গোলাপগঞ্জের পাহাড়ি এলাকায় আটকে রাখা হয় ব্যবসায়ী ফয়জুল খানকে
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ বিশ্বনাথের ফার্নিচার ব্যবসায়ী ফয়জুল খানকে অপহরণের পর সিলেটের ‘গোলাপগঞ্জের’ টিলা/পাহাড়ি এলাকায় আটকে রেখেছিল দুর্বৃত্তরা । অপহৃত ব্যবসায়ী ফয়জুল খান সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ ইউনাইটেড পলি ক্লিনিক থেকে উদ্ধারের পর পুলিশকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। ‘অপহৃত’ এই ব্যবসায়ীর বরাত দিয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেন, ‘অপহরনকারীরা তাকে কোনো পাহাড়ী এলাকায় নিয়ে গিয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যার পর তারা তাকে গাড়িতে করে সিলেট নগরীর অদূরে এনে ছেড়ে দেয়। সেখান থেকে তিনি রিকশা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যান। এর বাইরে তিনি আর কিছু বলতে পারছেন না। তবে, তিনি মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত। তেমন কোন কথাও বলতে চাচ্ছেন না। উদ্ধারের পর তাকে চিকিৎসকদের দিয়ে চেকআপ করানো হয়। এরপর রাতেই তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয় পুলিশ।
বিশ্বনাথের রামপাশা ইউনিয়নের সিদ্ধরপুর গ্রামের মৃত মুহিব খানের ছেলে ও বিশ্বনাথ নতুন বাজারের ফার্ণিচার ব্যবসায়ী ফয়জুল খান মঙ্গলবার তিনি নিখোঁজ হন। পরে তার ছেলে জয়নুল খান তার বাবা অপহৃত হয়েছেন এবং অপহরণকারীরা ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে উল্লেখ করে বিশ্বনাথ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে ফয়জুল খান স্থানীয় বাগিচা বাজারে যাওয়ার কথা বলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হন। সন্ধ্যার পর তিনি ছেলে জয়নুল খানকে ফোনে তার ফিরতে দেরি হবে বলে জানান। রাত ৮টা থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মঙ্গলবার ভোররাতে ফয়জুল খান ফোনে তার ছেলেকে অস্পষ্ট কন্ঠে তার অপহরণের কথা জানান এবং অপহরণকারীদের তিন লাখ টাকা দিতে বলেন। কিন্তু কোথায় কিভাবে টাকা দিবেন একথা জানতে চাওয়ার পরই ফোনের সংযোগ কেটে যায় ও পরবর্তীতে আবারও ফোন বন্ধ করে দেয়া হয়। বুধবার সকালে ফয়জুল খানের শ্যালিকার মোবাইলে ফোন করে অপহরণকারীরা আবারও তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে বলে জয়নুল খান বিশ্বনাথ থানায় দায়ের করা জিডিতে উল্লেখ করেন।
সাধারণ ডায়েরির পর তাকে উদ্ধারে তৎপর হয়ে উঠে পুলিশ। মোবাইল ফোনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান গোলাপগঞ্জ থানাধীন ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় নিশ্চিত হয় হয় পুলিশ। এর পর তিন শতাধিক ফোর্সের সমন্বয়ে পুলিশ গোলাপগঞ্জ ও বিশ্বনাথ থানা এলাকায় ব্যাপক অভিযান চালায়।
বুধবার রাত ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিলেট জেলা পুলিশ অভিযান চালায় জিন্দাবাজারস্থ ইউনাইটেড পলি ক্লিনিকে। এসময় রিসিপশনের পাশে টেলিভিশনের সামনে থেকে ব্যবসায়ী ফয়জুল খানকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।