার হাজার টাকা দিয়ে ওই জমির খাজনা দিতে হয়েছে। এভাবে এলাকার নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।
খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজামউদ্দিন সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি লোক মূখে শুনেছি। তিনি বলেন, এসব হলে মানুষ হয়রানি হবে প্রতিদিন। সরকার হারাবে রাজস্ব।
ভূমি অফিসের সহকারী তশিলদার কর্মকর্তা আপ্তাবউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী খাজনা আদায় করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনামনি চাকমা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী বলেন, এলাকার লোকজন লিখিতভাবে অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।