মেঘনায় লঞ্চ ডুবি : ১২ লাশ উদ্ধার : নিখোঁজ শতাধিক
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ ঢাকার সদরঘাট থেকে সুরেশ্বর যাওয়ার পথে মেঘনা নদীতে গজাড়িয়ার কাছে প্রবল ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে গেছে মাঝারি আকারের যাত্রীবাহী লঞ্চ মিরাজ-৪। জানা গেছে, লঞ্চটিতে ঠিক কতোজন যাত্রী ছিল তা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।দুঘটনার পর পরই কোস্ট গার্ড, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনতা লঞ্চের যাত্রীদের উদ্ধারে কাজ শুরু করে।ঘটনাস্থল থেকে নয় জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ৩০-৪০ জন যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।ঘটনাস্থলে নৌবাহিনীর ১১ জনের একটি ডুবুরি দল কাজ করছে।
উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ডুবে যাওয়া লঞ্চটি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে উদ্ধার অভিযান তদারকি করছেন।ঘটনাস্থলে রয়েছেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানও।
সাধারণ লঞ্চ ছাড়ার সময় যাত্রী সংখ্যা গণনা করার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এ নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। তবে কেউ কেউ ৩০০ জনের বেশি যাত্রী ছিলো বলে দাবি করছেন। লঞ্চ থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।মুন্সীগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন জানান, ওই লঞ্চটিতে অন্তত দেড়শ যাত্রী ছিলো।
নিহতদের মধ্যে চার জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকিদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। নিহতরা হচ্ছেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামের জামাল হোসেন সিকদার (৫০), তাঁর ছেলে আবিদ হোসেন সিকদার (২৮) টুম্পা বেগম (৩০), সেতারা বেগম (৫০), আরিফ (১১)। এ দুর্ঘনায় নিখোঁজ রয়েছেন লিটনের আট বছরের মেয়ে সুমনা ও ছয় বছরের ছেলে মাহিম। এ দুর্ঘটনায় শতাধিক যাত্রী এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা জানিয়েছেন।
মিরাজ লঞ্চের উদ্ধার হওয়া যাত্রী লিটন জানান, বৃস্পতিবার ঢাকার সদরঘাট থেকে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর যাওয়ার পথে মিরাজ লঞ্চটি বিকেল সোয় ৩টার দিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দৌলতপুরের ষোলোআনা নামক স্থানে মেঘনা নদীতে হঠাৎ কাল বৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই লঞ্চটি মেঘনার বুকে ডুবে যায়। এ সময় লঞ্চটিতে প্রায় তিন শতাধিক যাত্রী ছিল। লঞ্চ ডুবির সঙ্গে সঙ্গে অনেক যাত্রী নদীতে সাঁতার কেটে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও শতাধিক যাত্রী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন লিটন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিআইডাব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ও দুর্বার দুর্ঘটনাস্থলে এসে পৌছে লঞ্চটির অবস্থান শনাক্ত করার কাজ শুরু করেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা পোনে ৭টায় লঞ্চটির অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এদিকে মেঘনার তীরে এখন চলছে স্বজনদের আহাজারি। স্বজনদের হারিয়ে উদ্ধার হয়ে আসা যাত্রীদের কান্নায় মেঘনার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। সদরঘাটের বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) মো. মাহমুদ হোসেন জানান, দুপুর ১টার সময় মিরাজ-৪ সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে যায়।