তাহিরপুর সীমান্তে বেপোরোয়া চোরাচালানী চক্র : বিজিবির নামে চলছে চাঁদাবাজি

সুনামগঞ্জ:তাহিরপুর সীমান্তের লাকমা-লালঘাট এলাকার কয়লা পাচারের কয়েকটি পাহাড়ী চোরাই পথের চিত্র।
সুনামগঞ্জ:তাহিরপুর সীমান্তের লাকমা-লালঘাট এলাকার কয়লা পাচারের কয়েকটি পাহাড়ী চোরাই পথের চিত্র।

কামাল হোসেন,তাহিরপুর: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাচালানী ও চাঁদাবাজ চক্র। তারা হাওরাঞ্চল ও ভাটির জনপদ তাহিরপুর সীমান্ত এলাকা দখল করে প্রতিদিন ভারত থেকে আনছে মদ-গাজা,হেরোইন-ইয়াবা,নাসির উদ্দিন বিড়ি,কয়লা ও চুনাপাথর। এবং এসবের বিনিময়ে বাংলাদেশ থেকে পাঁচার করছে মাছ, হাস-মুরগির মাংস,শাক-সবজি,মেলামাইনের থালা-বাসন,ভৈজ্য তেল,মোবাইল সিম-কার্ডসহ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় পন্য। দুই দেশের অভ্যন্তরে এসকল মালামাল আদান প্রদানের জন্য চোরাচালানীরা তৈরি করেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেড। আর এসবের জন্য বিজিবির র্সোস পরিচয় দানকারী লোকদেও মাধ্যমে বিজিবি ও থানা পুলিশের দালাল ক্ষেত ক্ষতিপয় কিছু সাংবাদিক ও ঘুষখোর ক্ষতিপয় কিছু বিজিবি সদস্যকে হক্তা, মাসুয়ারা চাঁদার মাধ্যমে ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে এই চোরচালানী সিন্ডিকেট। এরা বিএসএফ ও বিজিবি ক্যাম্প ম্যানেজ করার কথা বলে চোরাচালানীদের কাছ থেকে সাপ্তাহিক ও মাসিক চাঁদা নিচ্ছে। এলাকাবাসী জানায়,উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের লাকমা-টেকেরঘাট সীমান্তের ৮টি চোরাইপথ দিয়ে পাচাঁরকৃত কয়লার প্রতি বস্তায় ৯০টাকা,ভারতীয় কাঠ(ফালি)থেকে ৫০টাকা,বাংলা কয়লা(কুড়ানো কয়লা)প্রতিটনের ১০০টাকা,মদ-গাজা,হোরোইন-ইয়াবা পাচাঁরের জন্য সাপ্তাহিক ২-৩ হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করে লাকমা গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে চোরাচালানী শহীদ মিয়া,একই গ্রামের ইদ্রিস আলী ও আব্দুল হাকিম ভান্ডারী। পাচাঁরকৃত কয়লা ইঞ্জিনের নৌকায় বোঝাই করে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনে থেকে পাটলাই নদী দিয়ে পরিবহনের জন্য প্রতিটন কয়লা থেকে ৩০০টাকা,বাংলা কয়লা প্রতিটনে ১০০টাকা ও এলাকায় মদ-গাঁজা ও নাসির উদ্দিন বিড়ির ব্যবসার জন্য সাপ্তাহিক ২ থেকে ৪ হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করে দুধের আউটা গ্রামের মাতাল নূরজামাল তার ছেলে জিয়াউর রহমান জিয়া। বাগলী ও চাঁরাগাঁও সীমান্তের ১২টি পথ দিয়ে একই ভাবে কয়লা ও মদ-গাজা, হেরোইন পাঁচার ও চাঁদা উত্তোলন করে চাঁরাগাঁও এলসি পয়েন্টের মাতাল জলিল মিয়া। লালঘাট সীমান্তের ৫টি চোরাই পথ দিয়ে কয়লা,মদ-গাজা পাঁচার ও ভারতে লোক উঠানোর জন্য একই ভাবে চাঁদা উত্তোলন করে বিজিবির উপর হামলাকারী লালঘাট গ্রামের সন্ত্রাসী আব্দুল হাই ও কালাম মিয়া। এবং চাঁনপুর সীমান্তের বারেক টিলার ৩টি চোরাই পথদিয়ে মদ-গাঁজাসহ বিভিন্ জিনিস পাচারের জন্য সপ্তাহে ৫ হাজার টাকা এবং চানপুর ছড়া দিয়ে সীমান্তের জিরো লাইনে নেমে আসা চুনাপাথর পাথর পরিবহনকারী প্রতি ট্রলি থেকে ১০০ টাক চানপুর ক্যাম্পের নামে চাঁদা উত্তোলন করছে চানপুর গ্রামের বিজিবি সোর্স পরিচয়ধারী আবু বাক্কার। তাদের এসব কর্মকান্ডের কারণে যাদুকাটা নদীতে বিএসএফের তাড়া খেয়ে বারকি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এক শ্রমিক ও এক চোরাচালানীকে ধরে বিএসএফ নিয়ে যাওয়াসহ প্রতি বছর ঘটছে এধরণের দূর্ঘটনা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক জন চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী বলেন, বিজিবি ক্যাম্পের আর্শ্বিবাদে আজ তারা (র্সাসরা) কোটিপতি। এক সময় নুন আনতে যাদের পানতা ফুরাত, থাকত ভাংগা খড়ের তৈরী মাটির ঘরে, সোর্স হয়ে আজ তারা বাড়িতে নির্মাণ করেছে পাকা দালানকোটা, ক্রয় করেছে প্রায় শতাধিক একর চাষাবাদের জমি, দামি আসবাবপত্র, একাধিক দামি মোটর সাইকেল ও মোবাইল ফোন। এ ছাড়া উন্নত মানের পোশাক পরিধান ও খাদ্য খাওয়া সহ প্রতিদিন শত শত টাকা ব্যয় করে সেবন করছে ভারতীয় মদ ও ভ্যানসন সিগারেট। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় বারবার সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরও চাঁদাবাজদের দৌড়াত্ব বেড়েই চলেছে। প্রশাসনিক ভাবে আজ পর্যন্ত চোরাচলানী ও চাঁদাবাজদের বিরোদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। এক সময় এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দিন বলেন,সীমান্তের চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির পক্ষ থেকে জোড়ালো ভূমিকা নেয়া হচ্ছে। সীমান্তের কোথাও কোন অনিয়মের সংবাদ পাওয়া মাত্রই আমারা তাৎক্ষনিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। এব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।