ছিনতাইয়ের টাকা দিয়ে স্ত্রীর কানের দুল আর মোবাইল!
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ ফতেহপুর চা বাগানের মালিকের ছেলের কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটককৃত ছিনতাইকারী এনামুল হক সাজু ছিনতাইকৃত টাকা দিয়ে স্ত্রীর জন্য কিনেছেন কানের দুল আর মোবাইল ফোন! পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্যই জানিয়েছেন তিনি।
সাজুর তথ্যানুযায়ী মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সাজুর শ্বশুরবাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মোগলপুর গ্রামে অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বাসা থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা ছাড়াও সম্প্রতি ক্রয়কৃত একজোড়া কানের দুল ও মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে সাজু জানান, ২২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের পর ভাগবাটোয়ারায় তাকে ঠকানো হয়েছে। ভাগের টাকা হিসেবে তাকে দেওয়া হয় এক লাখ টাকা। ছিনতাই মিশনে তারা ১০ জন অংশ নেন। এদের মধ্যে আটক রুবেল আহমদ ওরফে মটর ঘটনার সময় হাতুড়ি দিয়ে গাড়ির গ্লাসে আঘাত করে গতিরোধ করেছিল।
পুলিশের কাছে সাজুর দেয়া তথ্যানুযায়ী নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সাগর আহমদ সুমন, ঝলক রানা তালুকদার ও রুবেল আহমদ মটরকে আটক করে পুলিশ। ঝলক ও মটরকে অন্য আরেকটি ছিনতাই ও মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।
সাজু পুলিশকে জানান, তিনি শ্বশুরবাড়িতে নিজেকে পাথর ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি যে একজন ছিনতাইকারী, এটা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানতেন না। কিন্তু পুলিশের কাছে দেওয়া তথ্যে বেরিয়ে আসে অজানা কাহিনী। প্রায় সময় নগরীতে তিনি ছিনতাই করে চলে যেত শ্বশুড়ালয়ে। এভাবে দিনের পর দিন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটাতে থাকেন তিনি। নগরীর চিহ্নিত ছিনতাইকারী গ্রুপের সঙ্গে তার চলাফেরা।
জানা গেছে, হিন্দু পরিবারের সন্তান সাজু। সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানার এক কর্মচারীর মেয়েকে বিয়ের সুবাদে মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেন। সেই থেকে এনামুল হক সাজু নামে পরিচিতি পান তিনি। তার বাবা অবসর প্রাপ্ত পুলিশের এসআই। তিনি অবসরে যাওয়ার পর পেনশনের টাকা দিয়ে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় বাড়ি করে তারা বসবাস করছেন।
এর আগে সোমবার দুপুরে তাকে ধরতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় অভিযান চালানো হয়। ওখানে তাকে না পেয়ে ওই দিন বিকেলে ফেঞ্চুগঞ্জ শ্বশুড় বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় সাজুকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের ব্রাক্ষণবাজার এলাকা থেকে মাসুদ ওরফে ঢাকাইয়া মাসুদকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাজু জানান, তিনি প্রায় সময়ই নগরীতে ছিনতাই মিশনে অংশ নিতেন।
সকল ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার মলিক আহসান সামি।