বিদেশে পাঠানোর নামে ২৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আইনজীবি ও সাংবাদিক নামধারী প্রতারক চক্র

সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

press pic by ali ahmedসুরমা টাইমস রিপোর্ট : সিলেটে আইনজীবি ও সাংবাদিক নামধারী একটি প্রতারক চক্র এক ব্যাক্তিকে আমেরিকা পাঠানোর নাম করে প্রতারণার মাধ্যমে ২৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগি আলী আহমদ গতকাল বুধবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রতারণার কাহিনী তুলে ধরেন। আলী আহমদ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার মাগুরা গ্রামের কামাথ্যা জরণ ভট্রাচার্য্যর পুত্র। তিনি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহন করেছেন। লিখিত বক্তব্যে আলী আহমদ উল্লেখ করেন, তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পরিদর্শক পদে চাকুরী শেষে অবসর গ্রহন করেন। অবসর গ্রহনের পর সরকার থেকে এক কালীন ২০ লক্ষ টাকা পেনশন পান। চাকুরী জীবন শেষে তিনি ও তার একমাত্র সন্তানকে নিয়ে আমেরিকা যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট জজ আদালতের ২ নং বারের আইনজীবি শাহ আলমের সাথে তার পরিচয় হয়। শাহ আলম আইন পেশার পাশাপাশি ট্রাভেলস ব্যবসার মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করেন। শাহ আলমের পরামর্শে প্রতারক চক্রের সদস্য বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের মেওয়া গ্রামের সাংবাদিক পরিচয়দানকারী আব্দুল খালিক,একই উপজেলার সড়ক ভাঙ্গি গ্রামের ওলিউর রহমান গাজী, ও পোষ্ঠ অফিস রোডের বাসিন্দা বলাই বৈদ্যর সাথে ২০১৩ ইং সালের ২৯ সেপ্টম্বর ২৫ লক্ষ টাকার বিনিময় আমেরিকা যাওয়ার চুক্তিপত্র দলিল সম্পাদন করা হয়। দলিলে প্রতারকদের স্বাক্ষর ও স্বাক্ষী হিসেবে আইনজীবি শাহ আলম স্বাক্ষর করেন। চুক্তিপত্র অনুযায়ী আলী আহমদ প্রথমে ৪ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে আমেরিকা পৌছার পর চেকের মাধ্যমে অবশিষ্ঠ ২১ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা দলিলে উল্লেখ করা হয়। পরে আলী আহমদকে মেডিক্যাল চেকআপ করানোর জন্য ঐ বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে আব্দুল খালিক, ওলিউর রহমান গাজী ও বলাই বৈদ্য ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে ফকিরাপুলের একটি রেষ্ট্রুরেন্টে আলী আহমদকে বসিয়ে ঐ তিনজন পালিয়ে আসে। আলী আহমদ তাদের খোজেঁ না পেয়ে সিলেটের আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৭৯/১৩ ইং ও ১/১/১৪ ইং। মামলা চলাকালীন সময়ে আইনজীবি শাহ আলম আপোষের কথা বলে পূনরায় বিবাদী আব্দুল খালিক, ওলিউর রহমান গাজী ও বলাই বৈদ্যর সাথে স্বাক্ষাত করেন। আপোষের এক পর্যায়ে আলী আহমদ অবশিষ্ঠ ২১ লক্ষ টাকা এককালীন দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। পরে চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকায় চেকের মাধ্যমে তিনি ২১ লক্ষ টাকা তাদের কাছে প্রদান করেন। টাকা পেয়ে প্রতারকরা একই কায়দায় তাকে ঢাকায় রেখে পালিয়ে যায়। আলী আহমদ ২য় বার টাকা খুইয়ে শ্বরনাপন্ন হন ঢাকার সিএমএম আদালতে ও মতিঝিল থানা,খিলগাও থানায় মামলা দায়ের । যার নং-৭০/১৪ইং,২০০১/১৪ ইং,১৫৯/১৪ইং। মামলাগুলো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বর্তমানে আলী আহমদ জীবনের শেষ সম্বল পেনশনের টাকা হারিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। বিবাদীরা তাকে মামলাগুলো তুলে আনার জন্য হত্যার হুমকি প্রদান করছে বলে অভিযোগ করেন আলী আহমদ। তিনি আরো বলেন, আইনজীবি শাহ আলম প্রতারণা মামলার আসামী। তার স্ত্রী রুজিনা বেগম বাদী হয়ে স্বামী শাহ আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৫২০/১৩ ইং। এ ছাড়া সাংবাদিক নামধারী প্রতারক আব্দুল খালিক, অলিউর রহমান গাজীর বিরুদ্ধে দুটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলা রয়েছে। মামলা দুটি হচ্ছে, ১৮/১৩ইং ও ২৯/১৩ ইং। প্রতারকদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।