মোগলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাঞ্ছিত : মুখোমুখি দু’পক্ষ
ডেস্ক রিপোর্টঃ মোগলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তাঁর ভাইকে সালিশ বৈঠকে শারিরিক লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরতলির সোনাতলায় ২৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দিনভর চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। মোগলগাঁও অঞ্চলের বিক্ষুব্ধ জনতা লাঠি-সোটা নিয়ে মিছিল সহকারে বাদাঘাট এলাকার বাদাঘাট মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। অপরদিকে মইয়ারচর-সোনাতলার লোকজন সোনাতলা সিরামিক কোম্পানী এলাকায় অবস্থান নেন।
এসময় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে কঠোর অবস্থান নেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে এলাকার সালিশী ব্যক্তিত্বদের প্রচেষ্টায় সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হলেও পুরো এলাকা জুড়ে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, ঢাকার ইউনাইটেড কোম্পানীর নামে সিলেট শহরতলির সোনাতলা এলাকায় প্রায় ৩শ’ কিয়ার ভূমি ক্রয় করা হয়। মোগলগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম টুনু, আওয়ামী লীগ নেতা মকসুদ আহমদ মকসুদ ও মাছুম বিল্লাহসহ ঢাকার আরো কয়েকজন কোম্পানীর পক্ষে ভ‚মি ক্রয় করছিলেন। এর মধ্যে আর্থিক বিষয় নিয়ে টুনু চেয়ারম্যানের সাথে মকসুদ আহমদ মকসুদ ও মাছুম বিল্লাহ’র মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। এই মতানৈক্য থেকে উভয় পক্ষের দন্দ্বের সূত্রপাত হয়। গত সোমবার সকালে বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষে টুকেরবাজার ইউনিয়নের শাহপুর তালুকদারপাড়ায় সালিশী ব্যক্তিত্ব মইন উদ্দিন ঠিকাদারের বাড়িতে এ নিয়ে সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, মকবুল হোসেন মখল, কান্দিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিরাজী, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, কওছর আলমসহ এলাকার সালিশী ব্যক্তিবর্গ। সেখানে বৈঠকের পূর্বে সভাপতি নির্ধারণ, আমানতের টাকা জমাকে কেন্দ্র করে কিছু উচ্চবাচ্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি কিছুটা ঘোলাটে হয়ে যায়। এমন অবস্থার মধ্যে কথাকাটাকাটির জের ধরে টুনু চেয়ারম্যান ও মকসুদ আহমদ-মাছুম বিল্লাহ’র লোকজন হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এসময় লাঞ্ছিত করা হয় টুনু চেয়ারম্যান ও তার ভাই মনু মিয়াকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সালিশ বৈঠক পন্ড হয়ে যায়।.
এদিকে টুনু চেয়ারম্যান ও তার ভাই মনু মিয়াকে শারিরিক লাঞ্ছিত করার ঘটনাকে কেন্দ্র মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে টুনু চেয়ারম্যানের লোকজন মোগলগাঁও থেকে সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা হাতে নিয়ে বাদাঘাট মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সামনের ব্রীকসফিল্ডে এসে অবস্থান নেয়। অপরদিকে মইয়ারচর-সোনাতলা থেকে মকসুদ আহমদ ও মাছুম বিল্লাহ’র লোকজন ইউরো বাংলা সিরামিক পার হয়ে নলকট রাস্তার মোড়ে অবস্থান নেন। পুরে পুলিশ সাজোয়া যান নিয়ে মধ্যখানে অবস্থান নেয় এবং উভয় পক্ষকে আর এগুতে নিষেধ করে। এরই মধ্যে সেখানে উপস্থিত থাকা সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ, জালালাবাদ থানার এসি কামরুল ইসলাম, ওসি আখতার হোসেন, টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদ আহমদ, হাটখোলার সাবেক চেয়ারম্যান আজির উদ্দিন, জালালাবাদ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুহিত আলম শফিকসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উভয় পক্ষকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন জানান, টুনু চেয়ারম্যান ও মকসুদ আহমদ মকসুদের লোকজনের মধ্যে জমিজমা ও টাকা পয়সা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংঘর্ষে উপনিত হয়েছিল। তবে পুলিশ বাহিনী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।