ইরাকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ১৫ সিলেটী
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ইরাকের সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে ১৫ সিলেটীসহ অন্তত ২০ বাংলাদেশি গৃহবন্দি হয়ে এক সপ্তাহ ধরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দিন কাটাচ্ছেন। এই ১৫ সিলেটীর সবাই হবিগঞ্জের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্র জানায়- হবিগঞ্জ সদর উপজেলার কেশবপুর গ্রামের মাওলানা মুখলেসুর রহমানের ছেলে শেখ সাহাউর রহমান বেলাল (২৭), একই উপজেলার নুরপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন (২৮), হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি, মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা ও মনতলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার অন্তত ২০ যুবক ২০১৩ সালের প্রথমদিকে ইরাকে যান।
ইরাকের সালাউদ্দিন তিকরিত শহরের সিকরি এলাকার বদর মাহমুদ পাহাড়ি এমপি’র একটি কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে তারা ভালভাবেই দিনযাপন করছিলেন। সম্প্রতি ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ইরাক প্রবাসীরা।
এর মধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার কেশবপুর গ্রামের শেখ সাহাউর রহমান বেলাল ও হবিগঞ্জের ১৫ যুবকসহ অন্তত ২০ বাংলাদেশি সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধের কবলে পড়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। এ ব্যাপারে শেখ সাহাউর রহমান বেলালের বাবা মাওলানা মুখলেসুর রহমান জানান, তার ছেলে বেলাল বুধবার সকালে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তাদের বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন।
বেলাল তার বাবাকে জানান, ১১ জুন থেকে তারা যুদ্ধের কবলে পড়ে সালাউদ্দিন তিকরিত শহরে একটি ভবনে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের লোকজন সবার পাসপোর্ট নিয়ে পালিয়ে গেছেন।
বেলাল তার বাবাকে আরও জানান, তারা যে ভবনটিতে অবস্থান করছেন এর আশেপাশেই বোমা ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। যে কোনো সময় তারা বোমা বা গুলিতে প্রাণ হারানোর আশঙ্কা করছেন।
এ ব্যাপারে বেলালের বাবা মাওলানা মুখলেসুর রহমান তার ছেলেসহ অন্যান্যদের উদ্ধারে শিগগিরই বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ কামনা করছেন।
এদিকে, ইরাকের বাগদাদ শহরে বসবাসরত হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা গ্রামের এখলাস মিয়া (২৮) মোবাইল ফোনে জানান, বাগদাদ শহরে বিভিন্ন এলাকায় অন্তত সাড়ে ৫ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। তবে, বিদ্রোহীরা এখনও ওই শহরে পৌঁছেনি।
বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত বিদ্রোহীরা বাগদাদ শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল বলে এখলাস মিয়া জানান। তিনি আশঙ্কা করেন, শিগগির বিষয়টির সুরাহা না হলে সাড়ে ৫ হাজার বাংলাদেশিসহ প্রবাসীদের জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে।