‘নববর্ষের ইতিকথা’
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ নববর্ষকে ঘিরে বাঙ্গালীর সংস্কৃতি জুড়ে আছে নানা ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজন। এসব উৎসব আয়োজন সম্পর্কে জানতে এবং জানাতে এটিএন বাংলায় পহেলা বৈশাখ দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে প্রচার হবে আমজাদ কবীর চৌধুরীর পরিচালনায় বিশেষ প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘নববর্ষের ইতিকথা’।- অনুষ্ঠানে হালখাতা, লাঠিখেলা, ষাঁড়ের লড়াই, হিন্দুদের স্নান, বৃষ্টি নামানে খেলা ‘আল¬াহ মেঘ দে,পানি দে’, রথ যাত্রা, কবিগান এবং রাখাইন ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর নববর্ষকে ঘিরে আয়োজনকে প্রামাণ্য অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া নববর্ষের ইতিকথা নিয়ে কথা বলেছেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, চারুকলার অধ্যাপক নাসির হোসেন প্রমুখ। নববর্ষের ইতিকথা এবং বাঙ্গালীর ঐতিহ্য ও নববর্ষকে ঘিরে সাংস্কৃতিক আয়োজন সম্পর্কে জানতে দেখুন এই বিশেষ প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘নববর্ষের ইতিকথা’।
প্রায় ১০ হাজার বছর পূর্বে মেয়েরা খাদ্যশস্য জোগাড় করতে করতে মস্ত বড় একটা আবিস্কার করে ফেললো। তারা লক্ষ্য করলো, শস্যবীজ থেকে নতুন গাছ জন্মায়। তখন তারা মাটিতে শস্যবীজ পুঁততে আরম্ভ করলো। এভাবে ধীরে ধীরে সংগ্রহবৃত্তি থেকেই উদ্ভব হলো কৃষির। কৃষিজীবি প্রাচীন মানুষেরা জানতো যে নির্দিষ্ট সময়ব্যবধানে গ্রীষ্মকাল অর্থাৎ ফসল তোলার সময় আসে। একটা ফসল কাটার সময় থেকে তারা একটা নির্দিষ্ট সময় পরিমাণ হিসেবে বুঝতে পেরেছিল। বৎসর সম্বদ্ধে ধারণার উৎপত্তি এভাবেই ঘটে।
যীশুখৃষ্টের জম্মের তিন বছর পর থেকে শুরু হয় খৃষ্টাব্দের হিসাব। যা এখনো সারা পৃথিবীতে খৃষ্টাব্দ বা ইংরেজী সন হিসাবে পরিচিত এবং সর্বাধিক ব্যাবহৃত। খৃষ্টাব্দ সৌরবৎসর । ৬২২ খৃষ্টাব্দে হযরত মোহম্মদ (সাঃ) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। তখন থেকেই হিজরি অব্দ গণনা করা হয়। হিজরতের স্মৃতি রক্ষার্থে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর (রাঃ) এই হিজরি সন প্রবর্তন করেন। হিজরি চান্দ্রবৎসর। সম্রাট আকবরের সময় ৯৬৩ হিজরি সনকে ৯৬৩ বঙ্গাব্দে রূপান্তরিত করেন। এর কারণ ছিল বাঙাল মুল্লুকে খাজনা আদায়ের সুবিধা। শুরু দিকে অগ্রহায়ণ মাস থেকে বছরের প্রথম মাস ধরা হলেও বর্তমানে বছরের প্রথম মাস বৈশাখ।
বাংলাভাষী অঞ্চলে কখন মাস বা বর্ষগণনার শুরু হয়েছিল তা এখনও সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়নি। তবে ষাটের দশকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থানের কালে বৈশাখী মেলা নিয়েছিল নাগরিক রূপ। ছায়ানটের সূচনা করা উৎসবের সঙ্গে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছিল নববর্ষকে ঘিরে। সে-ধারা এখন আরো গতিশীল। পৃথিবীর সর্বত্র ‘নববর্ষ’ একটা ঐতিহ্য। যে কোন বছরের প্রথম দিনটি ‘নববর্ষ’ নামে পরিচিত হয়ে আসছে। ‘নববর্ষ’একটা নির্দিষ্ট উৎসবের দিন। প্রত্যেক দেশেরই উৎসব অনুষ্ঠানের একটা রূপক থাকে। উৎসব প্রায়ই জন্মগ্রহণ করে প্রকৃতিকে সম্ভাষণ,রাষ্ট্রবিজয়, জাতীয় বীরের প্রতি সম্মান বা অত্যাচারীর নিপাত উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশকে কেন্দ্র করে। আশির দশকের শেষ দিক থেকে চারুকলা মঙ্গল শুভযাত্রার আয়োজন করে আসছে। অশুভ শক্তির নাস ও শুভশক্তির কামনাই এই মঙ্গল যাত্রার মূল কথা।