শাবিতে ছাত্রী কুটক্তিকারী শিক্ষকের বিচার দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট

sustশাবি প্রতিনিধিঃ ছাত্রী কটুক্তির অভিযোগে লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাছির উদ্দিনের চাকরিচ্যুতের দাবিতে বৃহস্পতিবার ভিসি অফিসের সামনে ২ঘন্টা অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে আগামী ২২ এপ্রিল আহুত সিন্ডিকেট মিটিংয়ে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট উত্থাপন করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে জানালে শিক্ষার্থীরা ধর্মঘট থেকে সরে যায়। ভিসির প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ধর্মঘটে এসে এসব কথা জানান।
তবে ২২ এপ্রিলের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে বলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন। জানা গেছে, ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে কর্মচারী আবু সালেহকে আইনের আওতায় এনে বিচার, নীবর ভুমিকা পালনের অভিযোগে বিভাগীয় প্রধান আনোয়ারা বেগমের স্বপদ থেকে পদত্যাগ ও ছাত্রী কটুক্তির অভিযোগে শিক্ষক নাছির উদ্দিনের চাকরিচ্যুতের দাবিতে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা দুপুর ৩টায় ভিসি অফিসের সামনে জড়ো হয়। পরে ভবনের ফটকে ৩দফা দাবি সংবলিত ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি শুরু করে তারা।
এসময় ভিসি তার অফিসে প্রবেশের সময় স্বল্প সময়ে দাবি বাস্তবায়নে অপরাগতা প্রকাশ করলে শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে। এসময় ভিসি লোক প্রশাসন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা হয়েছে বলে আন্দোলনকারীদের জানান। পরে ভিসির কার্যালয়ে এক জরুরী মিটিং শেষে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, প্রক্টর ড. হিমাদ্রি শেখর রায়, শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইউনুছ ও সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক মো. ফারুক উদ্দিন ধর্মঘটে এসে ২২ এপ্রিল আহুত সিন্ডিকেট মিটিংয়ের কথা জানান। শিক্ষার্থীরা এতে আশ্বস্ত হয়ে ধর্মঘট থেকে সরে গেলেও নিয়মিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এদিকে বিকেল পাঁচটায় লোক প্রশাসন বিভাগের চলমান আন্দোলনে ৬দফা দাবিতে ভিসির সাথে দেখা করে স্মারকলিপি দিয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে শ্রদ্ধাশীল শিক্ষক ফোরাম। দাবিগুলো হচ্ছে- আন্দোলনকারীদের প্রথম উত্থাপিত অভিযোগসমূহ তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদেও বিচার, পরবর্তীতে পত্রিকায় প্রকাশিত অভিযোগসমূহ খতিয়ে দেখে দোষীদের বিচার, প্রমাণিত না হলে অভিযোগকারীদের ছাত্রত্ব বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্ট সুমুন্নত রাখা, আন্দোলনের নামে বিভিন্ন সময়ে বিভাগসমূহে অচলাবস্থা সৃষ্টি কারণ খতিয়ে দেখা, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একটি সুস্পষ্ট সীমারেখা ও কোন বিষয়ে বিচার চলমান থাকার সময় সব রকমের কর্মসূচি বন্ধ রাখা বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা ও বাস্তবায়ন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ফোরামের আহবায়ক অধ্যাপক সাজেদুল করিম, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মো. আব্দুর রহিম, লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক মো. শাজাহান চৌধুরী ও মো. আশরাফ সিদ্দিকী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আ. ফ. ম. জাকারিয়া, মঞ্জুরুল হায়দার সুমন আখন্দ ও মোখলেসুর রহমান, বাংলা বিভাগের শিক্ষক রিজাউল ইসলাম, সমাজকর্ম বিভাগের ইসমাইল হোসেন প্রমুখ। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে সংহতি পোষন করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছে শাবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। সংগঠনটি ক্যাম্পাসের অর্জুনতলা থেকে বিক্ষোভ বের করে পুরো ক্যাম্পাস পদক্ষিন করে গোলচত্বরের পাশে সমাবেশ করে। এসময় বক্তারা যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত কর্মচারী ও ছাত্রী কুটক্তিকারী শিক্ষকের বিচার দাবি করে। উল্লেখ্য, যৌন হয়রানির ঘটনায় দোষীদের বিচার দাবিতে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ২এপ্রিল থেকে আন্দোলন করছে। এতে বিভাগে একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।