বিশ্বনাথে বাসিয়া নদী নামমাত্র খননের অভিযোগ
তজম্মুল আলী রাজু, বিশ্বনাথ: বিশ্বনাথে ভরাট হওয়া এক সময়ের খর স্রোতা বাসিয়া নদীর খনন কাজ চলছে। এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে গত মহাজোট সরকারের আমলে উদ্যোগ নেওযা হয় নদীটি খনন কাজের। চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে শুরু হয় নদীর খনন কাজ। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৭ কোটি টাকা। নদীটি খনন করা হলে উপকার পাবেন তিন উপজেলার মানুষ।
কিন্তু বাসিয়া নদী খনন কাজে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ নদী খননের নামে নাম মাত্র খনন কাজ চলছে। ভরাট হওয়া নদী শুধু পারের (চর) মাটি খনন করা হচেছ।
এছাড়া নদীর পাড়ে গড়ে উঠা অনেক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচেছ না বলেও অভিযোগ রয়েছে। সুরমা নদীর শাখা বাসিয়া নদীটি খননের অভাবে ক্রমশ ভরাট হয়ে যায়।
একসময় নদীতে প্রচন্ড স্রোতস্বীনি ছিল। এরপর ক্রমশ পলি মাঠির কারণে ভরাট হতে থাকে। ফলে পানির অভাবে দু’পারে সেচকাজ মারাত্বক ভাবে ব্যাহত হতে থকে। নদীতে পানি না থাকায় সু-স্বাধু মাছের বংশও হারিয়ে গেছে। নদী তীরর্বতী গ্রামগুলোর মানুষ মাছ ধরাসহ প্রাত্যহিক কাজর্কম স¯পাদন এবং চাষাবাদের ক্ষেত্রে চরম দৃর্ভোগের মুখে পড়েন। ওই এলাকার প্রকৃতি এবং পরিবেশও দুর্ভোগের মুখে পড়ে। এছাড়া নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় প্রতি বছর বর্ষায় পাহাড়ি ঢলে সরাসরি নদী পারের পার্শ্ববর্তী বাড়ি ঘরে আঘাত হানে। ভাসিয়ে নিয়ে যায় ক্ষেতের ফসল, বাড়ি, ঘর ও গাছপালা। আর ভরাট হয়ে যাওয়া নদীতে ধান চাষ, খেলার মাঠ ও গোচারণ ভৃমি হিসেবে ব্যবহার হয় ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, সিলেট সদর উপজেলার মাসুকগঞ্জবাজার থেকে বিশ্বনাথ উপজেলা সদর বাসিয়া নদীর ১৮ কিলোমিটার খনন করা হচেছ। ৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪টি ভাগে প্রকল্পটি চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের ২য় সপ্তাহে শুরু হয়েছে খননকাজ। আগামী ১৫ মে খনন কাজটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পটির অধিকাংশ খনন কাজ শেষ হয়েছে
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ভরাট হয়ে যাওয়া বাসিয়া নদীটি খনন কাজ শেষ হলে উপকার পাবেন সিলেট সদর দক্ষিণ সুরমা ও বিশ্বনাথ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ। নদীটি খনন করা হলে মাছের প্রজন্ন বাড়বে, শুকনো মৌসুমে সেচ সুবিধা বূদ্ধি পাবে ও বর্ষায় অতিরিক্ত পানি ধারন করবে ।
এতে পাহাড়ি ঢলের আঘাত থেকে রক্ষা পাবে বাড়ি,ঘর। এর সাথে কিছুটা হলেও অবৈধ দখল থেকেও রক্ষা পাবে নদীর বিস্তীর্ন ভৃমি ।
নদী খননেন নামে নাম মাত্র নদীটি খনন কাজ করা হচেছ বলে স্থানীয়দের অনেকেই অভিযোগ করেছেন।
তারা বলেন, নদীর অনেক অংশে নদীর মধ্যখান খনন না করেই শুধু দুই পারের মাটি খনন করা হচেছ । তাছাড়া নদী অনেক স্থানে দু’পাশে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে না বলেও তারা অভিযোগ করেন ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বাসিয়া নদীর ১৮ কিলোমিটার খনন করা হচেছ । আগামী মে মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে এই খনন কাজ শেষ হবে। যে ভাবে নদীটি খনন কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা সেভাবেই খনন হচেছ । তিনি বলেন, আনিত অভিযোগগুলো সত্য নয়। নদীর যেখানে খনন কাজে সমস্যা থাকবে সেটা সমাধান করা হবে ।