ভ্যান চালক থেকে কোটিপতি : ৪ সহযোগীসহ ‘পলিথিন আলী’ আটক
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ একসময় ভ্যান চালাতেন আলী সরকার। অবৈধ পলিথিন ও ভেজাল পণ্যের ব্যবসা করে গত কয়েক বছরে বনে যান কোটিপতি। তিনি এখন কোটি টাকার মালিক। সিলেট নগরীর আলোচিত এই পলিথিন ব্যবসায়ী আলীকে চার সহযোগীসহ আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ভেজাল জর্দা ফ্যাক্টরি পরিচালনার অভিযোগে নগরীর লালদিঘীরপার হকার মার্কেট থেকে তাকে আটক করে। সামান্য ভ্যানচালক থেকে হঠাৎ কোটিপতি বনে যাওয়া আলী সরকার সিলেটে পলিথিন আলী হিসাবে পরিচিত। ঢাকা থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশ মিডিয়া নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রধান সম্পাদকও তিনি। পত্রিকার পরিচয়ে বিভিন্ন পলিথিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে আগে গ্রেফতার হলেও বেরিয়ে বিভিন্ন ভেজাল ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে আলী।
জানা গেছে, রমজান শুরুর পর থেকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা নগরীর বিভিন্ন ভেজাল ও অবৈধ ব্যবসায়ীর সন্ধান শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে ব্যবসায়ীরা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে সিলেটে ভেজাল জর্দা বানানো হচ্ছে বলে অভিযোগ আসে। হুবহু মমো জদা হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও কিনে নেন। কিন্তু ক্রেতারা ওই জর্দা নকল বলে ব্যবসায়ীদের কাছে অভিযোগ দিতে থাকেন। কয়েক দিন ধরে সিলেটের গোয়েন্দা পুলিশ নকল কারবারীকে গ্রেফতার করার জন্য সোর্স নিয়োগ করে। গতকাল দক্ষিণ সুরমা থানার লালাবাজার এলাকায় নকল মমো জর্দার ফ্যাক্টরীর সন্ধান পায় পুলিশ। ফকিরের গাঁও হাজি আবুল কালাম কমিউনিটি সেন্টারের একটি ঘরের ভেতর থেকে পলিথিন আলীর মালিকানাধীন বিপুল পরিমাণ নকল মমো জর্দা ও একটি প্যাকিং মেশিন জব্ধ করে। সেখান থেকে কর্মচারী মোশারফ, আজাদ, শাহ আলম ও তোফায়েলকে আটক করা হয়। পরে মুলহুতা সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে আলী সরকারকে নগরীর লালদিঘীরপার হকার্স মার্কেট থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পুলিশ দেখে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠাও করেন।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে ট্রাকযোগে পলিথিন এনে লালাবাজারের একটি কমিউনিটি সেন্টারে রাখেন আলী। সেখান থেকে ছোট ট্রাক করে বিক্রি করেন নগরী ও এর বাইরে। শুধু পলিথিন নয়, জর্দা, আগরবাতি, মশার কয়েলসহ কয়েকটি ভেজালপণ্য নিজেই তৈরী করে বাজারজাত করেন আলী। ফলে অল্পদিনে আলী সরকার কোটিপতি বনে যান। বছর দেড়েক আগে নিজেকে সংবাদকর্মী জাহির করতে উঠেপড়ে লাগেন। আর সেজন্য অখ্যাত পত্রিকার নাম করে প্রচার শুরু করেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ মিডিয়া নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা নিজেই বের করেন। যার কোনো রেজিস্টেশন নেই। দেশের বিভিন্ন স্থানে অফিসের ঠিকানা ব্যবহার করা হলেও সবকটি মোবাইল নাম্বার সিলেট থেকেই ব্যবহার করা হয়। অবৈধ ব্যবসার টাকায় ইতোমধ্যে কয়েকটি যানবাহনের মালিকও আলী। ডিবির সহকারি পুলিশ কমিশনার জাবেদুর রহমান জানান, নগরীর লালদিঘির পাড়ের বিখ্যাত পলিথিন ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক পরিচয়দানকারী আলী সরকার সিলেট জেলায় বিভিন্ন স্থানে পলিথিন ও মমো জর্দার ফ্যাক্টরী গড়ে তুলেছেন এমন সংবাদ আমরা জানতে পারি। পরে ওই সকল ফ্যাক্টরীর সন্ধানে ডিবি পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।