মৌলভীবাজারে বাগানে বাগানে নতুন চা পাতা উত্তোলন শুরু
ইসলাম শেফুল: সারা বছর যেন মিলে পরিমিত বৃষ্টি। আর খরা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে যেন চাশিল্প থাকে মুক্ত, উপরওয়ালার কাছে এই কামনা করে মৌলভীবাজারের চা বাগানে বাগানে শুরু হয়েছে নতুন বছরের পাতা উত্তোলন। নতুন পাতা উত্তোলনের আনন্দে বাগানে বাগানে চলছে দোয়া, সিন্নি বিতরণ ও পূজার্চনাসহ নানান ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি। আর বছরের শুরুতে ভালো পাতা পেয়ে খুশি চা শিল্প সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার সকালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শ্রী গোবিন্দ্রপুর চা বাগানে পাতা তোলার কাজের উদ্বোধন করেন বাগানের মালিক বিশিষ্ট সমাজসেবক, চাকর ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মহসীন মিয়া মধু। এসময় বিভিন্ন চা বাগানের মালিক, চাবাগান ব্যবস্থাপক, চা শ্রমিক নেতা ও সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তার ঘোষণার পরপর সেকশনের ভেতরেই বাগানের মসজিদের ইমাম দোয়া পড়ান। অন্যদিকে যারা সারা বছর পাতা তুলবে তারাও উলুধনি দিয়ে শুরু করেন পাতা চয়নের কাজ। পাতা চয়ন শেষে তা আসে ফ্যাক্টরীতে সেখানে বাগানের পন্ডিত আয়োজন করেন পূজার্চনার। পূজার্চনা শেষে বাগান মালিক মেশিনে পাতা দিয়ে উদ্বোধন করেন ম্যানুফ্যাকচারিং এর কাজ। পরে বাগানের সকল শ্রমিকের মধ্যে বাগান মালিক মহসীন মিয়া মিষ্টি বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য প্রতিবছর ডিসেম্বরের প্রথম দিকে পাতা চয়ন বন্ধ হয়ে যায় এবং মার্চ পর্যন্ত গাছের পরিচর্যা ও ফ্যাক্টরীর মেইনটেনেন্স শেষে শুরু হয় নতুন করে উৎপাদন। এসময় চাকররা আশা প্রকাশ করেন চলমান আবহাওয়ার মতো সারা বছর অনুকুল আবহাওয়া পেলে এবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চা উৎপাদন হবে।
ডিসেম্বরে চা গাছের মাথা কেটে দেয়ার প্রায় ৪ মাস পর মৌলভীবাজারের চা বাগানগুলোর গাছে গাছে এখন শুধু সবুজ পত্রমঞ্জুরী। শ্রমিকরা পাতা তুলতে গিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভরে যাচ্ছে হাত। বেশি পাতা তুলতে পেরে হাজিরা পাবেন বেশি আর এ ভাবে যেন সারা বছর পাতা তুলতে পারেন সেজন্য ঘরে ঘরে তারা করছেন পূজার্চনা। করছেন দোয়া মাহফিল ও সিন্নি বিতরণ।
এদিকে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আব্দুস সালাম খান জানালেন নিয়ম মেনে গাছের পরিচর্যা করলে একটি চা গাছ ৬০ বছর ধরে ফসল দেবে। তাই সকলেকে এ বিষয়ে রাখতে হবে সজাগ দৃষ্টি। । বাংলাদেশ চা সংসদের চেয়ারম্যান সাফওয়ান চৌধুরী জানালেন তার ধারনা পরিমিত বৃষ্টিপাতে এবছরও গত বছরের ন্যায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
বছরের শুরুর মতো সারা বছর চায়ের অনুকুল আবহাওয়া বজায় থাকলে চলমান বছরে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এ শিল্প সংশ্লিষ্টরা।