সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা
সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে নিয়মিত বিরতিতে ঘটে চলেছে একেরপর এক সংঘর্ষ ও মারামারির ঘটনা। এতে আতঙ্কে ভুগছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। শিক্ষকেরাও এতে উদ্বিগ্ন বোধ করছেন। বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের মধ্যে বিবাবমান দ্বন্দ্ব এবং বহিরাগতদের দ্বারা সৃষ্ট নানা সমস্যার কারণে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেল, গত সোমবারও এমন একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেল, গত বৃহস্পতিবার এবছর একাদশ শ্রেণিতে নতুন ভর্তি হওয়া এক ছাত্রীর সাথে প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে এক বহিরাগতের সাথে স্থানীয় ক’জনের কথা কাটাকাটি হয়। একসময় সেটা হাতাহাতিতে রূপ নেয় ও পরে একপর্যায়ে ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার রেশ ধরে সোমবার সকালে কলেজে ক্লাস চলাকালীন সময়ে বহিরাগতদের ৪০/৫০জনের দু’টি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মারামারিতে আহত হয় দু’জন। এসময় সংঘর্ষকারীদের সবার হাতে ধারালো অস্ত্র দেখে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ক্লাস ফেলে দৌড়ে কলেজ ক্যাম্পাস ত্যাগ করে।
মঙ্গলবার কলেজে গিয়ে দেখা গেল, সোমবারের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রছাত্রীরা ভীতসন্ত্রস্ত বোধ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানালো, লেখাপড়া করার জন্য কলেজে এসে এধরনের মারামারির ঘটনা দেখে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অনেক অভিভাবকেরা তাদের ছেলেমেয়েরকে কলেজে পাঠাতেও ভরসা পাচ্ছেন না। ফলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম হওয়ায় ব্যাঘাত ঘটছে পুরো শিক্ষা কার্যক্রমে।
মঙ্গলবার সকালে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থীকেই অভিভাবকেরা নিজে এসে কলেজে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানা গেল। সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ সৈয়দ মহিবুল ইসলাম সোমবারের সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মেজর ছয়ফুল কবীর চৌধুরী বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে যেসব মারামারির ঘটনা ঘটছে তার সবগুলোই বহিরাগতদের কারণে। কলেজের শিক্ষার্থীরা এতে জড়িত নয়। তিনি বলেন, বহিরাগতদের সংঘর্ষ মোকাবেলার দায়িত্ব পুলিশের, কলেজ কর্তৃপক্ষের এখানে কিছুই করার নেই।
অধ্যক্ষ আরো বলেন, প্রতিবছরই একাদশ শ্রেণিতে নতুন ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের সাথে কিছু বহিরাগতের আগমন ঘটায় ছোটখাটো সমস্যা হয়। আর কলেজ ক্যাম্পাসের চতুর্দিকে সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বহিরাগতরা যেকোন সময়ই কলেজে ঢুকে পড়ে বলে জানালেন তিনি।
কলেজ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে যোগাযোগ করা হল জেলা পুলিশ সুপার মো. হারুন-অর-রশীদের সঙ্গে। তিনি বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে সারাক্ষণ পুলিশ পাহারা বসিয়ে রাখা সম্ভব না। তাছাড়া যখনই কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তখনই পুলিশ সেখানে দ্রুত ছুটে যায়।