অটোরিক্সা চালক হত্যা : কাউন্সিলর শামীম সহ ৯জনের বিরুদ্ধে মামলা

Forhad-Chowdhury-Shamim-2সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীমসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। বুধবার সিলেট মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে দায়েরকৃত ওই মামলায় কাউন্সিলর শামীমসহ চারজনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পেশায় অটোরিক্সা চালক সিলেট সদর উপজেলার লালবাগের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে জালাল আহমদ। দরিদ্র পরিবারে সুখ শান্তি ফিরিয়ে আনতে কিস্তিতে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা কিনেন তিনি। আর এ কিস্তিই কাল হলো তার। কিস্তির টাকা নিয়মিত পরিশোধ করতে না পারায় তাকে অপহরণ করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সিলেট সদর উপজেলার লালবাগের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে জালাল আহমদ ২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কিস্তিকে একটি অটোরিক্সা ক্রয় করেন। সাময়িক আর্থিক অসুবিধার কারণে কয়েকটি কিস্তি আটকা পড়লে চলতি বছরের ১৩ মার্চ কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীমের মধ্যস্থতায় এ টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। এ অনুযায়ী জালাল কিস্তির টাকা পরিশোধ করে আসছেন। কিন্তু কিস্তির টাকা কাউন্সিলরের অন্যতম সহযোগি নগরীর চৌকিদেখী এলাকার আবদুল হান্নান, আব্দুস শুকুর ও মান্নসহ অন্যদের হাতে না দেওয়ায় গত ১৬ এপ্রিল চৌকিদেখী সুগন্ধা রেস্টুরেন্টের সামন থেকে জালালকে অপহরণ করে ৩ নং গলির ভিতরে চা-বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে জালালকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে যায় হান্নানসহ অন্যরা। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় ৩ নং গলির সামনে অবস্থানরত হামলাকারীরা বাধা দেয়। এ সময় জালালের সহযোগি আরেক অটোরিক্সা চালক আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতে পৌছে দেয়।
পরদিন কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও তার সহযোগিরা জালালের বাড়িতে গিয়ে আহত জালালকে কোনো ধরণের চিকিৎসা কিংবা আইনগত ব্যবস্থা নিলে জালালের পরিবারের অপর সদস্যদের অপহরণ করে লাশ গুম ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের হুমকি দেন। ফলে বিনা চিকিৎসায় ২০ এপ্রিল গভীর রাতে জালাল মৃত্যুবরণ করেন। জালালের মৃত্যুর ২দিন পর কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ফরহাদ শামীম নিহত জালালের পিতা গিয়াস উদ্দিনকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে পুত্রের মৃত্যু সংক্রান্ত ব্যাপারে বাড়াবাড়ি না করার জন্য শাসিয়ে দেন। এছাড়া মুখ বন্ধ রাখার জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা দেন। পাশাপাশি হান্নানসহ অন্যদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেওয়ার কথা বলেন কাউন্সিলর।
গত ১৫ মে নিহত জালালের পরিবার বিমানবন্দর থানায় এ ব্যাপারে মামলা করতে চাইলেথানা পুলিশ মামলা না নেওয়ায় গত বুধবার আদালতে মামলা করা হয়।